নাসিক নির্বাচন- ২০১১ : মুক্ত মঞ্চে ৬ মেয়র প্রার্থীর বিতর্ক : বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসীদের মহড়া

নারায়ণগঞ্জে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা এখন প্রকাশ্যে। তারা প্রচার-প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে এক মেয়রপ্রার্থীর পক্ষে। পাশাপাশি মহড়া দিচ্ছে বন্দর নগরীতে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটের ঠিক কয়েকদিন আগে সন্ত্রাসীদের এই অবাধ বিচরণ এলাকায় সৃষ্টি করেছে চাঞ্চল্য। আতঙ্কে ভোটাররা। তাদের আশঙ্কা— পছন্দমত প্রার্থীকে তারা ভোট দিতে পারবেন কি-না।ওদিকে গতরাতে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মুক্তমঞ্চে আয়োজিত সরাসরি প্রাণবন্ত বিতর্কে অংশ নিয়ে ৬ মেয়রপ্রার্থীই তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেন। মেয়রপ্রার্থী সেলিনা হায়াত্ আইভী বলেন, আমি জবাবদিহির পক্ষে। আমার ইশতেহারে অবাস্তব কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।


তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমি ম্যান অব কমিটমেন্ট। আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এলাকার উন্নয়নে। শামীম ওসমান দাবি করেন, এমপি থাকা অবস্থায় তিনি সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছেন।
অনেকের প্রশ্ন—আসলে কী হতে যাচ্ছে ৩০ অক্টোবর। নাসিক নির্বাচনে হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত্ আইভী ও একেএম শামীম ওসমানের সাম্প্রতিক উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে সৃষ্টি হয়েছে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি। শহরের বিভিন্ন অংশে মহড়া দিতে শুরু করেছে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীর একাধিক বাহিনী। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের কারণে তাদের সমর্থকদের মধ্যে এ উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। নগরবাসীর আশঙ্কা এ বাকযুদ্ধ যে কোনো মুহূর্তে সংঘাতে রূপ নিতে পারে। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী শামীম ওসমানের ক্যাডার দিয়ে মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত্ আইভীকে হুমকি, বাকবিতণ্ডা ও তেড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তিন প্রার্থীরই অভিযোগ, তাদের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন খুলে ফেলছেন প্রতিদ্বন্দ্বিরা। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ শামীম ওসমানকে সমর্থন দেয়ার পরও আইভী জনপ্রিয়তাধন্য হয়ে নির্বাচনের মাঠে থাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ এখন দু’ভাগ। উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যেও রয়েছে উত্তেজনা। তারাও বিভিন্ন মতবিনিময় সভা, উঠান বৈঠকে একে অন্যের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। নির্বাচন শেষ হলে তারা একে অন্যকে দেখে নেবেন বলেও ক্রমাগত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত আর প্রশাসনের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের আবারও প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার কারণে অস্ত্রসহ একাধিবার গ্রেফতার সন্ত্রাসীদের শহরে বিচরণে এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তারা শামীম ওসমানের পক্ষে এখন প্রকাশ্যে লিফলেট বিতরণ করছে। হঠাত্ করে এসব ব্যক্তির অবাধ বিচরণ সাধারণ ভোটারদের শঙ্কিত করে তুলেছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের লাইভ শোতে নিজ নেতার আশপাশে এবং প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা ও মতবিনিময় সভায় এসব সন্ত্রাসী সদর্পে অবস্থান করছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার শেখ নাজমুল আলম জানান, নির্বাচন উপলক্ষে এখন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। কোথাও কোনো সহিংস ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন তত্পর রয়েছে। অনেক সন্ত্রাসী গ্রেফতারের পর তারা আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। তারা নতুন করে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করলে পুলিশ প্রশাসন অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
নাসিক নির্বাচন সামনে রেখে সরাসরি বিতর্কে ৬ প্রার্থীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আশ্বাস : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৬ মেয়রপ্রার্থীই তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। গতকাল সিটি করপোরেশনের মেয়রপ্রার্থীদের নিয়ে সরাসরি বিতর্ক অনুষ্ঠানে তারা এ আশ্বাস দেন। নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মুক্তমঞ্চে রাত সাড়ে আটটায় শুরু হওয়া প্রাণবন্ত এই বিতর্ক সরাসরি সম্প্রচার করা হয় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমেও দেড় ঘণ্টার বিতর্কটি সরাসরি (ওয়েবকাস্ট) দেখানো হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন আয়োজনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বলেন, প্রার্থীরা কেন নেতৃত্ব নিতে চান, এলাকাবাসীর জন্য তাদের পরিকল্পনা কী, ভোটারদের চাওয়া-পাওয়া কী—সরাসরি দুই পক্ষের যোগসূত্র স্থাপনের জন্যই এ অনুষ্ঠান। শামীম ওসমান দাবি করেন, তিনি সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছেন। আমি ব্রিজ, টেলিফোন, বিদ্যুত্, গ্যাস সরবরাহে কাজ করেছি। আগামীতেও আমি মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।
পৌর মেয়র থাকাকালে এলাকাবাসীর জন্য তার করা বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে সেলিনা হায়াত্ আইভী বলেন, জবাবদিহিতা পছন্দ করি আমি। ২০০৩ সালের নির্বাচনী ইশতেহার পূরণ করেছি। যেটা বাস্তবভিত্তিক, তা-ই প্রতিশ্রুতি দেয়া উচিত। আমার ইশতেহারে অবাস্তব কোনো কিছু উল্লেখ করিনি।
তৈমূর বলেন, আমি ম্যান অব কমিটমেন্ট। আমি নির্বাচিত হলে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এলাকার উন্নয়ন। আমরাই শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলাম; কিন্তু সময়ের অভাবে বিএনপি সরকার তা শেষ করে যেতে পারেনি। ইনশাল্লাহ এই সেতু বাস্তবায়ন করা হবে।
মঞ্চে থাকা অন্য তিন মেয়রপ্রার্থী আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সী, আতিকুল ইসলাম জীবন ও শরীফ মোহাম্মদও একই আশ্বাস দেন। সরাসরি জনগণের মুখোমুখি হয়ে নারায়ণগঞ্জের ছয় মেয়রপ্রার্থীই বলেন, জনসেবা করতেই জনপ্রতিনিধি হতে চান তারা। সবাই প্রত্যাশা করছেন, জনগণ তাদের সে সুযোগ দেবে। নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এ বিতর্ক অনুষ্ঠানে সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী। অনুষ্ঠানটি রাত ৮টা ৪০ মিনিট থেকে ১০টা পর্যন্ত চলে।
পুলিশের বিরুদ্ধে আইভীর অভিযোগ : ডা. সেলিনা হায়াত্ আইভী অভিযোগ করেন, সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর থানায় কারচুপির আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, বন্দর থানার ওসি আমার ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে ভয় দেখাচ্ছেন। আমাকে নোংরা ভাষায় গালাগাল করা হচ্ছে। আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। আইভী আরও বলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শামীম ওসমানের বড় ভাই সংসদ সদস্য নাসিম ওসমান বলে বেড়াচ্ছেন, সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে রেজাল্ট বের হয়ে যাবে আর আমি পাব মাইনাস পাঁচ হাজার ভোট। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তিনি ভোট কেন্দ্রের ভেতরও সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল দেয়ার দাবি জানান।
মিডিয়ার বিরুদ্ধে শামীম ওসমানের অভিযোগ : সরকারি দল সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী শামীম ওসমান বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দরে কখনোই ভোটচুরি কিংবা ছিনতাই হয়নি। সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দরবাসীদের নামে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য কিছু বায়বীয় গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, একটি ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও একটি প্রিন্ট মিডিয়া আমাকে খাটো করতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের মানুষ সন্ত্রাসী নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, একটি এসএমএস পাঠানো হয়েছে ‘শামীম ঠেকাও ওসমান ঠেকাও’। আমার স্ত্রী ও সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে। এ সময় তিনি আশঙ্কা করে বলেন, দুটি মিডিয়াকে কন্ট্রাক্ট করা হয়েছে আমাকে নির্বাচনের দিন বিপদে ফেলার জন্য। কিছু লোককে আমার লোক সাজিয়ে তারা অপপ্রচার করতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেন।
আইভীর পক্ষে সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ডা. সেলিনা হায়াত্ আইভীর পক্ষে কাজ করার জন্য ‘সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে। জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এবং সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আকরামকে আহ্বায়ক ও রফিউর রাব্বিকে সদস্য-সচিব করে সোমবার ১০১ সদস্যবিশিষ্ট এ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
সংগঠনটিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী, শিক্ষাবিদ, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব, মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক ফুটবলার, ব্যবসায়ী নেতা, এনজিও কর্মী, নাট্য সংগঠক ও বই প্রকাশকও রয়েছেন।
হুইপ মির্জা আজম শামীমের পক্ষে প্রচারণায় : আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ : নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় যুবলীগের একটি মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ এবং যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। সেখানে তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমানকে জয়ী করতে যুবলীগের নেতাকর্মীদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে যুবলীগের যারা ডা. সেলিনা হায়াত্ আইভীর পক্ষে কাজ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান। ওই মতবিনিময় সভায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। গতকাল সকালে ফতুল্লার সাহারা সিটি কমিউনিটি সেন্টারে মতবিনিময় সভাটি হয়। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কেউ যদি এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ করে বা আগামীকালের পত্রিকায় (আজ) যদি এ ধরনের কোনো সংবাদ ছাপা হয়, তাহলে তারা ব্যবস্থা নেবেন। নির্বাচন আচরণবিধির ১৪(ক) ধারায় উল্লেখ রয়েছে, সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। সে অনুযায়ী জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ, হুইপ এবং সরকারের কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার কেউ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু হুইপ হওয়া সত্ত্বেও মির্জা আজম এমপি গতকালের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হয়ে মেয়রপ্রার্থী শামীম ওসমানের পক্ষে কাজ করতে যুবলীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকালের ওই মতবিনিময় সভায় কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা হারুন অর রশিদ, শহীদ সেরনিয়াবাত, শুভ্র পাল, আমজাদ হোসেন, শাহজাহান ভূঁইয়া মাখন, আবদুস সাত্তার মাহমুদ, আতাউর রহমান আতা, দেলোয়ার হোসেন, মামুনুর রশিদ, সজিবুর রহমান চৌধুরী, ফারুক হোসেন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ বাদল, ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত্ হোসেন সাজনু, জাকিরুল আলম হেলাল প্রমুখ। তবে এ ব্যাপারে মির্জা আজম এমপির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী শামীম ওসমানকে জয়ী করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
গতকাল জাতীয় দলের সাবেক একঝাঁক ফুটবল ও ক্রিকেট খেলোয়াড় শামীম ওসমানের পক্ষে শহরে প্রচারণা চালান। তাদের মধ্যে ছিলেন দেওয়ান শফিউল আলম আরেফিন টুটুল, আবদুুল গাফ্ফার, বাদল রায়, সত্যজিত্ দাস রুপু, আরিফ খান জয়, গোলাম গাউস, শহীদ হোসেন স্বপন, নজরুল ইসলাম, রেজাউল করিম লিটন, ক্রিকেটার শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুত্, জাহাঙ্গীর আলম, আরিফ টিপু, শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, আবদুুর রহিম ডালিম প্রমুখ।
ডা. সেলিনা হায়াত্ আইভীর গণসংযোগ : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত্ আইভী গতকাল ৫নং ওয়ার্ড ও ১১নং ওয়ার্ডের এম সার্কেস, হাজীগঞ্জ এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সহ-সভাপতি হায়দার আলী পুতুল, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল কাদির, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক নিজামউদ্দিন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত প্রমুখ।
প্রচারণার সময় আইভী বিভিন্ন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তার পক্ষে ভোট চান। এ সময় আইভী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি ব্যালট দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান। এ নির্বাচনই হচ্ছে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, ভূমি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের গণরায় দেয়ার শেষ সুযোগ। আপনারাই নির্ধারণ করুন নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাস থাকবে নাকি ভালো মানুষের রাজনৈতিক শক্ত অবস্থান থাকবে। ভুল করলে নারায়ণগঞ্জবাসীকেই এর খেসারত দিতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের প্রচারণা শুরু : মেয়রপ্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত্ আইভীর পক্ষে প্রচারণা শুরু করেছে তার নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ। গতকাল বিকালে সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ শহরের ২নং রেলগেট থেকে আইভীর পক্ষে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করে। তারা শহরের বিভিন্ন সড়কের পাশে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে প্রচারণা চালান। সেলিনা হায়াত্ আইভীর পক্ষে কাজ করার জন্য সোমবার রাতে এ কমিটি গঠন করা হয়। ১০১ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটির আহ্বায়ক হলেন জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনের সাবেক এমপি এসএম আকরামকে আহ্বায়ক। সদস্য-সচিব করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সহ-সভাপতি রফিউর রাব্বিকে।
সত্ ও যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে সুজনের মানববন্ধন : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সত্, যোগ্য এবং জনকল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ প্রার্থীকে ভোট দিতে মানববন্ধন করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। গতকাল সকালে শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন থেকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনেরও দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সেখানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুজনের নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম চৌধুরী বাবুল, সুজনের কেন্দ্রীয় নেতা দীলিপ সরকার, মুর্শিকুল ইসলাম, সানজিদা হক বিপাশা, অ্যাডভোকেট শামীম আহমেদ, এমএ জলিল, আশরাফুল হক, মরিয়ম আক্তার কল্পনা প্রমুখ।
মানববন্ধন থেকে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সত্ ও যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া প্রভাবমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের প্রতি আহ্বান করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.