ছাত্রলীগ নেতাকমর্ীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ আহত ২৫- পুরনো ঢাকা তিন ঘণ্টা অচল ককটেল বিস্ফোরণ, আতঙ্ক

জবি রিপোর্টার সরকারী কবি নজরম্নল কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হতে আসা এক শিৰাথর্ীকে নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও কবি নজরম্নল কলেজ ছাত্রলীগ নেতাকমর্ীদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে।
বুধবার দুপুর থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষে কবি নজরম্নল কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি ও সধারণ সম্পাদকসহ উভয় শিৰা প্রতিষ্ঠানের ২৫ নেতাকমর্ী আহত হয়েছে। তিন ঘণ্টাব্যাপী স্থায়ী এ সংঘর্ষে পুরনো ঢাকা অচল হয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় শিৰা প্রতিষ্ঠানের নেতাকমর্ীরা কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ থামাতে দুই প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে তাজমির নামে এক ছাত্র সম্মান প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য কবি নজরম্নল কলেজে যায়। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েক কর্মী তার প্রবেশপত্র আটকে টাকা দাবি করে। তাজমির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী কামরম্নলকে জানালে সে তার কয়েকজন বন্ধু নিয়ে কবি নজরম্নল কলেজে যায়। সেখানে প্রবেশপত্র আটকে রাখার বিষয়টি নিয়ে দু'পরে মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে নজরম্নল কলেজের ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক কেএম ফারম্নকের নির্দেশে জবির ছাত্রলীগ কর্মী জহির, মাসুদ ও কামরম্নলকে ব্যাপক মারধর করা হয়। প্রচ- মারপিটে জহির ও মাসুদের মাথা ফেটে যায়। কামরম্নলকে কবি নজরম্নল কলেজের এক কৰে আটকে রাখা হয়। এ খবর বিশ্ববিদ্যালয়ে পেঁৗছলে কয়েক শ' ছাত্রলীগ কর্মী লাঠিসোটা নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। শুরম্ন হয় দুই প্রতিষ্ঠানের শিার্থীদের সংঘর্ষ। প্রায় অধাঘণ্টা স্থায়ী ওই সংঘর্ষে উভয় পরে কমপ ে১০ জন আহত হন।
এ সময় কলেজের অধ্যসহ শিকদের পাঁচটি প্রাইভেটকার এবং ২টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরম্নল হাসান রিপন এবং সাধারণ সম্পাদক গাজী আবু সাঈদ কবি নজরম্নল কলেজে পেঁৗছে পরিস্থিতি শানত্ম করা চেষ্ট করেন। তারা কর্মীদের হাত থেকে লাঠিসোটা ফেলে দেয়ার নির্দেশ দেন। আটকে দেয়া হয় কলেজের প্রধান গেট। এরপর নজরম্নল কলেজের ছাত্ররা ভেতরে আর জগন্নাথের ছাত্রলীগ কর্মীরা বাইরে অবস্থান নেয়। একই সময় নজরম্নল কলেজের সভাপতি মহিউদ্দিন সরকারের নেতৃত্বে লাঠিসোটা নিয়ে একদল ছাত্রলীগ কর্মী গেটের বাইরে অবস্থান করে। জবি ছাত্রলীগ কর্মীদের দিকে হামলা করতে এগিয়ে এলে তারা মারমুখী অবস্থান নেয়। বাইরে থেকে কলেজের প্রধান গেট ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টাও করে উত্তেজিত কর্মীরা। পরে জবি ছাত্রলীগ সভাপতি রিপন ভেতরে প্রবেশ করে নজরম্নল কলেজের উচ্ছৃঙ্খল কর্মীদের শানত্ম করেন। আর সাধারণ সম্পাদক সাঈদ গেটের বাইরে থাকা ছাত্রলীগ কর্মীদের সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে বিকেল চারটার দিকে প্রক্টর কাজী আসাদুজ্জামান কবি নজরম্নল কলেজে গেলে কলেজের অধ্য এবং উপাধ্য তার সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। কলেজের অধ্য শিকদের গাড়ি ভাংচুরের জন্য ছাত্রদের বিরম্নদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন। পরে কোন আলোচনা না করেই বিকেল সাড়ে চারটার দিকে প্রক্টর এবং ছাত্রলীগ নেতারা কবি নজরম্নল কলেজ ত্যাগ করেন। কিছুণ পরে বিকেল পাঁচটার দিকে পাশর্্ববর্তী মহানগর মহিলা কলেজ থেকে জবি ছাত্রলীগ কমর্ীরা কয়েকটি ঢিল ছোড়ে কবি নজরম্নল কলেজের দিকে। শুরম্ন হয় লাঠিসোটা নিয়ে আবার দৌড়ঝাপ। নজরম্নল কলেজের ছাত্রলীগ কর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে ভিক্টোরিয়া পার্কের দিকে এগিয়ে এলে জবি থেকে কয়েক শ' ছাত্রলীগ কর্মী তাদের প্রতিহত করতে ক্যাম্পাস থেকে লাঠিসোটা নিয়ে দৌড়ে যায়। ধাওয়া খেয়ে নজরম্নল কলেজের ছাত্ররা ভেতরে প্রবেশ করে প্রধানগেট বন্ধ করে দেয়। উত্তেজিত ছাত্রলীগ কর্মীরা গেট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করলে দুই প ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পৰ থেকে কয়েকটি ককটেল ফোটানো হয়। প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী সংঘর্ষে উভয় পরে ১৫ জন আহত হন। সব মিলিয়ে উভয় শিৰা প্রতিষ্ঠানের ২৫ জন আহত হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আহতদের মধ্যে রয়েছে শফি, শিশির, সিরাজ, সঞ্জয়, নাজিম, শরিফ, সোহাগ, সেলিম, শানত্ম নাহিদ, হারম্নন, হিমু ও মাসুদ। কবি নজরম্নল কলেজের আহতরা হলে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মহিউদ্দিন সরকার, সাধারণ সম্পাদক কেএম ফারম্নক হোসেন, মুন্না, নুর, এরশাদ, জসিম, আবিদ, রম্নবেল ও জুয়েল। সংঘর্ষের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গাজী আবু সাঈদ। তাকে সোহরাওয়াদর্ী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.