রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ ৩ হাজার ভবন দ্রম্নত ভেঙ্গে ফেলা হবে

 রাজধানীতে ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ ৩ হাজার ভবন দ্রম্নত ভেঙ্গে ফেলা হবে। এই লৰ্যে আগামী ২/১ দিনের মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হবে। এছাড়া অন্য ভবনগুলো বিল্ডং কোড অনুসরণ করে নির্মাণ করা হয়েছে কি না তাও পরীৰা করে দেখা হবে।
এ লৰ্যে নির্মাণ করা অন্য ভবনসমূহের মধ্যে থেকে র্যান্ডমভিত্তিতে কিছু ভবন পরীৰা করে দেখা হবে। এসব ভবনকে ভূমিকম্পের দিক থেকে ঝুঁকির মাত্রা অনুযায়ী চিহ্নিত করা হবে। এ জন্য রিখটার স্কেলের মাত্রা ধরা হবে সাত। এ ছাড়াও ভূমিকম্প পরবর্তীতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জন্য করণীয় সম্পর্কে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সিডিএমপি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত কম্প্রিহেনসিভ পস্ন্যান একটি কারিগরি কমিটি যাচাইবাচাই করে চূড়ানত্ম করবে।
বুধবার খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সভাকৰে অনুষ্ঠিত ভূমিকম্প প্রস্তুতি ও সচেতনতা কমটির বৈঠকে এসব সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়।
সংশিস্নষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীতে ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ ৩ হাজার ভবন চিহ্নত করা হয়। এর মধ্য থেকে মাত্র ছ'টি ভবন ইতোমধ্যে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। বাকি ২ হাজার ৯শ' ৯৩টি ভবন দ্রম্নত ভেঙ্গে ফেলা হবে। এই ভবনগুলোর মধ্যে অধিকাংশই হলো পুরনো ঢাকায়। এছাড়াও মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ভবন রয়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেন, ভূমিকম্প পরবর্তী অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজের জন্য বেশকিছু যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। এসব যন্ত্রপাতি ইতোমধ্যেই সশস্ত্রবাহিনী এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাছে হসত্মানত্মর করা হয়েছে। অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য সারাদেশে ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক গড়ে তোলা হচ্ছে। কিন্তু এ কাজের জন্য স্বেচ্ছাসেবক গড়ে তোলাই যথেষ্ট নয়। এ জন্য ভূমিকম্প পরবর্তী করণীয় এবং উদ্ধার কাজের বিষয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। জনগণের প্রত্যৰ সহায়তা ছাড়া এ কাজে সফল হওয়া কঠিন। তিনি বলেন, ইতোপূর্বে নেয়া সিদ্ধানত্ম অনুযায়ী প্রতীকী হিসেবে সচিবালয়ের একটি ভবন এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজকে ভূমিকম্প ঝুঁকিমুক্ত করতে রেট্রোফিটিং করার কাজ দ্রম্নত সম্পন্ন করতে হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রী পূর্ত বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন এবং সিডিএমপি থেকে কারিগরি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
বৈঠকে আরও সিদ্ধানত্ম হয় যে, বিভিন্ন বেসরকারী নির্মাণ সংস্থার কাছে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজের জন্য কি ধরনের যন্ত্রপাতি আছে তা চিহ্নিত করা হবে। প্রয়োজনে এসব যন্ত্রপাতি যাতে ব্যবহার করা যায়, তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারের এবং বেসরকারী সংস্থার কাছে থাকা যন্ত্রপাতির তালিকা করার পর আরও কি কি যন্ত্রপাতি কেনা প্রয়োজন তা চূড়ানত্ম করা হবে। ঢাকা সিটি করপোরেশন বা অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরের বিভিন্ন শিল্প-কারখানার ভবন যাতে ভূমিকম্প ঝুঁকিমুক্ত করে নির্মাণ করা হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়াও ভূমিকম্প পরবর্তী অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজের জন্য ঢাকা শহরের আশপাশের এলাকা থেকেও স্বেচ্ছাসেবক নির্বাচন করে প্রশিৰণ প্রদানের বিষয়েও বৈঠকে সিদ্ধানত্ম হয়।
সূত্র জানায়, ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার লৰ্যে ইতোমধ্যে ৭০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়েছে। আরও কিছু যন্ত্রপাতি দ্রম্নত ক্রয় করা হবে। পাশাপাশি এখন থেকে সকল ভবন নির্মাণের ৰেত্রে অবশ্যই বিল্ডিং কোড মেনে করতে হবে। ঢাকা শহরের বাইরে ভবন নির্মাণেও বিল্ডিং কোড মানতে হবে।
খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বৈঠকে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব মো. মোখলেছুর রহমান, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিব মোহাম্মদ মোহসীন, প্রাথমিক ও গণশিৰা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান, গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী গোলাম মর্তুজা, সিডিএমপির ভূমিকম্প ও সুনামি বিশেষজ্ঞ এস এম মাকসুদ কামাল, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এ আনসারী।
উলেস্নখ্য, বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ঝুঁকি বিদ্যমান সত্ত্বেও সরকারের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই এমন একটি রিট পিটিশনের পরিপ্রেৰিতে মহামান্য হাইকোর্ট সরকারকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা এবং একটি উচ্চ ৰমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। সে নির্দেশের ভিত্তিতেই এ কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।

No comments

Powered by Blogger.