দেশবিরোধী কোন চুক্তি মানা হবে না খালেদা

 বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) দ্বিবার্ষিক জাতীয় কাউন্সিলে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি করেছে তা দেশবিরোধী।
আর দেশবিরোধী কোন চুক্তি মেনে নেয়া হবে না, মেনে নেয়া যায় না। কাজেই বর্তমান সরকার ৰমতায় থাকলে বাংলাদেশ নামমাত্র থাকবে, দেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে না। বর্তমান সরকারের হাতে দেশ ও দেশের জনগণ নিরাপদ নয়। একমাত্র বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের কাছেই বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগণ নিরাপদ। রবিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিজেপির কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কাউন্সিলে বিজেপির বর্তমান চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ চেয়ারম্যান পদে এবং শামিম আল মামুন মহাসচিব পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।
বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ এমপির সভাপতিত্বে কাউন্সিলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আরও বলেন, বর্তমান সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ সব ৰেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। চারদলীয় জোট সরকারের আমলের চেয়ে বর্তমানে দ্রব্যমূল্য অনেক গুণ বেশি- মনত্মব্য করে তিনি বলেন, সরকার চারদলীয় জোটের আমলের সঙ্গে তুলনা করতে না পেরে এখন বলছে, দ্রব্যমূল্য ভারতের চেয়ে কম রয়েছে। আসলে সরকারের ভারত প্রেম এত বেশি হয়ে গেছে যে, কথায় কথায় তারা ভারতকেই দেখে, বাংলাদেশকে দেখে না। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধান থেকে শুরম্ন করে নিচ পর্যনত্ম কেউই সত্য কথা বলেন না। প্রতিনিয়ত তারা শুধু মিথ্যা কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন বর্তমান সরকারের আমলে জ্বালানি খাতে ৩৭০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বলেন, বিনা টেন্ডারে কারা ৩৭০ কোটি টাকার কাজ দিয়েছে, তা দেশের সবাই জানে। সরকারের প্রধান থেকে সবাই দুর্নীতি ও লুটপাটে ব্যসত্ম রয়েছে। তবে মাথায় যখন পচন ধরেছে, তখন পুরোটুকু পচন ধরতে সময় লাগবে না। তিনি বলেন, আমাদের মানবসম্পদসহ বিভিন্ন সম্পদ হসত্মগত করতে বিদেশীরা ষড়যন্ত্র করছে। আর আমাদের সম্পদ হসত্মগত করতেই তারা বর্তমান সরকারকে ব্যাপক কারচুপির মাধ্যমে ৰমতায় বসিয়েছে। বিগত নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির প্রমাণ বিএনপির হাতে আছে বলেও বিরোধী দলীয় নেতা তাঁর বক্তব্যে উলেস্নখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অন্যের হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি তথা জাতীয়তাবাদী শক্তি দেশের বিরম্নদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না। তিনি সরকারের দেশবিরোধী কর্মকা- সম্পর্কে দেশের জনগণ বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে সচেতন করার ওপর গুরম্নত্বারোপ করে বলেন, সরকারের দেশবিরোধী কর্মকা-ের বিরম্নদ্ধে আমরা অবশ্যই আন্দোলন করব। এজন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। এ প্রসুত্মতির অংশ হিসেবে সংগঠনকে যেমন শক্তিশালী করতে হবে, তেমনি জনগণকে সরকারের দেশবিরোধী কর্মকা- সম্পর্কে জানাতে হবে। যাতে আন্দোলনের কর্মসূচী দিলে তা জনগণের অংশগ্রহণে সফল হয়। তিনি বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল ছিল বলে আওয়ামী লীগই দাবি করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শপথ অনুষ্ঠানেও তারাই সামনের আসনে বসা ছিল মনত্মব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেমন দেশের বিরম্নদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, সেই একই ষড়যন্ত্রে আওয়ামী লীগ সরকারও লিপ্ত আছে। আসলে দেশের বিরম্নদ্ধে ষড়যন্ত্র ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি শুরম্ন হয়নি, আরও আগে থেকেই শুরম্ন হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
কাউন্সিলে চারদলীয় জোটের শরিক দলগুলোর পৰে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আব্দুল লতিফ নেজামী। এ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের পৰে বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মওলানা ইসাহাক, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এমপি, জয়নুল আবেদীন ফারম্নক এমপি, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি। কাউন্সিলে সাংগঠনিক রিপোর্ট উপস্থাপন করেন বিজেপির মহাসচিব শামিম আল মামুন। বক্তব্য রাখেন বিজেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য খলিলুর রহমান মজুমদার, সালাউদ্দিন মতিন, শেখ ফরিদ, অধ্যৰ বুলবুল নাহার, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আশিকুর রহমান শানত্ম, কুষ্টিয়া জেলার সভাপতি জাফরম্নলস্নাহ চৌধুরী, বান্দরবানের সভাপতি সবুর খান, খুলনা জেলার সভাপতি আতিকুর রহমান লাবু, রাজশাহীর সভাপতি মনসুর রহমান, পটুয়াখালীর সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক খন্দকার, টাঙ্গাইল জেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক খান, চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি নূর মোহাম্মদ খান, বগুড়ার সভাপতি রেজাউল করিম রবিন, যশোরের আহবায়ক ফজলুল আলম, সাতৰীরার সভাপতি শেখ গোলাম, জামালপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান, শেরপুরের সভাপতি আব্দুর রশিদ বিএসসি, ময়মনসিংহের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, গাইবান্ধার সভাপতি নুরম্নজ্জামান প্রধান, ভোলা জেলার সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, বিজেপি দুবাই শাখার সভাপতি জুলকার নায়িন।

No comments

Powered by Blogger.