তাঁরা নিবন্ধন করবেন কোথায়-* বেশির ভাগ ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র অচল-* মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুকরা দুশ্চিন্তায় by হায়দার আলী

কর্মী হিসেবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ নিতে সারা দেশে সাড়া পড়েছে মানুষের মধ্যে। এ লক্ষ্যে নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে ১৩ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। সরকার রিক্রুটিং এজেন্সিসহ দালালদের প্রতারণার সুযোগ বন্ধ করতে শুধু ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রেই নিবন্ধন করার নিয়ম বেঁধে দিয়েছে।
লোকজন এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রগুলোর বাস্তব অবস্থা দেখে মুষড়ে পড়েছেন। বেশির ভাগ তথ্যকেন্দ্রই অকার্যকর; কম্পিউটার-প্রিন্টার-ক্যামেরাসহ উপকরণ নষ্ট, কোথাও তালাবদ্ধ, কোথাও নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। অনেক ইউনিয়নে সরঞ্জাম থাকলেও সেগুলো ইউনিয়ন পরিষদে না রেখে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে মার্কেটসহ অন্যত্র। আবার কিছু তথ্যকেন্দ্রে উপকরণ থাকলেও নেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা।
এ রকম অবস্থায় স্বল্প খরচে মালয়েশিয়া যাওয়ার স্বপ্ন অনেকের ফিকে হয়ে আসছে। তাঁরা নিবন্ধন করতে পারবেন কি না এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। তাঁরা বলেছেন, দেশের সাড়ে চার হাজার ইউনিয়নের প্রতিটি তথ্যকেন্দ্র সচল করে না তুললে অনেক স্থানে লোকজন নিবন্ধন করার সুযোগ হারাবেন। সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ এতে বিতর্কিত ও ব্যর্থ হবে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজার কর্মীর জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধপত্র পেয়েই নিবন্ধনের তারিখ ঘোষণা করে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। ঢাকা ও বরিশাল বিভাগে ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি নিবন্ধনকাজ সম্পন্ন করা হবে। কম্পিউটারের সাহায্যে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে লটারির মাধ্যমে কোটা অনুযায়ী কর্মীদের তালিকা করা হবে ১৬ জানুয়ারি। একইভাবে রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগে ১৪ থেকে ১৬ জানুয়ারি নিবন্ধন এবং ১৭ জানুয়ারি লটারি হবে। খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিবন্ধন করা হবে ১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি। লটারি হবে ১৮ জানুয়ারি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের অধীন প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রে এ নিবন্ধন করতে হবে।
জানা গেছে, সরকার থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন তথ্য সেবাকেন্দ্রে দুই লাখ টাকার বেশি উপকরণ দেওয়া হয়। উপকরণের মধ্যে রয়েছে ফটোকপি, কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ডিজিটাল ক্যামেরা, ল্যাপটপ, মডেম, প্রজেক্টর ও আইপিএস।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর ঘোষণার খবর টেলিভিশনসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলে মালয়েশিয়ায় গমনেচ্ছুরা নিজ নিজ ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রে ভিড় করছেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁদের চোখ-মুখ অন্ধকার।
তবে গতকাল মঙ্গলবার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সারা দেশের যেসব ইউনিয়ন তথ্য সেবাকেন্দ্রগুলো অকার্যকর এবং ব্যবহার উপযোগী নয়, সেই তথ্যকেন্দ্রগুলো দ্রুত ব্যবহার উপযোগী করা হবে। পরশু (বৃহস্পতিবার) তথ্য সেবাকেন্দ্রে নিবন্ধনের ট্রায়াল টেস্ট করা হবে। ট্রায়াল টেস্টের পরই চূড়ান্তভাবে নিবন্ধনের জন্য ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হবে।' তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এটুআই প্রকল্পের অধীনে থাকা কর্মকর্তারাও বিষয়টি দেখভাল করছেন, পূর্ণ শক্তি নিয়ে তাঁরা মাঠে নেমেছেন।
সরেজমিন চিত্র : রবিবার দুপুর ১টা। রাজধানীর উপকণ্ঠ কেরানীগঞ্জের তারানগর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়। ইউপি সচিব এমদাদ হোসেনের টেবিলের সামনে লোকজনের ভিড়। তথ্যকেন্দ্রটি কোন পাশে জানতে চাইলে সচিব বলেন, দুই বছর ধরে তথ্যকেন্দ্র সিরাজনগরে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেবা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তথ্যকেন্দ্রের দুই পরিচালকই (অপারেটর) ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতা। তথ্যকেন্দ্র চালুর কয়েক মাস পরই ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে তিন কিলোমিটার দূরে সিরাজনগরে যন্ত্রপাতি নিয়ে তাঁরা নিজেরা ব্যবসা করছেন। তথ্যকেন্দ্রের পরিচালক (অপারেটর) সোহরাব হোসেন নিজেকে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি পরিচয় দিয়ে বলেন, 'ইউপি কার্যালয়ে লোকজন আসে না বলে এটা সিরাজনগরে স্থানান্তর করেছি।'
একই দিন সকালে পার্শ্ববর্তী কলাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে সেখানেও তথ্যকেন্দ্রের দেখা মেলেনি। ইউপিসচিব দলিলউদ্দিন মিয়া বলেন, কার্যালয়টি একটু ভেতরে পড়ে যাওয়ায় মানুষ কম আসে, তাই এটা স্থানান্তর করে পার্শ্ববর্তী বাজারে নেওয়া হয়েছে। কলাতিয়া তথ্যকেন্দ্রের অপারেটর হামিদ খান বলেন, 'পরিষদে এটার ব্যবসা ভালো হয় না, তাই বাজারে নিয়ে এসেছি।'
ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার ৭ নম্বর মুশুল্লী ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবাকেন্দ্রের অবস্থা আরো বেহাল। ইউনিয়নের মানুষ তথ্যকেন্দ্রে যান না বলে জানিয়েছেন। কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, তথ্যকেন্দ্রের কম্পিউটার, স্ক্যানার, ক্যামেরাসহ সব উপকরণ চেয়ারম্যান ইফতেখার উদ্দিন ভূঁইয়া নিজ বাড়িতে নিয়ে নিজেই ব্যবহার করছেন। ইউনিয়নবাসীর মধ্যে এতে ক্ষোভ থাকলেও বিষয়টি নিয়ে কেউ কোনো দিন চেয়ারম্যানকে বলতে পারেননি। কালের কণ্ঠের প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান ইফতেখার উদ্দিন বলেন, 'পরিষদ ভবনটি ভাঙাচোরা বলে নিরাপত্তার কারণে সবকিছু বাড়িতে রেখেছি। নতুন ভবন হলেই এগুলো দেওয়া হবে। জিনিসগুলো যাতে নষ্ট হয়ে না যায় সেজন্য মাঝে মাঝে ব্যবহার করা হয়।'
একই অবস্থা উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নেও। এই পরিষদের তথ্যকেন্দ্র উদ্বোধনের কিছুদিন পর সব উপকরণ অন্যত্র নিয়ে চেয়ারম্যান আবদুল মন্নাছের ছেলে আল-আমীন ব্যবহার করছেন। স্থানীয় মাইজবাগ বাজারে এসব উপকরণ নিয়ে ছেলের দোকান খোলা প্রসঙ্গে আবদুল মন্নাছ বলেন, 'তথ্যকেন্দ্রের জন্য এখনো কোনো লোক নিয়োগ দেওয়া হয়নি, তাই উপকরণগুলো চলমান থাকার জন্য ব্যবহার করছে আমার ছেলে।' তথ্যকেন্দ্র উদ্বোধনের দুই বছরেও কোনো লোক নিয়োগ দেওয়া হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'অচিরেই দিয়ে দিব।'
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রটি বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় ১৭ মাস ধরে বন্ধ। চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন মণ্ডল বলেন, এ নিয়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে গেলেও তারা নানা টালবাহানা করে বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছে না।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাব ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রটি আড়াই মাস ধরে বন্ধ। ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রটির দরজায় বড় তালা ঝুলছে। আশপাশে কোনো লোক নেই। পরিষদের মাঠেই বসে আছেন চারিতাল্লুক গ্রামের ষাটোর্ধ্ব কৃষক নিজামউদ্দিন মিয়া। তিনি বলেন, 'বাজানরে, পোলাডারে কম টাকায় মালশিয়া পাডামু চিন্তা করছি। হুনছি কাছারিতন (ইউপি কার্যালয়) নাম লেহান লাগে। কয়দিন কাছারিত গেছিলাম। গিয়া দেহি তালা মারা। কন দেহি বাজান, আমরা অহন কী করমু?' ইউপি সচিব শামিম হোসেন বলেন, 'ভাই এটা (তথ্যকেন্দ্র) নিয়ে অনেক ঝামেলা আছে। আড়াই মাস ধরে বন্ধ।' মালয়েশিয়াগামী লোকজন আসে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'লোকজন আসে, কিন্তু কিছু করার নেই। কোনো যন্ত্রপাতি নেই।' যন্ত্রপাতির কী হয়েছে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেন না। তবে পাশেই দাঁড়ানো যুবক আরিফুর রহমান বলেন, ই-তথ্যকেন্দ্রের পরিচালক আল-আমিন মিয়া আড়াই মাস আগে কম্পিউটার, ক্যামেরা নিয়ে পালিয়ে গেছেন। এরপর থেকে কেন্দ্রটি বন্ধ।
আতলাপুর বাজারের আমির হোসেন বলেন, 'মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট আগেই বানাইছি, ১৩ জানুয়ারি নিবন্ধন করতে হবে, কিন্তু ই-তথ্যকেন্দ্রটি এখন বন্ধ, এখন কী করব বুঝতাছি না।' একই গ্রামের সোহরাব হোসেন বলেন, 'চেয়ারম্যানের অফিসের তথ্যকেন্দ্রে নাকি নাম লেহান লাকব। হেনো যাইয়া তো মানুষ পাই না, তালা মারা থাহে।'
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবদুল মালেক জানান, বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে, পরিচালকও ঠিকমতো আসেন না। তাই তথ্যকেন্দ্রটি বন্ধ। একই উপজেলার কুকুরহাটি ইউনিয়ন তথ্য সেবাকেন্দ্রের উদ্যোক্তা মো. সেলিম জানান, তাঁর এলাকায় বিদ্যুৎ প্রায় থাকেই না। ফলে জরুরি সময় সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের তথ্য সেবাকেন্দ্র বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। লোকজন জানান, কেন্দ্রে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, লেমিনেটিং যন্ত্র সবই আছে। এগুলো কেন্দ্রে বেকার পড়ে আছে।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার দাউদখালী ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিক তথ্য সেবাকেন্দ্র চলছে স্থানীয় রাজারহাট বাজারের একটি ভাড়া দোকানে। ১০ ফুট দৈর্ঘ্য আর সাত ফুট প্রস্থের একটি টিনের কক্ষের দোকানই হলো দাউদখালী ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবাকেন্দ্র। কেন্দ্রের কম্পিউটার প্রায় দুই বছর ধরে অচল। কম্পিউটারটি সচল করতে দীর্ঘ সময় ইউনিয়ন পরিষদের কোনো উদ্যোগ না থাকায় তথ্য সেবাকেন্দ্রের উদ্যোক্তা ফেরদৌস আলামীন এখন তাঁর ব্যক্তিগত কম্পিউটার দিয়ে তথ্যসেবা দিচ্ছেন। গুলিসাখালী ইউনিয়ন নাগরিক তথ্য সেবাকেন্দ্রের উদ্যোক্তা জয়নুল আবেদীন জানান, আগামী ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি অনলাইনে মালয়েশিয়া গমনে আবেদনকারীদের ফরম পূরণ করতে হবে। তখন নাগরিকরা এখানে এসে বিড়ম্বনায় পড়বেন। কারণ, জেনারেটর কিংবা আইপিএস নেই। বিদ্যুৎ থাকলে চলবে, না থাকলে তথ্যকেন্দ্র অচল।
তথ্য সেবাকেন্দ্রের অচলাবস্থার জন্য মালয়েশিয়া যাওয়ার আবেদন করতে পারবেন না রংপুর অঞ্চলের অনেকেই। জেলার তথ্য সেবাকেন্দ্রগুলোর বেশির ভাগই অচল। খামার মোহনা এলাকার কৃষক আবদুল মতিন দুঃখ করে জানান, দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য তিনি নানা স্থানে দালালদের খপ্পরে পড়ে এ যাবৎ অনেক অর্থ নষ্ট করেছেন। এবার কম টাকায় মালয়েশিয়া যেতে চান তিনি। কিন্তু এই ইউনিয়নের তথ্য সেবাকেন্দ্র থেকে কেউ সেবা পায় না।
কাগজে-কলমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার ধরখার ইউনিয়নের ই-তথ্য সেবাকেন্দ্রের উদ্যোক্তার দায়িত্বে আছেন হাফিজা আক্তার। কিন্তু হাফিজা জানান, তিনি এ পদের জন্য আবেদন করেছিলেন, তবে নিয়োগ পাননি। ওই কেন্দ্রেরই অন্য উদ্যোক্তা মাসুদুল আলম জানান, ইউনিয়ন পরিষদের বদলে সেবাকেন্দ্রটি তন্তর এলাকায় নেওয়া হয়েছে। নিজ গ্রাম থেকে তন্তর দূরে বিধায় এখন আর তিনি সেখানে যান না। ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের ছেলেই এখন কেন্দ্রটি দেখভাল করছেন।
উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন ই-তথ্য সেবাকেন্দ্রের উদ্যোক্তাদের মধ্যে উবায়দুল ও শারমিন কেউ আসেন না। উবায়দুল জানান, কেউ সনদ নিতে এলে সচিব নিজের হাতে লিখে দেন। গত রবিবার পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সাদেক আহম্মেদ নামের এক যুবক এখন এর দায়িত্বে আছেন। তিনি দুজনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। প্রশিক্ষণার্থীরা জানান, পাঁচ হাজার টাকায় তাঁরা 'অফিস প্রোগ্রাম' শিখছেন। পাসপোর্ট ই-মেইল করার জন্য এক ব্যক্তিকে পাঠানো হলে দেড় শ টাকা চাওয়া হয়। অথচ অন্য যেকোনো জায়গায় ১০০ টাকায় ই-মেইল করা যায়।
বেহাল অবস্থা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন তথ্যকেন্দ্রের। নাসিরনগরের পূর্বভাগ ইউনিয়ন তথ্য সেবাকেন্দ্রের উদ্যোক্তা মো. আল-আমিন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কিভাবে নিবন্ধন করতে হবে তা আমরা জানি না। এ বিষয়ে ট্রেনিং না করানো হলে সমস্যায় পড়তে হবে।' একই উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ হান্নান বলেন, 'বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের সোলার দেওয়া হয়েছে তথ্য সেবাকেন্দ্র চালু রাখার জন্য। কিন্তু মোবাইল নেটওয়ার্ক ভালো না হওয়ায় ইন্টারনেট চালাতে সমস্যা হয়।'
সরাইল উপজেলার শাহজাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য (মেম্বার) সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাদের এখানে সাধারণ মানুষ সেবা পায় না। পরিষদের সচিব তাঁর নিজস্ব সব কাজই এখান থেকে করান। বাইরের কেউ এলে তাঁকে নানাভাবে চলে যেতে বলা হয়।'
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের উদ্যোক্তা মো. ইয়ামিন বলেন, 'আমি ইন্টারনেট মডেম পাইনি। তবে নিজে কিনে নিয়ে যেটি চালাচ্ছি সেটির স্পিড খুব কম। তাই নিবন্ধনে কিছু সমস্যা হতে পারে।'
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন, স্বপন চৌধুরী-রংপুর, সাবি্বরুল ইসলাম সাবু-মানিকগঞ্জ, দেবদাস মজুমদার-পিরোজপুর, আলম ফরাজী-ঈশ্বরগঞ্জ, রাসেল আহমেদ-রূপগঞ্জ ও বিশ্বজিৎ পাল বাবু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

No comments

Powered by Blogger.