বিএনপি ক্যাডার জুলহাস এখন আওয়ামী!

 বাউফলে প্রগতিশীল সাংবাদিকদের শায়েসত্মা করতে একটি মহল সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়েছে। আর এসব সন্ত্রাসীদের সাথে স্থানীয় কিছু নামধারী সাংবাদিকের সম্পর্ক রয়েছে।
যারা গত বিএনপি-জামায়েত জোট সরকারে ছত্রছায়ায় থেকে নানা সুবিধা ভোগ করেছে। তারাই এখন ভোলপাটে সেই সব সন্ত্রাসীদের সাথে বিভিন্ন অপকর্ম করে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছে। প্রগতিশীল সাংবাদিকরা এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের বিরম্নদ্ধে সন্ত্রাসীদেও লেলিয়ে দেয়া হয়। সাংবাদিকদের মারধরসহ তাদের বিরম্নদ্ধে দেয়া হয় মিথ্যা মামলা। বিগত সরকারের সময় দৈনিক জনকণ্ঠের বাউফলের নিজস্ব সংবাদদাতা কামরম্নজ্জামান বাচ্চুর বিরম্নদ্ধে থানা ও কোর্টে বিভিন্ন ধরনের ৫ টি মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করা হয়। এ ছাড়াও মামলা দেয়া হয় দৈনিক মানব জমিনের সাংবাদিক এমরান হাসান সোহেল, দৈনিক সমকালের সাংবাদিক জিতেন্দ্র নাথ রায়ের বিরম্নদ্ধে। মারধর করা দৈনিক যুগানত্মর প্রতিনিধি আরেফিন শহীদ, দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি আল মামুনকে।
বর্তমান সরকারে সময়ও সেই সব সন্ত্রাসী ও সুবিধাবাদি নামধারী সাংবাদিকরা প্রগতিশীল সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে। গত ১৪ ফেব্রম্নয়ারি বিএনপি ক্যাডার ও পুলিশের তালিকা ভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী জুলহাসকে দিয়ে জনকণ্ঠের সাংবাদিক বাচ্চুর বিরম্নদ্ধে একটি চাঁদাবাজির মামলা করানো হয়েছে। এছাড়াও মামলা দেয়া হয়েছে ভোরের কাগজের বাউফল প্রতিনিধি অতুল চন্দ্র পালের বিরম্নদ্ধে। মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়া হয়েছে আরও কয়েক সাংবাদিককে। সন্ত্রাসী জুলহাস গত বিএনপি সরকারের সময় সন্ত্রাসী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। ওই সময় বিরোধী দলে থাকা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকমর্ীদের নির্যার্তন করা হয়েছে জুলহাসকে দিয়ে। সেই জুলহাস এখন আবার আওয়ামী লীগের কয়েক নেতার কাঁধে ভর করে নানা অপকর্ম শুরম্ন করেছে নতুন করে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম অসনত্মোষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আওয়ামীলীগের কয়েক নেতা অভিযোগ করেছেন, জুলহাস বর্তমানে আওয়ামী লীগের পরিচয়ে দাপট দেখালেও তার বাবা সুলতান আহম্মেদ বর্তমানে ৫ নং ওয়াডের পৌর বিএনপির সভাপতি। পরিবারের অন্যান্যরাও বিএনপি করছেন দাপটের সঙ্গে। জুলহাসের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গেছে, পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে জুলহাস নানা মাধ্যমে তদবির করে আওয়ামীলীগের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছেন। মূলত সে এখনও বিএনপি করছে।
উলেস্নখ্য, দৈনিক জনকণ্ঠের সাংবাদিক বাচ্চুর বিরম্নদ্ধে বিএনপি ক্যাডার বাউফলের শীর্ষ সন্ত্রাসী জুলহাসের দায়ের করা মামলায় উলেস্নখ করা হয় যে, সাংবাদিক বাচ্চু তার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। না পেয়ে তাকে ১৩ ফেব্রম্নয়ারি বিকাল ৫টায় মারধর করে পকেটে থাকা ১০ হাজার ৭শ' টাকা ছিনিয়ে নেয়। বিএনপির ক্যাডার জুলহাসের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ে দৈনিক জনকণ্ঠে গত বছর ৫ সেপ্টেবর সংবাদ প্রকাশিত হলে সে বাচ্চুকে দেখিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। পরে পুলিশের অভিযানের মুখে সে দীর্ঘদিন এলাকার বাইরে গা ঢাকা দেয়। সমপ্রতি আবার সে বাউফলে এসে তার বাহিনী নানা অপকর্ম শুরম্ন করে। জুলহাস বাউফল থানা পুলিশের তালিকায় সে ১৩ নম্বরের শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসাবে অনত্মর্ভুক্ত হলেও, তদবিরকারীর তালিকায়ও তার নাম রয়েছে ৩ নম্বরে। চাঁদাবাজি, ছিনতাই, দখল, টেন্ডারবাজি, নারী নির্যাতন, সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িয়ে একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় নাম লেখান। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে এক সাবেক এমপির আশীর্বাদ পেয়ে বেপোরয়া হয়ে ওঠেন। তারপর থেকে এই পথেই চলছেন সে। সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বাইরেও বাউফল হাসপাতালের সামনে লাইসেন্স বিহিন একটি ফার্মেসী ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টার দিয়ে রমরম ব্যবসা চালাচ্ছেন। তার এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রোগী ও প্রেসক্রিপসন না পাঠালে হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ মারধর করা হয়। তার অনৈতিক দাবি না মানায় জোট সরকারের সময় হাসপাতাল কোয়ার্টারে ঢুকে জনৈক ডাক্তারকে মারধর করে তার বাসা থেকে ৬০ হাজার টাকা ও ৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। কিছুদিন আগে হাসপাতালে গিয়ে এক ডাক্তারকে মারধর করায় সে বদলি হয়ে চলে যান। এ ছাড়াও তার ফার্মেসিতে বাকিতে ওষুধ না দিলে রিপ্রেজেনটিভদের মারধর করা হয়। বাকিতে ওষুধ না দেয়ায় স্কয়ার ও রেফকো কোম্পানির প্রায় ৩ ল টাকার ওষুধ জোড় করে রেখে দেয়। হাসপাতালের সামনে হুমায়ূন নামের এক ওষুধ ব্যবসায়ীর ও আওয়ামী লীগ নেতার মৃতু্যর পর তার ফার্মেসি থেকে দেড় ল টাকার ওষুধ জোর করে নিয়ে যায়। এই শীর্ষ সন্ত্রাসী ও তার বাহিনীর সদস্যরা প্রকাশ্যে হাসপাতাল পুকুর থেকে প্রায় ৫ ল টাকার মাছ লুট করে। বাউফলের ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা এই শীর্ষ সন্ত্রাসী তার এলাকার সনজিত সাহা নামের এক সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীর ২ একর জমি বর্তমানে জবর দখল করে রেখেছেন। একের পর এক তার এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে পৌরবাসী অতিষ্ঠ। এ ঘটনায় তার বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাউফলের এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ লিখিত ভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নির্দেশও দেন।

No comments

Powered by Blogger.