নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি মিসরের সামরিক কাউন্সিল

বিক্ষোভের মুখে মিসরের সামরিক শাসকেরা একটি নতুন সরকারের কাছে দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হয়েছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই নতুন সরকার গঠন করা হবে। নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হবে। নতুন এই অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী কায়রোতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এক বৈঠকে ক্ষমতাসীন সামরিক সুপ্রিম কাউন্সিল এ সিদ্ধান্ত নেয়।
রাজনৈতিক সংকট নিরসন করে দেশে শান্তি ফেরানোর চেষ্টায় বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে এ পদক্ষেপ নিল সেনাবাহিনী।
বৈঠকের পর টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে সামরিক সুপ্রিম কাউন্সিলের প্রধান ফিল্ড মার্শাল হোসেন তানতাবি বলেন, ‘আমরা আগামী বছরের জুলাই মাসের মধ্যে একজন বেসামরিক প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে একমত হয়েছি। আগামী বছরের জুন মাসের শেষ নাগাদ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে।’
তানতাবি আরও বলেন, সুপ্রিম কাউন্সিল প্রধানমন্ত্রী এসাম শরাফের মন্ত্রিসভার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, সুপ্রিম কাউন্সিলের ক্ষমতা ধরে রাখার কোনো ইচ্ছা নেই। জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।
তানতাবি আরও জানান, তাঁর কাউন্সিল পূর্বনির্ধারিত তারিখ ২৮ নভেম্বরেই পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
সামরিক কাউন্সিলের অপসারণ এবং বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে কায়রোর তাহরির স্কয়ারে কয়েক দিন ধরে বড় ধরনের বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে বিরোধীরা। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছে। এই সংঘর্ষের মধ্যে গত সোমবার পদত্যাগ করেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
গতকাল বিক্ষোভ দেখাতে আবার কয়েক হাজার মানুষ তাহরির স্কয়ারে জড়ো হয়। এ সময় তারা মন্ত্রিসভার সদস্যদের পদত্যাগকে স্বাগত জানায়। এ ছাড়া সামরিক শাসকদের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করে তারা।
কায়রো ছাড়াও গতকাল মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া, ইসমাইলিয়া ও সুয়েজ শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। ইসমাইলিয়া শহরের বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মিসরে গণ-আন্দোলনের মুখে প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পতনের পর সামরিক সুপ্রিম কাউন্সিল ক্ষমতা গ্রহণ করে।

No comments

Powered by Blogger.