এনটিসি যোদ্ধাদের বর্বরতা তদন্ত নিয়ে সংশয়

সার্ত শহরের পরিত্যক্ত হোটেল মাহারি। বাগানের শুকনো ঘাসে এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে। এ হোটেলের বাগানেই পাওয়া গেছে ৫৩টি লাশ। তাদের কারও কারও হাত-পা বাঁধা অবস্থায়ও ছিল। পচনধরা লাশগুলো দেখে মনে হচ্ছে নির্যাতনের পর তাদের হত্যা করা হয়েছে। মাহারি হোটেলের গণহত্যার এমনই বর্ণনা দিল নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। গত রবিবার এসব লাশ উদ্ধার করা হয়।সম্প্রতি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সদস্যরা মাহারি হোটেল ঘুরে দেখেছেন। তাঁদের মতে, নিহতরা গাদ্দাফির অনুসারী।


তাঁদের মধ্যে গাদ্দাফি আমলের চার কর্মকর্তার লাশও রয়েছে। তবে ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিলের (এনটিসি) যোদ্ধারা দাবি করেছে, গাদ্দাফি-অনুগত যোদ্ধারা অস্থায়ী কারাগার হিসেবে ব্যবহার করেছিল হোটেলটিকে। যুদ্ধের শেষের দিকে তারাই ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, গত ১৪ থেকে ১৯ অক্টোবরের মধ্যে এসব লোককে হত্যা করা হয়েছে। সার্তের বাসিন্দারা এসব লাশের দাফন করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দাবি করেছে তারা। তবে এনটিসি সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।
লিবিয়ার গত আট মাসের যুদ্ধে এটা সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যার নিদর্শন। সার্তের এ ঘটনায় সেখানে যুদ্ধাপরাধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এনটিসি গত রবিবার লিবিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে। এর আগেই সার্ত ছাড়া লিবিয়ার বাদবাকি অঞ্চল তাদের দখলে নেয়। তবে এনটিসি সরকার তাদের বাহিনীর মধ্যে কোনো শৃঙ্খলা আনতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। শৃঙ্খলা আনতে না পারায় সার্তে এভাবে গণহত্যা হয়েছে এবং গাদ্দাফিকে জীবিত আটকের পর তাঁকে হত্যা করা হয়।
বিশ্ব সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনের চাপে এনটিসি চেয়ারম্যান মুস্তফা আবদেল জলিল গত সোমবার গাদ্দাফি হত্যার ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন। তবে এ কমিশন কতটুকু কী করতে পারবে, তা নিয়ে সন্দিহান আন্তর্জাতিক মহল।
মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, এনটিসি যদি এ অপরাধ তদন্তে ব্যর্থ হয় এবং নির্যাতন বন্ধ করতে না পারে, তবে তা থেকে এটাই বোঝা যাবে যে গাদ্দাফি-বিরোধীরা শাস্তির ভয় পায় না। নিজেদের আইনের ঊধর্ে্ব ভেবেই এসব অপরাধমূলক কাজ করছে তারা। সূত্র : নিউ ইয়র্ক টাইমস, মেইল অনলাইন।

No comments

Powered by Blogger.