রাজশাহী ভার্সিটি হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে বিদেশী গুপ্তঘাতক- নিজামীর আবিষ্কার

 রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের পৈশাচিক তা-ব নিয়ে নানা বিভ্রানত্মিকর তথ্য ছড়িয়ে পিঠ বাঁচানোর অপচেষ্টা করছে জামায়াত। একেক সময়ে একেক রকমের তথ্য ছড়িয়ে নিজেদের কর্মকা-কে হালাল করার বৃথা চেষ্টা করছে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা।
এবার জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর আবিষ্কার, 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হত্যাকাণ্ডে বিদেশী গুপ্তঘাতক কিংবা কমান্ডো বাহিনী অংশ নিয়েছিল। এর পেছনে আছে তিনটি বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার হাত। সরকারের সহায়তায় ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে এরা পরিকল্পিতভাবে একটি প্রেৰাপট তৈরি করছে। কিন্তু বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ অসামপ্রায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না।
রবিবার রাজধানীর আল ফালাহ মিলনায়তনে আনত্মর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলৰে জামায়াত আয়োজিত আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন জামায়াতের আমির। সভায় নিজামী ভাষা আন্দোলন ও ইসলামী আন্দোলন একই সূত্রে গাথা বলে মনত্মব্য করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের ঢাকা মহানগর আমির রফিকুল ইসলাম খান। বক্তব্য রাখেন জামায়াত নেতা অধ্যাপক মজিবর রহমান, এটিএম আজাহারম্নল ইসলাম, অধ্যাপক তাসনীম আলম, হামিদুর রহমান আজাদ এমপি, নূরম্নল ইসলাম বুলবুল ও আব্দুল হালিম। এর আগে ৮ ফেব্রম্নয়ারি শিবিরের পৈশাচিকতার পর যখন ধিক্কার জানাচ্ছে সমগ্র জাতি, যখন শিবিরকে নিষিদ্ধের দাবি উঠছে তখন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ দাবি করেন, 'ঐ ঘটনা কারা ঘটিয়েছে আমরা জানি না। ১০ তারিখে সংবাদ সম্মেলনে ঐ দাবির পর ১২ তারিখে সংবাদ সম্মেলনে করে হত্যাকা-ের জন্য সরাসরি ছাত্রলীগকে দায়ী করে শিবির সভাপতি রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাই হত্যাকা- চালিয়েছে। এরপর ১৪ ফ্রেব্রম্নয়ারি মুজাহিদ ঘটনার জন্য সরকারের ছাত্র সংগঠনকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, সরকার ও তাদের সমর্থক কিছু মিডিয়া জামায়াত ও জামায়াত নেতাদের বিরম্নদ্ধে ভয়ঙ্কর তথ্য সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। একদিন পর ঢাকা মহানগর জামায়াতের এক কর্মসূচীতে হত্যাকা-ের দায় ছাত্রলীগকেই দেন নিজামী। এতদিন নানা দাবি করলেও এ ঘটনায় বিদেশীদের গন্ধ খুঁজে পায়নি জামায়াত। কিন্তু রবিবার হঠাৎ করে রাবির ঘটনায় বিদেশের গুপ্তঘাতকদের অসত্মিত্ব আবিষ্কার করেছেন দলের আমির মতিউর রহমান নিজামী। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, রাতের অন্ধকারে ছাত্রলীগ ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ঐ রাতে শিবিরের নেতাকর্মীরা রাবির হত্যাকা-ের আগেই হল ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
নিজামী দাবি করেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত হত্যাকা-ে বিদেশী ৭/৮ গুপ্তঘাতক কিংবা কোন কমান্ডো বাহিনী অংশ নিয়েছিল। এরা ঐদিন মাফলার পরিহিত হলের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। এরা কারা ছিল তখন কেউ বলতে পারেনি। তারা শিবির, ছাত্রলীগ বা পুলিশের কেউ ছিল না। মাফলার পরিহিত ঐ যুবকরা বিদেশী গুপ্তঘাতক ছিল। ইসলামী রাজনীতি বন্ধের প্রেৰাপট সৃষ্টির জন্যই পরিকল্পিতভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সরকার কোন সংস্থা দিয়ে এটা করিয়েছে তা রাবির ভিসি, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট বা রাজশাহীর পুলিশ কমিশনারই বলতে পারবেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ'কে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একটি প্রভাবশালী ইসলামবিদ্বেষী দেশের গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের দেশের ইসলামী দলগুলোর নেতাকর্মীদের অস্ত্র রেখে ফাঁসানোর নির্দেশনা দিয়েছে। এর প্রমাণ আমরা চট্টগ্রাম ও মেহেরপুরে দেখেছি। এরপরই তিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রয়ের ইঙ্গিত করে বলেন, আবার আরেকটি ইসলামবিদ্বেষী দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ইসরাইলের মোসাদের সঙ্গে মিলে ইসলামী দলগুলোর ১০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। সভায় রফিকুল ইসলাম খান ইসলামী রাজনীতি বন্ধের ব্যাপারে সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে যতদিন কোরান থাকবে ততদিন বাংলাদেশে জামায়াতের রাজনীতি থাকবে।

No comments

Powered by Blogger.