সিরিয়ায় সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা-হত্যা বন্ধ করুন :আসাদকে বান

সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে যারা সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এরই মধ্যে যারা কারাবন্দি হয়েছে, তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। সরকারি বার্তা সংস্থা সানার এক রিপোর্টে এ সাধারণ ক্ষমার কথা বলা হয়। এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন এ মুহূর্তে মানুষ হত্যা বন্ধে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


দেশটিতে ১০ মাস ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়ন ও রক্তপাত বন্ধে রোববার এ আহ্বান জানান তিনি। খবর আলজাজিরা, এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের।
সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা সানা এক রিপোর্টে জানিয়েছে, কারাবন্দি আন্দোলনকারীদের পাশাপাশি যারা শান্তিপূর্ণ মিছিল করবে এবং ৩১ জানুয়ারির মধ্যে যারা অস্ত্র ত্যাগ করবে তারা সাধারণ ক্ষমার আওতায় আসবে। এ ছাড়া যেসব সেনাসদস্য বিদ্রোহীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, তারা যদি ফিরে আসতে চায়, তবে ক্ষমার আওতায় তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, গণআন্দোলন শুরুর কারণে এর আগেও ব্রাদারহুড নেতাকর্মীসহ রাজবন্দিদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন আসাদ। গত বছরের মার্চে আন্দোলন শুরুর পর প্রেসিডেন্ট আসাদ এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৫২ রাজবন্দিকে মুক্তি দেন।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে রাজনৈতিক সংস্কার বিষয়ক এক সভায় দেওয়া বক্তব্যে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেন, আজ আমি আবারও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, নিজের জনগণ হত্যা বন্ধ করুন। দমন-পীড়নের পরিণতি করুণ হয়।
আরব বিশ্বের গণআন্দোলনকে ইঙ্গিত করে মুন আরও বলেন, এ আন্দোলন শুরু হওয়ার সময় থেকেই আমি সংশ্লিষ্ট নেতাদের বলেছিলাম_ জনগণের কথা শুনুন, তাদের বোঝার চেষ্টা করুন। তাদের কেউ কেউ সে কথা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়ে লাভবান হয়েছেন, অন্যরা তা করেননি। আজ তারা ঝড়ের মুখে উড়ে গেছেন। মুন বলেন, জাতিসংঘ লিবিয়া, মিসর, তিউনিসিয়া এবং ইয়েমেনে পরিবর্তনকে সমর্থন দিয়েছে। আরব রাষ্ট্রগুলোতে সব ধরনের পরিবর্তনে সহায়তা করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রসঙ্গত, আরব বিশ্বে গণআন্দোলনের ফলে তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদিন বেন আলি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আর মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক এখন বিভিন্ন মামলায় আদালতে বিচারের মুখোমুখি। ইয়েমেনের আলি আবদুল্লাহ সালেহও ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন। ক্ষমতা ত্যাগ না করে লড়াই চালিয়ে যাওয়ায় বিদ্রোহীদের হাতে করুণ মৃত্যু হয় লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার আল গাদ্দাফির। সিরিয়ায়ও ১০ মাস ধরে আন্দোলন চলছে।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত মার্চ থেকে সিরিয়ায় আসাদবিরোধী আন্দোলন দমনে সরকারি বাহিনীর হাতে ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আর সিরীয় সরকারের দাবি অনুযায়ী, দীর্ঘ ১০ মাসে সন্ত্রাসীদের হামলায় ২ হাজারেরও বেশি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য প্রাণ হারিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.