‘বিচিত্র রাজনীতির নতুন সমীকরণের পূর্বাভাস’

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি বলেছেন, প্রস্তাব পাওয়ার পরও মন্ত্রী হিসেবে প্রবীণ দুই রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদ ও রাশেদ খান মেননের শপথ না নেয়াটা হলো ‘বিচিত্র রাজনীতির নতুন সমীকরণের পূর্বাভাস’। এতে সম্প্রতি রাজনীতি রোমাঞ্চিত হয়ে উঠেছে। গণমাধ্যম উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।


কিন্তু এ নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। এটা সাংবিধানিক প্রক্রিয়া। সাংবিধানিক উপায়ে এবং গণতান্ত্রিকভাবেই এর সফল সমাপ্তি ঘটবে।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী শিল্পগোষ্ঠী লীগ ঢাকা জেলা শাখা আয়োজিত ‘বিএনপি-জামায়াতের অশুভ রাজনীতি আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তোফায়েল আহমেদ ও রাশেদ খান মেননের মন্ত্রী হিসেবে শপথ না নেয়া তাদের ব্যক্তিগত ও রাজনীতিক সিদ্ধান্ত হিসেবে উল্লেখ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আরো বলেন, এ দেশের রাজনীতি অনেক বিচিত্র। এটি নতুন রাজনীতির নতুন সমীকরণের পূর্বাভাস মাত্র। আলেকজান্ডার এক সময় উপমহাদেশে এসে বলেছিলেন, ‘সত্যি সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ’। আমি সত্যি সেলুকাস বলব না, বলব- সত্যি বাংলা, বাংলাদেশের রাজনীতি অত্যন্ত বিচিত্র।
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সমালোচনা করে প্রবীণ এই পার্লামেন্টারিয়ান বলেন, তাদের শাসন আমলে দেশে জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটে এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চালু হয়। সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা, মানুষ হত্যা সব মিলে একটি উগ্রবাদের রাজনীতির সংস্কৃতি চালু হয়েছিল। তিনি বলেন, বর্তমানে যুদ্ধাপরাধী, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার বিচার চলছে। কোন ষড়যন্ত্রেই এ বিচার বন্ধ হবে না। আর এ বিচার শেষ হলে উগ্র রাজনীতি নির্মূল হবে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম। স্বাধীনতার পর সেই আলোকেই সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু জাতির পিতাকে হত্যার পর সংবিধানকে বিভিন্ন সময়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়। যাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল তাদের ক্ষমতায় নিয়ে এসে উগ্র সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল। তারই ফলশ্রুতিতে জঙ্গী হামলার ঘটনা ঘটে। অনিবার্য পরিণতিতে বাঙালী জাতি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে। তারপর সুপ্রীমকোর্টের রায়ের আলোকে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাহাত্তরের সংবিধান ফিরিয়ে আনা হয়। তিনি বলেন, জনতার ক্ষমতায় বিশ্বাসী জনপ্রতিনিধিদের দিয়ে দেশ পরিচালিত হবে এটাই কাম্য। স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে এটা নিয়েই আমাদের পার্থক্য।
হুমায়ুন কবির মিজির সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এম ফয়েজ উদ্দিন মিয়া, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি সভাপতি সালাউদ্দিন বাদল, জনতা ব্যাংকের পরিচালক ও সাবেক ছাত্রনেতা এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার।

No comments

Powered by Blogger.