ওয়ান ইলেভেনের হোতা লে. জে. মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী বহাল তবিয়তে

য়ান ইলেভেনের অন্যতম হোতা লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এখনও বহাল তবিয়তে। তার চাকরির বয়স শেষ হওয়ার পর দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত এই সেনা কর্মকর্তা বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। গত ২৯ জুন তার বয়স ৫৭ বছর পূর্ণ হয়। তখন তার স্বাভাবিক নিয়মে অবসরে যাওয়ার কথা। কিন্তু গত ১২ জুন তার চাকরির মেয়াদ তিন মাস বাড়ানো হয়। চাকরির ওই মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে গত ১২ জুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।


প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বাংলাদেশ আর্মি রেগুলেশনস্ (রুলস্) ২৫৫ এবং আর্মি রেগুলেশনস্ ইন্সট্রাকশনস্ ১৬৭ অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিএ-১১৯৫ লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এনডিসি. পিএসসির চাকরির মেয়াদ ৩০ জুন ২০১১ তারিখ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখ পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো এবং একইসঙ্গে কর্মকর্তার স্বাভাবিক অবসর সংক্রান্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হলো। এরপর গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর চাকরির মেয়াদ একই নিয়মে আরও তিন মাস বাড়ানো হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এখন আগামী ডিসেম্বরে লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর অবসরে যাওয়ার কথা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, মাসুদ উদ্দিনের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে আমাদের কিছু জানা নেই। যা কিছু হচ্ছে তা সেনা সদর ও সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকেই হচ্ছে।
উল্লেখ্য, যে ক’জন সেনা কর্মকর্তা এক-এগারোর ঘটনা ঘটিয়েছিলেন, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী তাদের মধ্যে অন্যতম। এক-এগারোর ঘটনার সময় তিনি নবম ডিভিশনের জিওসি ছিলেন। তিনি সেনা ও সাঁজোয়া যান নিয়ে বঙ্গভবন ঘেরাও দিয়েছিলেন বলে খবর প্রচারিত হয়। পরে সেনাসমর্থিত ফখরুদ্দীন সরকারের আমলে তথাকথিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযান এবং দুর্নীতির মামলাগুলো তদারকির জন্য যে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল, তার সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন এই বিতর্কিত সেনা কর্মকর্তা। ২০০৮ সালের মাঝামাঝিতে জেনারেল মইন উ আহমেদের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ২ জুন ২০০৮ তারিখে লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার পদ থেকে ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট পদে বদলি করা হয়। এর মাত্র ৬ দিন পর ৮ জুন ২০০৮ তারিখে তার চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। পরে তাকে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হলেও বাস্তবে ঘটেছে তার উল্টো। বর্তমান সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং দু’বার তার চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে পুরস্কৃত করেছে। আগামী ২৮-২৯ অক্টোবর কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর দেখা হবে। এ সময় আরও কোনো বড় পুরস্কারের ঘোষণা দেয়া হয় কিনা তা নিয়েও এখন চলছে আলোচনা। এই মাসুদ উদ্দিনদের সহযোগিতা নিয়েই নির্বাচনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে।

No comments

Powered by Blogger.