বিরোধী দলের সাড়া পেলে শিগগিরই সঙ্কট নিরসনে আলোচনাঃ সৈয়দ আশরাফ

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুসহ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে বিরোধী দলের সাথে আলোচনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
বিরোধী দলের সাড়া পেলে শিগগিরই আলোচনা শুরু করা হবে। সঙ্কট নিরসন বিশেষ করে আগামী নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে ভেতরে ভেতরে আলোচনা চলছে।

গতকাল সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এ তথ্য জানান। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় গতকাল মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সাথে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে কথা বলেন।

সৈয়দ আশরাফ বলেন, যেকোনো সঙ্কট থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র পথ আলোচনা। এর কোনো বিকল্প নেই। যত তাড়াতাড়ি বিরোধী দলের সাথে আলোচনা শুরু করা যায় সে পথ খুঁজছি। সঙ্কট যত তাড়াতাড়ি সুরাহা করা যাবে, গণতন্ত্রও জাতির জন্য তত মঙ্গল। ভেতরে ভেতরে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে বিরোধী দলের নেতাদের সাথে কথাও বলছি। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে এসব আলোচনার কথা বলা যায় না। তবে আগামী সংসদ অধিবেশনে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। আলোচনার পর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলই অংশ নেবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরো বলেন, ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে আসার জন্য বিরোধী দলকে আহ্বান জানিয়েছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও বিরোধী দলের নেতাদের সাথে আলোচনা চলছে।

সঙ্কট নিরসনে ড. আকবর আলি খানের বক্তব্য সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফ বলেন, বুদ্ধিজীবীরা তাদের কথা বলবেন। আর রাজনীতিবিদেরা তাদের কাজ করবেন। গত ২৯ ডিসেম্বর রাজধানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শান্তিপূর্ণভাবে মতা হস্তান্তরের চারটি ফর্মুলা দিয়েছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে রাজনীতিকদেরই মূল দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানিয়ে আশরাফ বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলের কাছে আহ্বান জানাইÑ কিভাবে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধান করা যায় তা নিয়ে ভাবার। এখানে আকবর আলি খান যদি কোনো সহযোগী ভূমিকা পালন করেন, তাহলে স্বাগত জানাব।

বর্তমান সরকার আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে বিলুপ্ত হয়েছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারপদ্ধতি। পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী এখন নির্বাচনের সময় আগের নির্বাচিত দলই মতায় থাকবে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপে হবে না দাবি করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারপদ্ধতি ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন করছে বিরোধী দল।

এর আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে বৈঠককালে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে। আগে বাংলাদেশে কোনো ঘটনা ঘটলে তা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় তেমন সাড়া পেত না। এখন ঘটনা-দুর্ঘটনা যা-ই ঘটুক না কেন, সেটা আন্তর্জাতিক মিডিয়ার প্রধান শিরোনাম হয়। বিশ্বের গণমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশের গুরুত্ব আরো সুদৃঢ় হচ্ছে । তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মানেই বাংলাদেশ। দেশের গ্রামগঞ্জে মন্ত্রণালয়ের করা উন্নয়নের ছোঁয়া লেগে আছে। আপনারা মন্ত্রণালয় থেকে গৃহীত সব কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতেও এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আশরাফ বলেন, বাংলাদেশ ভিুকের দেশ নয়, যেভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তাতে আগামী পাঁচ বছর পর আমাদের বিদেশী সাহায্যের প্রয়োজন হবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হতে আর বেশি সময় লাগবে না। বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়ে উঠছে, পরীার ফলাফলসহ বিভিন্ন েেত্র দেশ এখন ডিজিটাল।

কমিটি যেকোনো দিন প্রকাশ : এ দিকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটির নাম প্রকাশ নিয়ে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয়বার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জানান, দলের নতুন ওয়ার্কিং কমিটির নামের তালিকা ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সম্মেলনেই ঠিক করা হয়েছে। যেকোনো দিন প্রকাশ করা হবে। তবে তিনি সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখের কথা জানাননি। তিনি বলেন, আগামীতে দলের নেতৃত্বে যেসব নেতা থাকবেন তারাই জাতীয় নির্বাচনে দলকে বিজয়ী করে নিয়ে আসবেন। এটি হবে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ কমিটি।

No comments

Powered by Blogger.