২৭ অক্টোবর মধ্যরাতের আগে সব বহিরাগতকে নারায়ণগঞ্জ ছাড়তে হবে-বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেওয়ার সময় আর চার দিন

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ছাড়া সব বহিরাগতকে আগামী ২৭ অক্টোবর রাত ১২টার আগেই ওই এলাকা ছাড়ার নির্দেশ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। বহিরাগত যেসব রাজনীতিবিদ প্রচারণা চালাচ্ছেন, তাঁদের জন্যও এ নির্দেশ কার্যকর হবে।নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে গতকাল মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার, ঢাকার উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের কাছে এই নির্দেশনার অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।


একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দাদের লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র আগামী ২৩ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে বলা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কেউ যদি আগ্নেয়াস্ত্র জমা না দেন তাহলে তাঁর আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত বা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মহাপুলিশ পরিদর্শকের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি অপরিহার্য। এ নির্বাচনে প্রার্থী এবং ভোটাররা যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে পারেন, তার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে নির্বাচনী এলাকার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে চিরুনি অভিযান পরিচালিনত হবে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, আনসার ও ভিডিপি, কোস্টগার্ড এবং র‌্যাবের মহা পরিচালকদের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
গতকাল নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী আটকে এরই মধ্যে যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। আর ২৮ অক্টোবর থেকে বহিরাগতরা নারায়ণগঞ্জ না ছাড়লে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের আটক করবে।
ছহুল হোসাইন আরো বলেন, 'মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নিচ্ছেন বলে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এটা আইনের লঙ্ঘন। আইন অনুযায়ী সিটি নির্বাচন নির্দলীয়। এটাকে দলীয় আদল না দিলেই ভালো হতো। তবে নেতারা যখন বলেন এটা ব্যক্তিগত সফর, তখন কমিশনের বলার কিছু থাকে না। শুধু আইন থাকলেই হবে না। সবাইকে তা মেনে চলার চর্চা করতে হবে।'
ইভিএম বিধিমালা সংশোধন হচ্ছে : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারে নির্বাচন কমিশন 'সিটি করপোরেশন নির্বাচন (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) বিধিমালা- ২০১০'-এর বেশ কয়েকটি বিধিতে সংশোধনী আনছে। কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, বিদ্যমান বিধিমালায় চার ইউনিটের ইভিএমের পক্ষে বিধান রয়েছে। নারায়ণগঞ্জে করা হচ্ছে তিন ইউনিটের। ডিসপ্লে আর কন্ট্রোল_এ দুটি ইউনিটকে কাজের সুবিধার জন্য এক করাতে ইউনিট সংখ্যা কমে তিনটিতে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যমান বিধিমালায় কেউ ঠিকভাবে ভোট না দিতে পারলে ইভিএম-এ 'ভোট সম্পন্ন হয়নি' কথাটি ডিসপ্লে হবে লেখা রয়েছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে যে ইভিএম ব্যবহার হবে তাতে এই কথা ডিসপ্লে হবে না। এর বদলে 'বিপ' শব্দ শোনা যাবে। 'ভোট সঠিক হয়েছে' এই কথা ডিসেপ্লের বদলে শোনা যাবে বিলম্বিত বিপ ধ্বনী। এই পরিবর্তনগুলো সংশোধিত বিধিমালায় সংযোগ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডের ৫৮টি ভোটকেন্দ্রের ৪৫০ কক্ষে ইভিএম ব্যবহার হওয়ার কথা।

No comments

Powered by Blogger.