চিহ্নিত হলো জাহাজভাঙা ও নির্মাণ শিল্পাঞ্চল by ফারজানা লাবনী

ট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সাতটি মৌজাকে জাহাজভাঙা ও নির্মাণ শিল্পাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বলে শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।এ বিষয়ে প্রকাশিত গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, সীতাকণ্ড উপজেলার উত্তর সালিমপুর, ভাটিয়ারি, জাহানাবাদ, শীতলপুরসহ দক্ষিণ, মধ্য ও উত্তর সোনাইছড়ি মৌজাকে জাহাজভাঙা ও নির্মাণ শিল্প এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় জাহাজভাঙা বা জাহাজ নির্মাণের ইয়ার্ড স্থাপন করতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি লাগবে না। তবে এলাকার বাইরে কোনো ইয়ার্ড নির্মাণ করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে ইয়ার্ডের মালিক বা সংশ্লিষ্টদের আইন ভঙ্গ করার দায়ে জেল-জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে।


সরকারি গেজেটে আরো বলা হয়েছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া তুলাতলী, দক্ষিণ সলিমপুর, চর বাঁশবাড়িয়া, গোয়ালিনি অথবা সমুদ্র ও নদীর উপকূলবর্তী কোনো এলাকায় জাহাজভাঙা বা নির্মাণসংক্রান্ত ব্যবসা করা যাবে না। এ ক্ষেত্রেও শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
জাহাজভাঙা বিধিমালা প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ বি এম খোরশেদ আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, জোন হিসেবে ঘোষণা করায় জাহাজভাঙা ও নির্মাণ ব্যবসা_দুটি আইনি কাঠামোয় এসেছে। এতে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে পর্যবেক্ষণ করতেও সুবিধা হবে।
তিনি বলেন, 'জোনের মধ্যে অবশ্যই পরিবেশের বিধিমালা মেনে ব্যবসা করতে হবে। এর বাইরে সীতাকুণ্ডের অন্য কোনো এলাকায় জাহাজ ভাঙার ইয়ার্ড নির্মাণ বা জাহাজ নির্মাণসংক্রান্ত ব্যবসা করা যাবে না।'
খোরশেদ আলম বলেন, মীরসরাই ও বরগুনার পাথরঘাটা এলাকায় জাহাজভাঙা ও নির্মাণ ব্যবসার সম্ভাবনা নিয়ে নানা যাচাই-বাছাই চলছে। পরিবেশের বিষয়, এসব এলাকার নিকটবর্তী সাগর ও নদীর উপকূলের গভীরতা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, অবকাঠামোসহ এসব ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজও চলছে।
শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ভবিষ্যতে জাহাজভাঙা শিল্পই হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শিল্প খাত। একই সঙ্গে জাহাজ নির্মাণও একটি সম্ভাবনাময় শিল্প। এ দুটি ব্যবসাকে পরিবেশসম্মতভাবে সম্প্রসারণের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বিধিমালা তৈরি হলে ব্যবসা দুটি আরো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে বলে মন্ত্রী মনে করেন।
এলাকা বরাদ্দের ব্যাপারে মতামত জানতে চাইলে বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের কারিগরি উপদেষ্টা ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন বলেন, এটি জাহাজভাঙা ব্যবসার জন্য একটি সুখবর। জোনের মধ্যে একই সঙ্গে জাহাজভাঙা ও নির্মাণকাজ করা যাবে। ফলে জাহাজভাঙার পর যে কাঁচামাল পাওয়া যাবে, তা জাহাজ নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা যাবে। এতে বড় অঙ্কের অর্থ সাশ্রয় হবে। জাহাজভাঙা ব্যবসা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ার পর নতুন কোনো ইয়ার্ড গড়ে উঠেনি জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে এসব এলাকায় ১২৬টি ইয়ার্ড রয়েছে। জোন হিসেবে ঘোষণা করায় আরো নতুন ইয়ার্ড গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি হলো।

No comments

Powered by Blogger.