ইনিংস ঘোষণায় অবাক হননি সামি

বাংলাদেশের স্পিন বিষে নীল হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আরেকবার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইলিয়াস সানির নির্ভীক আগমনী ঘোষণা এবং সাকিব আল হাসানের নির্ভরতার প্রতিদান_দুয়ে মিলে রীতিমতো পা কাঁপাকাঁপি অবস্থা ক্যারিবীয়দের। তার পরও যে ড্র নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্ট শেষ করতে পারছে তারা, সেটিই বেশি। প্রকৃতির আশীর্বাদ এবং আদিযুগের ড্রেনেজ সিস্টেমের সৌজন্যে এ যাত্রা রক্ষা পায় ড্যারেন সামির দল।কিন্তু ঢাকায়? সেখানে বৃষ্টি হলেও তো আধুনিক ড্রেনেজ সিস্টেমের কারণে তাদের বাঁচানোর কেউ নেই। বাঁচতে হবে নিজেদের দক্ষতায় আর সামর্থ্যে। সেই হোমওয়ার্ক প্রথম টেস্টের শেষ থেকেই শুরু করে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।


অধিনায়ক সামির কথায় তারই অনুরণন, 'সাকিব উইকেট টু উইকেট বোলিং করে। বেশির ভাগ সময় এলবিডাবি্লউ করতে চায় ও। সানিও তাই করে। তবে ও আরেকটু ধীরগতিতে করে বলে টার্ন পায় বেশি। দুজনের কম্বিনেশন খুব ভালো। আমাদের কাছে ওদের ভিডিও ফুটেজ আছে। সেটি দেখে কী কী ভুল করলাম, তা শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করব।'
ক্যারিবীয় অধিনায়ক আগে থেকেই জানেন, স্পিনই হবে প্রতিপক্ষের মূল অস্ত্র। তবে ব্যাটসম্যানদের ওপর ভরসা আছে তাঁর। বিশেষত প্রথম দুটো ওয়ানডে থেকে অনুপ্রেরণার মন্ত্র খুঁজছেন সামি, '২০০৯ সালে বাংলাদেশ খুব ভালো খেলেছিল। এবারও তাদের স্পিনারদের শুরুটা খারাপ হয়নি। তবে আমাদের যে মানের ক্রিকেটার আছে, তাতে ওদের মোকাবেলা করা সম্ভব। প্রথম দুটো ওয়ানডেতে আমরা সেটি দেখিয়েছি। টেস্ট ক্রিকেটে আপনার হাতে প্রচুর সময় থাকে। উইকেটকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলে অনুশীলনের প্রতিফলন ম্যাচে দেখানো তাই খুব জরুরি।' টেস্টের সামগ্রিক ময়নাতদন্ত থেকে যদি শেষ দিনের বিশ্লেষণে আসেন, তাহলে মুশফিকুর রহিমের ইনিংস ঘোষণায় অবাক হচ্ছেন না তিনি। বরং বলছেন, 'এমন ডিক্লেয়ারেশন আমাদের প্রত্যাশিতই ছিল। বাংলাদেশ অধিনায়কের জায়গায় থাকলে আমিও একই কাজ করতাম। হয়তো আরেকটু আগেই করতাম, যেহেতু স্পিনাররা প্রথম ইনিংসে অনেক উইকেট পেয়েছিল।'
ভাঙাচোরা এই ক্যারিবীয় দল নিয়ে যেমন সমালোচনা বিস্তর, তেমনি অধিনায়ক সামির সামর্থ্য নিয়েও। কাল ৪৩ বলে ৫৮ রান করে নিজের ওপর জেঁকে বসা চাপ খানিকটা কমিয়েছেন তিনি। তবে সংবাদ সম্মেলনে এসে এটিকে সমালোচনার জবাব বলে মানলেন না, 'সমালোচনার জবাব দেওয়ার জন্য আমি খেলি না। সব সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের ভালোর জন্য চেষ্টা করি। অনেক দিন পর রান করতে পেরে ভালো লাগল। তবে আবারও বলি, এটি সমালোচনার জবাব দেওয়ার ব্যাপার না, দলের হয়ে পারফরম করাই মূল কথা।' ঢাকায় দল হিসেবে পারফরম করতে পারবেন বলেও সামির আশা, 'সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম সফরটা আমাদের জন্য ভালো হলো না। আশা করি, ঢাকায় এর চেয়ে অনেক ভালো খেলতে পারব। আর সেখানকার উইকেটও তো এখান থেকে ভিন্ন।'
ভিন্ন হলে কী, সেখানেও মুশফিকুরের তুরুপের তাস হবেন দুই স্পিনার সাকিব ও ইলিয়াস। ভিডিও ফুটেজে তাঁদের বোলিং বিশ্লেষণ করেই হয়তো দ্বিতীয় টেস্টের আগের দিনগুলো কাটবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

No comments

Powered by Blogger.