কাশ্মিরে বিক্ষোভকারীদের মোকাবেলায় পাথর বাহিনী পাঠানো হচ্ছে

জম্মু-কাশ্মিরে পাথর ছোঁড়া প্রতিবাদী তরুণদের মোকাবিলা করতে উত্তর প্রদেশের কানপুর থেকে হিন্দু সাধু-সন্ন্যাসীদের তৈরি সংগঠন ‘জন সেনা’ কাশ্মিরের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছে। গতকাল রোববার এক শ’র বেশি বাসে এক হাজারের বেশি ‘স্বেচ্ছাসেবক’ রওয়ানা হয়েছেন। কাশ্মিরে গিয়ে সেনাবাহিনীর মনোবল বাড়ানোও তাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। সংগঠনটির প্রধান কর্মকর্তা বালযোগী অরুণ পুরি চৈতন্য মহারাজ বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মিরে যেভাবে সেনাবাহিনীর সদস্যদের ওপরে পাথর ছোঁড়া হচ্ছে তা লজ্জাজনক। এসব লোকেরা দেশদ্রোহী। এ ধরণের লোককে তাদের ভাষাতেই জবাব দেয়া হবে। এজন্য শহর থেকে পাথরবাজ সেনা তৈরি করা হয়েছে।’ ওই অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে ‘যুদ্ধ বিজয় যজ্ঞ’। বালযোগী চান, কাশ্মিরে সেনারা নিজেদের সামনে ‘জন সেনা’র পাথরছোঁড়া বাহিনীকে রাখুক। কারণ, দেশের জন্য তারা প্রাণ দিতেও পিছপা নন। দড়ির সাহায্যে বিশেষ পদ্ধতিতে পাথর ছোঁড়ার প্রশিক্ষণ নেয়া এক উপজাতীয় ব্যক্তি বলেন, তারা কমপক্ষে ২৫০/৩০০ মিটার দূরে তীব্র গতিতে পাথর ছুঁড়তে সক্ষম। কাশ্মিরি তরুণরা যেভাবে হাত দিয়ে পাথর ছুঁড়ছে তা থেকে ৭/৮ গুণ বেশি গতিতে তারা পাথর ছুঁড়তে পারে। তিনি বলেন, আমরা চুপ করে বসে থাকতে পারি না। পাথরবাজির যোগ্য জবাব দেব। স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর জন্য খাদ্য, তাঁবু, পাথর নিয়ে যাচ্ছে বেশ কয়েকটি ট্রাক। নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সমন্বয় রেখে পাথর ছোঁড়া তরুণদের মোকাবিলা করা হবে। এজন্য উড়ে আসা পাথর থেকে কীভাবে মাথা বাঁচিয়ে পাল্টা পাথর ছুঁড়তে হয়, সেই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সাধু-সন্ন্যাসীরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেবেন। বালযোগী বলেন, ‘কানপুরে আমরা স্থায়ীভাবে পাথরবাজি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলতে চাই।
এখানে আমরা আরো সাধুকে পাথর ছোঁড়ার পদ্ধতি শেখাতে চাই।’ অন্য একটি সূত্রে প্রকাশ, পাথর ছোঁড়া ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবীদের লাঠি চালানোর প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কাশ্মিরে পাথর ছোঁড়া তরুণীদের সামলাতে হাজারখানেক নারীকে পুলিশ ব্যাটালিয়নে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, নারী পুলিশকর্মীরা প্রাথমিকভাবে কাশ্মির উপত্যকায় পাথর মারার মোকাবিলা করবেন এবং অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলাজনিত দায়িত্ব পালন করবেন। কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি পাঁচটি ইন্ডিয়া রিজার্ভড ব্যাটালিয়ন (আইআরবি) তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই একটিতে নেয়া হবে নারী পুলিশকর্মীদের। এদিকে, শনিবার নিরাপত্তা বাহিনীকে উপেক্ষা করে হিজবুল মুজাহিদীনের কমান্ড সামলানো জাকির মুসা এক অডিও বার্তায় কাশ্মিরি তরুণীদের পাথর ছোঁড়াকে ‘শরীয়াহ বিরুদ্ধ’ বলে মন্তব্য করে তাদের পাথর ছোঁড়া থেকে বিরত থাকতে এবং বাসায় অবস্থান করতে আহ্বান জানিয়েছেন। ওই ঘটনায় কাশ্মিরে শরীয়াহ বহাল করার সংগ্রামের বিপক্ষে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। জাকির মুসা ছাত্রীদের ক্লাস বয়কট ও নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্দেশ্যে পাথর না ছোঁড়ার আবেদন করেছেন। তার কথায়, আপনাদের ভাই এখনো জীবিত রয়েছে সে জন্য আপনাদের ময়দানে আসার প্রয়োজন নেই। শনিবার দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাকির মুসার ওই অডিও বার্তা ভাইরাল হয়ে ওঠে। রোববার এ সংক্রান্ত খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সূত্র : ওয়েবসাইট

No comments

Powered by Blogger.