দেশি গার্ল দেশি গার্ল by শ্রাবণ সরকার

মেঘে মেঘে বেলা তো আর কম হলো না। এক দশক হতে চলল বলে। চিত্রাঙ্গদা সিং রুপালি দুনিয়ায় পা রাখেন ২০০৩ সালে। তাঁর প্রথম ছবি 'হাজারো খোয়াইশে অ্যাইসি' মুক্তি পেয়েছিল সে বছরই। তারপর একে একে বেরোলো 'সরি ভাই', 'বরষা' ও 'ইয়ে সালি জিন্দেগি'। তবে এর আগেও ছোট পর্দায় কাজের অভিজ্ঞতা ছিল চিত্রাঙ্গদার। কাজ করেছেন বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপন ও মিউজিক ভিডিওতে। স্কুল-কলেজ জীবনেও অংশ নিয়েছেন নানা সাংস্কৃতিক


কর্মকাণ্ডে। নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় চিত্রাঙ্গদাকে দেখে এক তথ্যচিত্র নির্মাতা বলেছিলেন স্মিতা পাতিলের সঙ্গে তাঁর অদ্ভুত মিলের কথা! স্মিতাকে নিয়ে ওই নির্মাতার তথ্যচিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাবও পেয়েছিলেন চিত্রাঙ্গদা। তবে সেটাকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে তখন আমলে নেননি তিনি।
তারও অনেক পরে তাঁর অভিনীত প্রথম ছবি 'হাজারো খোয়াইশে অ্যাইসি' মুক্তি পায়। চিত্রাঙ্গদা অভিনীত কোনো সিনেমাই অবশ্য বঙ্ অফিসে বুক ফুলিয়ে রাজত্ব করতে পারেনি। আর চিত্রাঙ্গদার চরিত্রচিত্রণও ছিল এলেবেলে টাইপের। যদিও প্রথম ছবি মুক্তির পর, দর্শক প্রতিক্রিয়ার প্রশ্নে চিত্রাঙ্গদার নিজের জবানী ছিল এমন, 'হাজারো খোয়াইশে অ্যাইসি'তে আমার অভিনয় সম্পর্কে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি, তা এক কথায় দারুণ! বিশাল ভরদ্বাজ তো জোর দিয়ে বললেন, "তিনি আমার কথা ভেবেই সামনে সিনেমার গল্প লিখবেন। আমার অভিনয় এতটাই মুগ্ধ করেছে তাঁকে। আশুতোষ গোয়াড়িকর তো দেখা হলেই বলছেন 'অ্যামেজিং'। আর কেতন মেহতা ছবিটা বারবার দেখছেন।"
৯ বছর আগের এই উচ্ছ্বাস ছাপিয়ে 'দেশি বয়েজ' ঘিরে চিত্রাঙ্গদার 'নয়া উচ্ছ্বাস' কেমনতর? শুনুন তাঁর নিজের মুখেই। দিনকয় আগেই দিলি্লতে ভক্তদের মাঝে উপস্থিত হয়েছিলেন চিত্রাঙ্গদা। সঙ্গে ছিলেন ছবির সহ-অভিনেতা অক্ষয় কুমার, জন আব্রাহাম ও দীপিকা পাড়ুকোন। কথা বললেন মন খুলে। 'দেশি?বয়েজ' সম্পর্কে?সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে জানালেন অনেক অজানা কথা। অকপটে বলে দিলেন, 'দেশি বয়েজ আমার কাছে এক ধরনের ডেব্যু ফিল্মই বটে। কেননা এর আগে ঠিক এই ধাঁচের বাণিজ্যিক ছবি করিনি আমি। বলা যায়, পর পর একই রকমের কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করে আমি কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলাম। তখন আমি চিন্তা করলাম, আমাকে অবশ্যই আলাদা কিছু একটা করতে হবে। আমার এই প্রথম বাণিজ্যিক ছবিতে কাজ করার সময়টা সত্যিই অসাধারণ কেটেছে।'
সহ-অভিনেতা-অভিনেত্রী সম্পর্কেও চিত্রাঙ্গদার গলায় ঝরে পড়েছে উচ্ছ্বাস। অক্ষয়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে ঈষৎ কৃষ্ণকায়া এই সুন্দরীর কণ্ঠে ফুটল প্রশংসা আর প্রশংসা, 'অক্ষয় দারুণ। তিনি খুবই আন্তরিক ও বিনয়ী। কাজের ক্ষেত্রে আমাকে খুব উৎসাহ দিয়েছেন। বিশেষ করে নাচের দৃশ্যধারণে আমাকে টিপস দিয়ে যথেষ্ট সাহায্য করেছেন অক্ষয়।'
দীপিকার সঙ্গে শুটিংকালীন তাঁর 'মল্লযুদ্ধের' কথা স্রেফ গুজব বলে?উড়িয়ে দিলেন চিত্রাঙ্গদা। খবরের কাগজগুলো এ ব্যাপারে যেসব 'গালগল্প' ফেঁদেছে তা ঠাহা মিথ্যা! চিত্রাঙ্গদার সাফ জবাব, 'দীপিকা ও আমার মধ্যে কোনো ঝামেলা নেই। সবই ঠিকঠাক আছে আমাদের মধ্যে।' নিজের কথার সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে চিত্রাঙ্গদা বলেন, 'এ ছবিতে আমাদের একসঙ্গে মাত্র একটি দৃশ্য রয়েছে। দৃশ্যটি ধারণ করার দিন আমাদের কথা হয়। তাও তো মাত্র কদিন আগের কথা এটি। তবে সত্যি কথা বলতে দীপিকার সঙ্গে আমার একটা যুদ্ধ তো চলছেই! ছবির প্রচারণায় কে কাকে ছাপিয়ে যেতে পারি!'
এই প্রচারণা-লড়াইয়ে দুই 'প্রতিদ্বন্দ্বী' নায়িকার জয়-পরাজয়ের ফলাফল জানার চেয়ে দর্শকরা এখন অনেক বেশি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন তাঁদের পর্দার লড়াই দেখতে। চিত্রাঙ্গদার দ্বিতীয় দফার এই 'ডেব্যু' সিনেমা তাঁকে কতটা দর্শকপ্রিয়তা এনে দেয়, সেদিকেই এখন সবার চোখ। 'কৃষ থ্রি'তে বলিউডের প্রথম সুপারউইমেন হচ্ছেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.