রাজধানীতে আওয়ামী লীগ নেতাসহ তিন খুন- ছিনতাইকারী, অজ্ঞান পার্টির অভয়ারণ্য?

 রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের হিসেবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপৰরা। এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।
ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ছিনতাইকারীরা এক গার্মেন্টস কর্মকর্তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে খুন করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়েছে। অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে এক কিশোর কর্মচারী নিহত হয়েছে। এ সময় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তার সর্বস্ব লুট করে। এ ছাড়া ঝিগাতলায় ছিনতাইকারীরা ফিল্মি স্টাইলে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে। ওই ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে বের হয়ে কিছুদূর আসার পর এ ঘটনা ঘটে। সোমবার পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্র এসব ঘটনার কথা জানায়।
তিন খুন মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসীর হামলায় আহত আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ বোরহান (১৮) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। নিহত বোরহান ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। শনিবার রাতে মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ হাউজিংয়ের ৩১ নম্বর রোডের ৩ নম্বর বাড়ির সীমানা নিয়ে দু'গ্রম্নপের সংঘর্ষ হয়। এ সময় প্রতিপৰ হোসন গ্রম্নপের হোসেন, মামুন, শাহাদাত, আকবরসহ কয়েকজন মিলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ বোরহানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গুরম্নতর আহত বোরহানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দু'দিন মৃতু্যর সঙ্গে লড়ে বোরহান মারা যান। এ ঘটনার পর পুলিশ হোসেনের ক্যাডার মামুন, শাহাদাত ও আকবরকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। মামলার তদনত্মকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই মান্নান জনকণ্ঠকে জানান, নিহত বোরহানের তার বাড়ির সামনে চায়ের দোকান রয়েছে। সেখানে শনিবার রাতে ওই বাড়ির জমির সীমানা নিয়ে খলিল গ্রম্নপের সঙ্গে হোসেন গ্রম্নপের ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে হোসেন গ্রম্নপের ক্যাডাররা চাপাতি দিয়ে বোরহানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে বোরহানের মৃতু্য ঘটে। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত তিনজন ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। মূল আসামি হোসেন গা ঢাকা দিয়েছে। নিহতের পিতার নাম মোঃ সিকান্দার আলী গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার মুলাদী থানার ষোলঘরে। ৪ ভাইয়ের মধ্যে বোরহান ছিল সবার ছোট। এদিকে সোমবার ভোর ৪টায় ক্যান্টনমেন্ট বাস স্ট্যান্ডের সামনে ছিনতাইকারীরা মিজানুর রহমান (৩৫) নামে এক পথচারীকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে টহল পুলিশ তাকে গুরম্নতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ৭টায় মিজানুর রহমানের মৃতু্য ঘটে। জানা গেছে, নিহত মিজানুর রহমান ইয়র্ক গার্মেন্টসের কাটিং সেকশনের অফিসার। মিজানুরের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার সারিয়াকান্দি থানার আটারচর গ্রাম থেকে রিক্সায় ভোরে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট বাসস্ট্যান্ডে নামে। এ সময় ওঁত পেতে থাকা ছিনতাইকারীরা তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। তার বাসা খিলগাঁওয়ের উত্তর মুগদাপাড়ার ঝিলপাড় এলাকার ৩২/৩/এ নং বাড়িতে। স্ত্রী ও সনত্মান নিয়ে তিনি সেখানে বাস করেন। এদিকে মিজানুর রহমানের লাশ নিয়ে দু'থানা পুলিশের টানাহেঁচড়া চালায়। এ কারণে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেওয়ারিশ হিসেবে পড়ে থাকছে। পুলিশ রাতে এই রিপোর্ট লেখা পর্যনত্ম টানাহেঁচড়া মিজানুর রহমানের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট না হাওয়ায় ময়নাতদনত্ম সম্পন্ন হয়নি। এ নিয়ে মর্গে নিহতের পরিবারের মধ্যে ৰোভ ও অসনত্মোষ বিরাজ করছিল। নিহতের পিতার নাম লাল মিয়া। অন্যদিকে রবিবার গভীর রাতে সোনারগাঁও থানাধীন গঙ্গাপুর এলাকা থেকে আতিকুর রহমান নামে এক জামদানি শাড়ির কারখানার শ্রমিককে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় আতিকুর রহমানের মৃতু্য ঘটে। নিহতের পিতা আনোয়ার হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আতিক গঙ্গাপুর জামদানি কারখানা থেকে কাজ শেষে ফেরার পথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে। তাকে অচেতন করে নগদ টাকা ও মোবাইল লুট করেছে অজ্ঞান সদস্যরা। এতে তার ছেলে আতিকুরের মৃতু্য ঘটে।
ছিনতাই স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, সোমবার সকালে ঝিগাতলা মোড়ে হোন্ডাযোগে ৩ যুবক একটি যাত্রীবাহী রিক্সাকে গাতিরোধ করে। এ সময় যুবকরা রিক্সাযাত্রী ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিনের টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। ধসত্মাধসত্মির এক পর্যায়ে যুবকরা ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিনকে লৰ্য করে গুলি চালিয়ে টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে হোন্ডাযোগে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত ব্যবসায়ী জানান, হাজারীবাগ সোনালী ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে তিনি রিক্সাযোগে ১৪/২ পরিবাগ সততা সম্ভার টাইলসের দোকানে ফিরছিলেন। প্রথিমধ্যে ছিনতাইকারীরা তাকে গুলি করে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।

No comments

Powered by Blogger.