আখাউড়ায় গরুর হাট-পরীক্ষার্থীদের স্বার্থ উপেক্ষিত

মকালে বুধবার আখাউড়ার শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা কেন্দ্রের একটি চিত্র প্রকাশিত হয়েছে। কয়েক ছাত্রী একটি কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছে। কক্ষের পাশেই রয়েছে কলেজের খেলার মাঠ, যেখানে বসেছে কোরবানির গরুর হাট। সমকালে চিত্রের সঙ্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'কলেজের মাঠে তিলধারণের ঠাঁই নেই গরু আর মানুষের কারণে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ভয়ভীতি আর শঙ্কা নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিচ্ছে।


একটি ষাঁড় হঠাৎ একটি পরীক্ষা কক্ষে ঢুকে পড়লে পরীক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।' এ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ৪৪৮ জন। পরীক্ষা শেষে তাদের অভিন্ন অভিমত ছিল, পরিবেশ খারাপ থাকায় পরীক্ষা দিতে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাষ্য : হাটের কারণে পরীক্ষার কোনো ক্ষতি হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভাষ্যও অনুরূপ :'পাশের গরুর হাটে বায়না ছিল না বলে কয়েক বিক্রেতা গরু নিয়ে কলেজ মাঠে চলে আসেন। এতে পরীক্ষায় সমস্যা হয়নি।' শিক্ষার্থী এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অবস্থান ভিন্নধর্মী। এ থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট :জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের দায়িত্বে যারা রয়েছেন তাদের কারও কাছেই পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখার বিষয়টি অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই। অষ্টম শ্রেণীর এ সমাপনী পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সনদপত্র দেওয়া হবে। এ কারণে এ পরীক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। কেন পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের সঙ্গে লাগোয়া মাঠে গরুর হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া হলো এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত তা অনুসন্ধান করার মতো নিশ্চয়ই যুক্তি থাকতে পারে। তবে উপজেলা প্রশাসনকে দিয়ে এ কাজ করিয়ে সুফল মিলবে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কি এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে পারে না? এ ধরনের কাজ শুধু অনৈতিক নয়, আইনেরও পরিপন্থী। পাবলিক পরীক্ষা কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করা কোনোভাবেই বরদাশত করা উচিত নয়। পরীক্ষা কেন্দ্রের সঙ্গে গরুর হাট বসানোর কারণে যাদের পরীক্ষা খারাপ হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু দোষীদের শাস্তি প্রদান ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা হতে পারে।
 

No comments

Powered by Blogger.