পল্টনে হামলা-ভাঙচুর-জামায়াত-শিবিরের ১২১ নেতা-কর্মীর বিচার শুরু

জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামসহ ১২১ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে রমনা থানায় করা দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলার বিচার শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ এরফান উল্লাহ দ্রুত বিচার আইনের ৪ ও ৫ ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। ২৫ জানুয়ারি এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।


গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন ও রমনা থানা এলাকায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে সরকারি সম্পদ ধ্বংসের অভিযোগ আনা হয় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। তাঁদের বিরুদ্ধে রমনা ও পল্টন থানা পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ আনা হয়। এতে পুলিশ দ্রুত বিচার আইনে দুটিসহ পাঁচটি মামলা করে।
ঘটনার আট দিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর দুটি মামলায় দ্রুত বিচার আইনের ৪ ও ৫ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করে রমনা মডেল থানার পুলিশ ও পল্টন থানার পুলিশ। পল্টন থানায় করা মামলাটির অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার শুনানি ২৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এই মামলায় আসামির সংখ্যা ১৬৮ জন।
এ আইনে অপরাধী ও সহায়তাকারীর সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজার বিধান রয়েছে। এ ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি এতে ক্ষতিগ্রস্ত হলে আদালত তার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে অর্থ দণ্ডাদেশ দিতে পারেন।
অভিযোগপত্রভুক্ত উল্লেখযোগ্য আসামি: রমনা থানার মামলার আসামিরা হলেন: জামায়াতের নায়েবে আমির এ কে এম ইউসুফ, এ কে এম নাজির আহমদ, আবদুস সোবহান, জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি মজিবুর রহমান, শফিকুর রহমান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল), কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলী, এ টি এম মাছুম, কেন্দ্রীয় প্রচার সেক্রেটারি তাসনীম আলম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য আবদুর রব, ইজ্জত উল্লাহ, জামায়াতের ঢাকা মহানগর কমিটির আমির রফিকুল ইসলাম খান, সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আযাদ, সহকারী সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম, মাওলানা আবদুল হালিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফখরুদ্দিন মানিক, সেক্রেটারি জেনারেল দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা রাজপথে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বেআইনিভাবে বল প্রয়োগ করে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি, যানবাহন ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধন করেন। এ ছাড়া আসামিরা শক্তির মহড়া প্রদর্শন করে ত্রাস সৃষ্টি, পুলিশের কাজে বাধা এবং সরকারি-বেসরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করায় তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনের ৪ ও ৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
সূত্র জানায়, এ মামলায় নয়জন পলাতক, ১০ জন জামিনে মুক্ত এবং আটজন কারাগারে আটক আছেন। অন্য আসামিরা এ মামলায় জামিন পেলেও অন্য মামলায় কারাগারে আছেন।
জামায়াতের প্রতিবাদ: এ টি এম আজহারুল ইসলামসহ দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াত। দলের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ গতকাল এক বিবৃতিতে একে মিথ্যা মামলা আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহার করে নেতাদের নিঃশর্তভাবে মুক্তি দাবি করেন।

No comments

Powered by Blogger.