ভুলবেন না ক্লার্ক

নবম উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ১৮ রানটাই এখন বেশি চোখে ভাসছে। আরেকটু পেছনে ফিরে যান। জোহানেসবার্গে চতুর্থ দিনের খেলা যখন শুরু হলো, ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ১৯৯ রানে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ বাঁচানোর আশা সেখানেই শেষ বলে ভেবেছিলেন অনেকে। কিংবা পঞ্চম দিনে খেলার শুরুতেই ক্লার্ক-পন্টিং আউট হয়ে যাওয়ার পর একসময় ২১৫ রানেই ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর কজনই বা ভাবতে পেরেছিল, ৩১০ রান তাড়া করে এই টেস্টটা জিতবে অস্ট্রেলিয়া!
মুখে যতই বলা হোক, কেপটাউনের ওই ‘৪৭’-এর দুঃসহ স্মৃতি মন থেকে এত দ্রুত ঝেড়ে ফেলাও তো চাট্টিখানি কথা নয়। এতটা ভাবতে পারেননি হয়তো মাইকেল ক্লার্কও। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক তাই ভেসে যাচ্ছেন উচ্ছ্বাসে, ‘খুব বেশি রান করিনি এই টেস্টে, কিন্তু মনে হচ্ছে আমি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আমার প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিটা পেয়ে গেছি। এর চেয়ে বেশি খুশির আর কিছু হতে পারত না। কোনো সন্দেহ নেই, আমার ক্যারিয়ারের সেরা টেস্টগুলোর একটি। এর একটা বড় কারণ, কেপটাউনে আমরা যেভাবে হেরেছিলাম, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো। এই টেস্টে উত্থান-পতন, আলোক স্বল্পতা, আবহাওয়া, রেকর্ড রান তাড়া—সব মিলিয়েই এই টেস্ট আমার কাছে বিশেষ কিছু। ম্যাচটাকে মনে রাখব অনেক দিন।’
দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ পরাজয়ের দায় দিলেন দ্বিতীয় ইনিংসে হঠাৎই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়াকে, ‘এবি ও হাশিমের জুটিতে চতুর্থ দিন সকালে আমরা খুব ভালো অবস্থায় ছিলাম। এরপর স্রেফ একটি-দুটি জুটির প্রয়োজন ছিল, তাহলেই ম্যাচটাকে আমরা ওদের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু আমরা পারিনি।’
রান তাড়ার উত্তেজনা আর নার্ভাসনেস ভালোমতোই ছুঁয়ে গিয়েছিল ক্লার্ককে, ‘গতকাল (রোববার) যখন ১৯০ রান প্রয়োজন, তখন থেকেই আমি গুনতে শুরু করেছিলাম। এর পরই আমার ব্যাটিংয়ে নামার কথা ছিল। আমি এলোমেলো পায়চারি করছিলাম। একটা সিঙ্গেল হলেই বলছিলাম আর ১৮৯ রান হাস (হাসি), আর ১৮৮ হাস।’ ম্যাচের শেষ দিকের উত্তেজনা কেউ দেখে না থাকলে কিছু আন্দাজ করতে পারেন ক্লার্কের কথা থেকে, ‘শেষ দেড় ঘণ্টায় বাথরুমে যাওয়ার জন্য আমি মরে যাচ্ছিলাম, কিন্তু সামান্য নড়তে পর্যন্ত ভয় পাচ্ছিলাম।’

No comments

Powered by Blogger.