আগামীকাল খালেদা জিয়ার জনসভা সফল করতে প্রচারণায় মুখর ময়মনসিংহ

গামীকাল ২৭ অক্টোবর ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিতব্য বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জনসভা সামনে রেখে স্থানীয় চারদলীয় জোটের নেতাকর্মীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনা। পুরো ময়মনসিংহে এখন সাজ সাজ রব। জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি-সংবলিত বিশাল আকারের ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ নির্মাণের হিড়িকও পড়ে গেছে। স্থানীয় ডেকোরেটর ও আর্টের দোকানগুলো চাহিদা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। অপরূপ সাজে সাজছে ময়মনসিংহসহ আশপাশের এলাকা।


বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠে অনুষ্ঠিতব্য জনসভা সফল করতে বৃহত্তর ময়মনসিংহের আশপাশের ৭টি জেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো প্রায় প্রতিদিনই কর্মিসভা করছে। সমাবেশে প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চান তারা। এজন্য ১০ লাখ লিফলেট ও ১ লাখ পোস্টার বিতরণ এবং দুই শতাধিক তোরণ নির্মাণ করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার বক্তব্য শোনার সুবিধার্থে জনসভাস্থলের আশপাশের এলাকায় ১৪৫টি মাইক, ৬টি প্রজেক্টর ও বিশাল আকারের কয়েকটি স্ক্রিনের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও একটি নতুন ওয়েবসাইটে খালেদা জিয়ার ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করারও কথা রয়েছে। এজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এদিকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা গতকালও ময়মনসিংহে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জনসভার সমন্বয়কারী মির্জা আব্বাস, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-দফতর সম্পাদক শামীমুল ইসলাম শামীম, সহ-প্রচার সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু গতকাল সারাদিন ময়মনসিংহে সভা, সমাবেশ ও জনসংযোগ করেছেন। বিএনপি নেতারা বলছেন, ময়মনসিংহে বিএনপির জনসভাকে ঘিরে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ময়মনসিংহে খালেদা জিয়ার প্রধান সমন্বয়কারী
মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের লোকজন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচার মাইক ও গাড়ি ভাংচুর, ঈশ্বরগঞ্জে মিছিলে হামলা ও ভাংচুর, গফরগাঁওয়ে হুমকি-ধমকি, নেত্রকোনায় তোরণে অগ্নিসংযোগ করেছে। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে জনসভায় আসার বাস না দেয়ার জন্য মালিকদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। জনসভার দিন গফরগাঁও থেকে ট্রেনে লোকজন যাতে না আসতে পারে সেজন্য তারা ষড়যন্ত্র করছে। সরকারি দল বাধা সৃষ্টি করলে যে কোনো পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠে ২৭ অক্টোবর খালেদা জিয়ার সমাবেশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা দক্ষিণ সভাপতি একেএম মোশাররফ হোসেন, সহ-দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, সহ-প্রচার সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, জেলা দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়াহাব আকন্দ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফখরুদ্দিন বাচ্চু, জেলা উত্তর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন তালুকদার, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিশাল জনসভা বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান ও ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন ময়মনসিংহের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের প্রতি ২৭ অক্টোবর সার্কিট হাউস ময়দানে খালেদা জিয়ার জনসভায় যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ময়মনসিংহের এ জনসভা অতীতের সব জনসভার রেকর্ড ভঙ্গ করবে। ময়মনসিংহ হবে মিছিল আর মিটিংয়ের নগরী। তিনি গতকাল ময়মনসিংহ শহরের রামকৃষ্ণ মিশন রোডে এক সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন।
এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক এ.কে.এম. শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব আলম মাহাবুব প্রমুখ।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ২৭ অক্টোবর ময়মনসিংহে জনতার ঢল নামবে। এটি কোনোভাবেই সরকার রুখতে পারবে না। বাগমারায় এক সমাবেশে তিনি একথা বলেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপি সভাপতি অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব আলম মাহাবুব প্রমুখ।
এছাড়া তারাকান্দায় বিএনপি’র সমাবেশে শামীমুর রহমান শামীম বক্তব্য রাখেন। প্রচার মিছিল করেছেন উত্তর জেলা বিএনপি নেতারা। গতকাল প্রচার মিছিলটি ময়মনসিংহ শহরের কৃঞ্চচূড়া চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নতুনবাজার দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি শাহ শহীদ সারোয়ার, নির্বাহী কমিটির সদস্য গৌরীপুর বিএনপির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এম. ইকবাল হোসাইন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি জেলা কৃষক দলের সভাপতি আবুল বাসার আকন্দ, বিএনপি নেতা নূরুল হক, আওরঙ্গজেব বেলাল, আবদুস সোবাহান আজাদ প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.