গ্যাস সংকট-সরবরাহ নিশ্চিত করুন

তই দিন যাচ্ছে রাজধানীতে গ্যাস সংকট ততই প্রকট হয়ে উঠছে। কোনো কোনো এলাকায় রাতে তিরতির করে গ্যাস সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে, আবার কোথাও কোথাও দিন-রাত গ্যাস সরবরাহ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে রাজধানীতে বসবাসকারী নাগরিকদের একটি বড় অংশের রান্না-খাওয়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কর্মজীবী মানুষকে রাত জেগে বসে থাকতে হচ্ছে গ্যাস এলে রান্না করতে হবে।


নগরের গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাসের অফিসে টেলিফোন করে, লিখিত অভিযোগ জানিয়ে কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ পর্যায়ক্রমে সমস্যা সমাধানের কথা বললেও অবস্থার সামান্য পরিবর্তন কোথাও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। পুরান ঢাকার হাজারীবাগ, লালবাগ থেকে শুরু করে ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুর অথবা খিলগাঁও, সিপাহীবাগ, মিরপুর, মনিপুর কিংবা বনশ্রী, উত্তরা সর্বত্রই একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে।
এ অবস্থা কোনোক্রমেই মেনে নেওয়া যায় না। বাসাবাড়িতে গ্যাসের সংকট নতুন নয়। ঢাকা মহানগর এবং এর আশপাশের এলাকায় এ সংকট অব্যাহত রয়েছে কয়েক বছর ধরে। কিন্তু পরিস্থিতি উন্নত হওয়া তো দূরে থাকুক, এই হারে অবনতির দিকে যেতে থাকলে নাগরিক জীবন যে অচিরেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা কেউ কেউ এলপি গ্যাস কিনে নিচ্ছেন এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে। কিন্তু যাঁদের সামর্থ্য নেই, তাঁরা কী করবেন? জানা গেছে, চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যথাযথভাবে সরবরাহ পাইপ পরিবর্তন না করা এবং গ্যাসের প্রয়োজনীয় বেগ না থাকায় এ সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। অথচ জনগণকে গ্যাসের বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে নিয়মিতই।
গৃহস্থালি বা আবাসিক কাজে প্রাকৃতিক গ্যাস নিশ্চিত করা এখন সরকারের জন্য অপরিহার্য, সবচেয়ে বড় করণীয় হয়ে পড়েছে। গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে আবাসিক কাজে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন স্বাভাবিক কারণেই। আবাসিক গ্যাস ব্যবহারকারীরা স্বল্প গ্যাস ব্যবহার করে থাকেন এবং অতি প্রয়োজনীয়, বিশেষ করে খাবার প্রস্তুতের কাজে এ গ্যাস ব্যবহার হয়ে থাকে। সুতরাং এ সরবরাহ কোনোক্রমেই ব্যাহত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে কালবিলম্ব না করে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সেইসঙ্গে গ্যাস উত্তোলন এবং নতুন কূপ খনন প্রশ্নে যে জটিল অবস্থা বিরাজ করছে, তা নিরসনকল্পে করণীয় কী, তা দ্রুত নির্ধারণ করতে হবে। কারণ গ্যাস থাকলে সরবরাহের প্রশ্ন। পর্যাপ্ত মজুদ না থাকলে শুরু হবে আরেক ভয়াবহ সমস্যা। ইতিমধ্যে গ্যাসের মজুদ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, বহু প্রতিষ্ঠান এখনো অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে রেখেছে বলে জোর অভিযোগ আছে। এ ব্যাপারে পেট্রোবাংলাসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অচিরেই সাঁড়াশি অভিযান চালাতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.