প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ-এবার দোলেশ্বরের শিকার ব্রাদার্স

প্রথম তিন ম্যাচেই হার। তবে পর পর দুই ম্যাচে বড় দলকে হারিয়ে প্রাইম দোলেশ্বর হঠাৎ করেই ‘জায়ান্ট কিলার’ হয়ে উঠেছে প্রিমিয়ার লিগে! আগের ম্যাচে শেখ জামালকে হারানোর পর ফতুল্লায় কাল ব্রাদার্সকেও তারা হারাল ৩ উইকেটে। প্রথম ম্যাচে জয়ের পর এ নিয়ে টানা চার ম্যাচ হারল ব্রাদার্স।


মিরপুরে প্রাইম দোলেশ্বর জিতেছে শেষ ওভারে। বিকেএসপিতে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবও তাই। সূর্যতরুণের বিপক্ষে তাদের জয় ২ উইকেটের। হার-জিত, হার-জিত করতে করতে লিগে এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচে তিন জয় শেখ জামালের। সূর্যতরুণ জেতেনি এক ম্যাচও। মিরপুরে বিমানকে ১২৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে জয়ের ধারায় আছে ওল্ড ডিওএইচএস। লিগে এটি তাদের চতুর্থ জয়, বিমানের তৃতীয় হার।
কাগজ-কলমের শক্তিমত্তায় প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে ব্রাদার্সই ছিল ফেবারিট। কিন্তু টানা দ্বিতীয় ম্যাচে অঘটন ঘটিয়ে কাল তাদের ২৭৩ রানও টপকে গেল প্রাইম! ৯ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুটা হয়েছিল খুব বাজে। প্রথম ২৫ ওভারে রান ২ উইকেটে ১০২। ওপেনার মিজানুর (৭৬) আর শাহরিয়ার নাফীসের (৪১) ১০০ রানের তৃতীয় উইকেট জুটিতে এই সময়ে বিপর্যয় এড়ানোর কাজটাই চলছিল আসলে। পরে বাকি কাজটা করেছেন ভারতীয় মানবিন্দর সিং (৭৬*)। তবে তুলির শেষ আঁচড় এসেছে ৬ বলে অপরাজিত ১৪ রান করা তাইজুলের ব্যাট থেকে। শেষ ২ ওভারে জেতার জন্য ১৫ রান দরকার ছিল প্রাইম দোলেশ্বরের। তাইজুলের এক ছক্কা ও এক চারে রাজ্জাকের করা ৪৯তম ওভারেই এসেছে ১২। বাকি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে শেষ ওভারের চার বল বাকি থাকতেই। ঝড়টা রাজ্জাকের ওপর দিয়েই বেশি গেছে। নিজের প্রথম ৫ ওভারে যেখানে তিনি দিয়েছিলেন মাত্র ১৯ রান, পরের ৫ ওভারেই দিলেন ৫৬!
২৫৭ রান শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটে বড় লক্ষ্যই। সাঈদ আনোয়ার (৪৬) ও জিয়াউর রহমানের (৬৪) ১১২ রানের ওপেনিং জুটি আর শুভাগত হোম চৌধুরীর ৫৪ রানের সৌজন্যে কাল বিমানের সামনে এই লক্ষ্যটাই দিয়েছিল ওল্ড ডিওএইচএস। জবাবে বিমান শুরু থেকেই চলল ভুল ‘কোর্সে’। ১৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে যখন প্রায় ‘জরুরি অবতরণে’র অবস্থা, পাকিস্তানি ফয়সাল ইকবাল ককপিটে আস্থা ছড়াতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু বাকিদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান যখন ১৯, বিমানকে আকাশে রাখতে এক ফয়সালের ৬৮ রানের ইনিংস কতটাই বা জ্বালানি জোগাতে পারে! ৫ ওভার ৫ বল বাকি থাকতে ১৩২ রানেই বিধ্বস্ত বিমান। তাদের মাটিতে নামাতে ওল্ড ডিওএইচএস অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল বোলার ব্যবহার করেছেন ৯ জন। ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তাদের মধ্যে সফলতম আবার তিনি নিজেই।
মিরপুরে একপেশে ম্যাচ হলেও ফতুল্লার মতো ক্রিকেটীয় উত্তেজনা ছিল বিকেএসপিতেও। ওপেনার জুপিটার ঘোষ (৬২) ও ছয় নম্বর ব্যাটসম্যান তায়েবুর পারভেজের (৬২) ফিফটিতে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান করে সূর্যতরুণ। ১৫২ রানে ৫ উইকেট পড়ার পর ষষ্ঠ উইকেটে দুজন মিলে যোগ করেন ৭৬। জবাবে শেখ জামালের শুরু ১২ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে। এরপর দলের ৪৪ রানের মাথায় মুশফিকুর রহিমও ড্রেসিংরুমে ফিরলে চাপে পড়ে যায় প্রিমিয়ারে নবাগত দলটি। ভারতীয় দীপক জুনের (৪৮) সঙ্গে মেহরাব জুনিয়রের (৬৪) ৬৭ রানের জুটিতে মাথা তুলে দাঁড়ায় শেখ জামাল। এরপর মাহমুদুল হাসান (৩৮), অধিনায়ক সোহরাওয়ার্দী (৪২*), আরিফুল হকদের যৌথ প্রযোজনায় ৫ বল বাকি থাকতেই জয় পেয়ে যায় শেখ জামাল।

সং ক্ষি প্ত স্কো র
ওল্ড ডিওএইচএস: ৫০ ওভারে ২৫৭ (জিয়া ৬৪, শুভাগত ৫৪, সাঈদ ৪৬, ফয়সাল ৩২, নূরুল ২৮*; কাশিফ ২২/৩, রেজাউল ২/৪২, সানোয়ার ২/৪৯)। বিমান: ৪৪.১ ওভারে ১৩২ (ফয়সাল ৬৮; আশরাফুল ৩/২৮, সাঈদ ২/১০)। ফল: ওল্ড ডিওএইচএস ১২৫ রানে জয়ী।

সূর্যতরুণ: ৫০ ওভারে ২৪৪/৭ (জুপিটার ৬২, তায়েবুর ৬২, ইমরান ৩২, খুররম ২৫; আরিফুল ৩/৪৭)। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব: ৪৯.১ ওভারে ২৪৮/৮ (মেহরাব জুনিয়র ৬৪, দীপক ৪৮, সোহরাওয়ার্দী ৪২*, মাহমুদুল ৩৮, আরিফুল ২০; ইমরান ৩/৪৪, কিবরিয়া ২/৩১)। ফল: শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ২ উইকেটে জয়ী।

ব্রাদার্স: ৫০ ওভারে ২৭৩/৮ (ইমরান ৫৯, সোহেল ৪৭, আফতাব ৪২, নাফিস ২৯, নাজিমউদ্দিন ২৬, রাজ্জাক ২৪*; তাইজুল ২/৪৪, জায়েদ ২/৬৭)। প্রাইম দোলেশ্বর: ৪৯.২ ওভারে ২৭৪/৭ (মানবিন্দর ৭৬*, মিজানুর ৭৬, শাহরিয়ার ৪১, কায়সার ২১; আশরাফুল হক ২/৩২, সোহেল ২/৪০, তাপস ঘোষ ২/৫৯)। ফল: প্রাইম দোলেশ্বর ৩ উইকেটে জয়ী।

No comments

Powered by Blogger.