চট্টগ্রামেই মুখ রক্ষা by ইমাম হোসাইন সোহেল

র্ণফুলী নদীতে তুফান ওঠার শঙ্কা ছিল। আগের দিন দুপুরে এক পশলা 'বৃষ্টি' সে শঙ্কাকে বাড়িয়ে দিয়েছিল কয়েকগুণ। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া লঘুচাপ চট্টলায় এসে যদি ঝাপটা মারে তাহলে সব আশা-আকাঙ্ক্ষা শেষ। কারণ এখানেই যে রয়েছে মান রক্ষার ভেন্যু! হোয়াইটওয়াশ থেকে বাঁচতে এই ভেন্যুই শেষ ভরসা। বিশ্বকাপে চট্টগ্রামই বাঁচিয়েছিল বাংলাদেশের সম্মান। কিন্তু কে জানত একদিন পর কর্ণফুলীর সাম্পানে চড়ে নতুন এক ইতিহাস এসে উপস্থিত হবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে! ঢাকায় বিশ্বকাপে যাদের কাছে ৫৮ রানের লজ্জায় ডুবেছিল বাংলাদেশ, তাদেরই কাল মুশফিকুর রহিমরা বঙ্গোপসাগরের পাড়ে ডুবিয়ে দিল ৬১ রানের লজ্জায়।


দুর্ভাগ্য শেষ উইকেটটি পড়ার আগে যদি সেই ওয়াইড আর তিন রান না হতো তাহলে ৫৮ রানের আগেই অলআউট হতো ক্রিকেটে এক সময়ের প্রবল-প্রতাপশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবুও এই চট্টগ্রামই ৫৮ রানের লজ্জা ভুলতে দু'হাত ভরে উপহার দিল বাংলাদেশ ক্রিকেটকে। এ চট্টগ্রামেই না ইতিমধ্যে লেখা হয়ে গেল বাংলাদেশ ক্রিকেটের কত ইতিহাস!
বিশ্বকাপের কথাই ধরুন। উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৩৭৫ রানের পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ার পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২৭ রানের কষ্টার্জিত জয়। এরপরের ম্যাচেই ক্যারিবীয়দের হাতে ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেদের সবচেয়ে বড় লজ্জা '৫৮' রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। মান রক্ষার ম্যাচে এর পরই চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মুখোমুখি আহত এক সিংহের। সে সিংহের নাম ইংল্যান্ড। ভারতের সঙ্গে ড্র আর আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে এসেছে তারা চট্টগ্রামে। এর আগে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে নাটকীয়ভাবে ৬ রানে হারিয়েছে তারা। অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের দলকে সামনে পেয়ে বাংলাদেশও যেন আহত বাঘের মতো গর্জে উঠেছিল। লাকি গ্রাউন্ড জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ক্রিকেট জনকদের ২ উইকেটে হারিয়ে নবজন্ম ঘটল বাংলাদেশের। তিন দিন পর নেদারল্যান্ডসকে পেয়ে ৬ উইকেটে জয় নিয়ে ঢাকায় ফিরেছিল সাকিব আল হাসানের দল। ২০০৯ সালের ৩ নভেম্বর জিম্বাবুয়েকে ৪৪ রানের লজ্জায় ডুবিয়েছে বাংলাদেশ এ ভেন্যুতেই। সাকিব, এনামুল জুনিয়র, রাজ্জাক আর নাজমুলের বোলিং তোপে ২৪.৫ ওভারে ৪৪ রানেই অলআউট জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ জিতেছিল ৬ উইকেটে। এ মাঠের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর হলো গতকাল। ২২ ওভারে ৬১ রানে অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিকেটে নিজেদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় ডুবল ক্যারিবীয়রা। এ ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত গতকালের ম্যাচটিসহ ১৪ ম্যাচের ৭টিতে জয় পেল বাংলাদেশ। সবচেয়ে বড় কথা, স্যামিদের কাছে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাংলাদেশকে মুক্তি দিল চট্টগ্রাম।

No comments

Powered by Blogger.