চলে গেলেন নাট্যজন মাহবুব হাসান

ষাটের দশকের সাংস্কৃতিক ও নবনাট্য আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব বিশিষ্ট আবৃত্তিকার ও নাট্যজন মাহবুব হাসান (৮৩) গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি...রাজিউন)। তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।তাঁর মৃত্যুতে চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মরদেহ থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) চত্বরে রাখা


হয়। এ সময় চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মীদের ফুলেল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে ওঠে তাঁর মরদেহ।
জানাজা শেষে তাঁর লাশ গরিবুল্লাহ শাহের মাজারসংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
টিআইসি চত্বরে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন বলেন, 'পঞ্চাশের দশক থেকে বাংলাদেশের নাট্যচর্চায় তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। বেতার নাটকেও তিনি ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন।'
দুই প্রজন্মের মানুষ হয়েও মাহবুব হাসানের সঙ্গে টিআইসি পরিচালক ও তির্যক নাট্যদলের প্রধান আহমেদ ইকবাল হায়দারের ছিল গভীর বন্ধুত্ব। তিনি বলেন, 'মাহবুব ভাই ছিলেন ষাটের দশকের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সর্বশেষ সাক্ষী। এ রকম প্রাণশক্তিময় ও একনিষ্ঠ লোক পাওয়া মুশকিল। টিআইসি প্রতিষ্ঠার সময় তিনি ছিলেন আমার সার্বক্ষণিক সঙ্গী। এই মানুষটি ছিলেন আমাদের সব কাজের প্রাণশক্তি।'
ষাটের দশকের চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের তুখোড় কর্মী মাহবুব হাসান। ছোটবেলা থেকেই জড়িত ছিলেন থিয়েটারের সঙ্গে। একই সঙ্গে ছিলেন নাট্যকার, নির্দেশক, আবৃত্তিশিল্পী ও সংস্কৃতি সংগঠক। রেডিও পাকিস্তান দিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করলেও পরে কাজ করেছেন ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রাম বেতারে। কাজ করেছেন বাংলাদেশ টেলিভিশনেও। গ্রুপ থিয়েটার চর্চায় রেখেছেন অনন্য ভূমিকা। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে অসহযোগ আন্দোলন পর্বে চট্টগ্রাম কলেজের প্যারেড মাঠে নাট্যকার মমতাজউদ্দিন আহমদের 'স্বাধীনতার সংগ্রাম' নাটকে অভিনয় করে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা পর্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৮৮ সালে তিনি বাংলাদেশ বেতার থেকে অবসর নেন।

No comments

Powered by Blogger.