যে কারণে সোহেলকে হত্যা করে পাঁচ বন্ধু

খুন হয়েছে রাজধানীর হাজারীবাগে সোহেল (২০) নামে এক যুবক। রোববার সন্ধ্যার পর কোনো এক সময়ে তার ঘনিষ্ঠ পাঁচ বন্ধু মিলে হাজারীবাগ বেড়িবাঁধে সোহেলকে গলা কেটে হত্যা করে। সোমবার সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হত্যাকাণ্ডের নির্মম ও চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। নিহত সোহেলের বাসা হাজারীবাগের মনেশ্বর রোডে।


এ ঘটনায় জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক ঘটনার তথ্য পায়।রোববার রাতে জুয়েল ওরফে সোহেলকে হাজারীবাগের বেড়িবাঁধে ডেকে নিয়ে যায় তার পাঁচ বন্ধু। এর পর সেখানে সবাই মিলে গাঁজা সেবন করে। এ সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সোহেলকে বেশি পরিমাণে গাঁজা সেবনে বাধ্য করা হয়। এক পর্যায়ে সোহেল বেসামাল হয়ে পড়লে বন্ধু সাফায়েত তাকে বেধড়ক পেটায়। পিটুনিতে অচেতন হওয়ার পর ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে তাকে হত্যা করা হয়। জানা গেছে, সাফায়েতের ছোট ভাই ইফাতকে ধূমপান করতে দেখে তাকে চড় মেরেছিল সোহেল। এ অপরাধেই তাকে প্রাণ দিতে হলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হাজারীবাগের শিকদার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পাশের এলাকা থেকে সোমবার সকালে সোহেলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সোহেলের বাবা হাফিজ মিস্ত্রী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতারকৃতরা হলো_ সাফায়েত, সজীব, শাহীন, রুবেল ও রনি। হাজারীবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম সমকালকে জানান, রোববার দুপুরে সোহেল তার বাসার কাছে (হাজারীবাগের মনেশ্বর রোডে) একটি চায়ের দোকানে বসেছিল। এ সময় সে সাফায়েতের ছোট ভাই ইফাতকে সেখানে ধূমপান করতে দেখে ক্ষিপ্ত হয়। তাকে কাছে ডেকে অল্প বয়সে ধূমপান করার জন্য বকুনি দেয়। এতে ইফাত উত্তেজিত হয়ে হয়ে তাকে গালাগাল করে। সোহেল পাল্টা ইফাতকে একটি চড় মারে। সেদিন সন্ধ্যায় সোহেলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সজীব তার বাসায় যায়। চা খাওয়ার কথা বলে তাকে বাসার বাইরে নিয়ে যায়। পরে সোহেলকে নিয়ে সজীব হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এলাকায় শিকদার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পাশের একটি পরিত্যক্ত ও নির্জন স্থানে বসে। সেখানে তাদের সঙ্গে শাহীন ও রুবেল নামে দুই বন্ধু যোগ দেয়। এ সময় তারা সিগারেটের ভেতরে গাঁজা ভরে সেবন করে। কিছুক্ষণ পর সাফায়েতও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে নেশাগ্রস্ত সোহেল বাড়ি ফিরতে চায়। কিন্তু সাফায়েত এক পর্যায়ে তাকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সোহেল অচেতন হয়ে পড়ে। চেতনা ফিরলে সোহেল ঝামেলা করতে পারে ভেবে তাকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় সাফায়েত। রুবেল হাজারীবাগ বাজার থেকে একটি ধারালো ছুরি কিনে নিয়ে যায়। এর পর সবাই মিলে সোহেলের হাত-পা চেপে ধরে। সাফায়েত নিজেই সোহেলকে গলা কেটে হত্যা করে।
ওসি বলেন, নিহত সোহেল ও সাফায়েত ২০০৬ সালে ধানমণ্ডি থানার একটি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত। এ চক্রটির বিরুদ্ধে ছোটখাটো অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।

No comments

Powered by Blogger.