অন্তর্বর্তী নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন নইলে আন্দোলন- বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ

 দীর্ঘ প্রায় একবছর পর আজ ঢাকায় বিডিআর বিদ্রোহের বিচার শুরু হচ্ছে। শুধু পিলখানায় অবস্থিত বিডিআরের ঢাকা সেক্টর সদর দফতরের বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানদের বিচার শাস্তি হচ্ছে।
পিলখানায় বিদ্রোহে অংশ নেয়া অন্যান্য বিদ্রোহী জওয়ানের বিচার নিজ নিজ সেক্টরের অধীনে স্থাপিত বিশেষ আদালতে চলছে। ঢাকা সদর সেক্টরের প্রায় ৮০ বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানকে শনাক্ত করা হয়েছে। দরবার হলে তাদের পর্যায়ক্রমে হাজির করা হবে। যেসব বিডিআর জওয়ান একই সঙ্গে বিদ্রোহ ও ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের আলাদা আলাদা মেয়াদে শাস্তি হবে।
সেসব বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানদের কারণে জঘন্যতম হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছিল, সেই দরবার হলেই আদালত স্থাপন করে বিদ্রোহীদের বিচার করা হচ্ছে। যাতে অপরাধের শাস্তি দেখে ভবিষ্যতে কোন সুশৃঙ্খল বাহিনীর আর কোন সদস্য এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই
দরবার হলেই চলবে বিশেষ আদালত-৫ কার্যক্রম। বিডিআর সদর দফতরেই বিডিআর বিদ্রোহের বিচারের জন্য বিশেষ আদালত-৬ স্থাপন করা হচ্ছে। দ্রম্নত এ আদালতের কার্যক্রম শুরম্ন হচ্ছে।
বেলা ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিডিআর বিদ্রোহের বিচার কাজ শুরম্ন হচ্ছে। বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম বিশেষ আদালতের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁকে সহায়তা করবেন বিডিআরে কর্মরত দু'জন উর্ধতন সেনা কর্মকর্তা ও এ্যাটর্নি জেনারেল কতর্ৃক মনোনীত প্রতিনিধি মোহাম্মদ উলস্নাহ কিসলু। অপারেশন ডালভাত কর্মসূচীকে কেন্দ্র করেই বিডিআর সদর দফতরে হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছিল।
বিডিআর সূত্র জানায়, গত বছরের ২৫-২৬ ফেব্রম্নয়ারি পিলখানা বিডিআর সদর দফতরে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আইনানুযায়ী দু'ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। আজ বিদ্রোহের বিচার শুরম্ন হচ্ছে। হত্যাযজ্ঞের মামলাটি সিআইডি পুলিশ তদনত্ম করছে। আজ দরবার হলেই বসেছে সেই বিশেষ আদালত। বিধি মোতাবেক আদালতের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম। বেলা ১২টায় বিডিআর বিদ্রোহের বিচার কাজ শুরম্ন হচ্ছে। দরবার হলে বিশেষ আদালত স্থাপন করার পিছনে চমকপ্রদ রহস্য কাহিনী রয়েছে। বিডিআরের এক উর্ধতন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে জনকণ্ঠকে বলেন, এটি মনসত্মাত্তি্ব্বক বিষয়। যেসব বিডিআর জওয়ানের বিদ্রোহের কারণে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছে তাদের শাসত্মি হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যেখানে বিদ্রোহের উৎপত্তি সেই দরবার হলেই আদালত বসিয়ে বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানদের বিচার করা হচ্ছে। যাতে ভবিষ্যতে যে কোন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এ ধরনের বিদ্রোহ করার সাহস না করে। বিচারের রায় ও শাসত্মি যেন তাদের মনে উদাহরণ হিসাবে কাজ করে।
আজ বিদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত বিডিআর সদস্যদের দরবার হলে স্থাপিত বিশেষ আদালত-৫ এ হাজির করা হচ্ছে। পিলখানায় অবস্থিত ঢাকা সদর সেক্টরের প্রায় ৮০ বিডিআর জওয়ানকে বিদ্রোহী জওয়ান হিসাবে শনাক্ত করা হয়েছে বলে বিডিআরের উপ-মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ওবায়দুল হক জানান। বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সর্বশেষ ৬ নম্বর বিশেষ আদালতটিও পিলখানা বিডিআর সদর দফতরের মধ্যে স্থাপন করা হচ্ছে। সবশেষ আদালতের কার্যক্রম দ্রম্নত শুরম্ন হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। তবে আদালতে অভিযুক্ত জওয়ানদের আত্মপৰ সমর্থন করার সুযোগ দেয়া হবে। অভিযুক্ত জওয়ানরা নিজেরাই নিজেদের কথা আদালতে বলতে পারবেন। কোন অভিযুক্ত বিডিআর জওয়ান ইচ্ছা করলে বিডিআরের কোন উর্ধতন কর্মকর্তা বা আইনজীবীর মাধ্যমেও তাঁর বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করতে পারবেন। ১৯৭২ সালের বিডিআর আইনানুযায়ী বিদ্রোহী জওয়ানদের বিচার সম্পন্ন হবে। বিডিআর বিদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্তরা আদালত কতর্ৃক দোষী প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদ- ও ১শ' টাকা জরিমানা করার বিধান রয়েছে। তবে অনেক বিডিআর জওয়ান একই সঙ্গে বিদ্রোহ, হত্যা, লুটপাট ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিভিন্ন মেয়াদে শাসত্মি হবে।
বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম জানান, অপারেশন ডালভাত কর্মসূচীকে কেন্দ্র করেই বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, বিডিআরের আইন পরিবর্তন সম্ভব না হলে বিডিআরের নাম পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। যদিও বিডিআরকে বর্ডার সিকিউরিটি গার্ড হিসাবে নামকরণ করার একটি প্রসত্মাব সরকারের কাছে রয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যেই বিডিআরের পোশাক পরিবর্তন হয়েছে। ২০০৯ সালের ২৬ নবেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিডিআর বিদ্রোহের বিচার শুরম্ন হয়। সারাদেশে ৬টি বিশেষ আদালতের মাধ্যমে বিডিআর বিদ্রোহের বিচার করা হবে। অভিযুক্ত সব বিডিআর জওয়ানই চাকরি হারাবেন। যেসব বিডিআর জওয়ান বিদ্রোহ ও হত্যাযজ্ঞ দু'ধরনের অপরাধের সঙ্গেই জড়িত, তাদের দু'দফায় শাসত্মি হবে। ঢাকায় পিলখানা বিডিআর সদর দফতরে ২টি বিশেষ আদালতের মধ্যে ইতোমধ্যেই আদালত-৫ এর বিচারকাজ শুরম্ন হয়েছে। বিশেষ আদালত-৬ এর বিচারকাজও দ্রম্নত ঢাকায় শুরম্ন হবে। বিশেষ আদালতের বিচারের সঙ্গে সিআইডির মামলা তদনত্ম, চার্জশীট দাখিল বা সাজার কোন সম্পর্ক নেই। প্রসঙ্গত, চলতি বছর ২৫-২৬ ফেব্রম্নয়ারি পিলখানা বিডিআর সদর দফতরে এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.