রাষ্ট্রীয় বাহিনী ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ

সরকার দুঃশাসন টিকিয়ে রাখতে দেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। ২০ দলীয় জোটের পক্ষে গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলের যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ এ অভিযোগ করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো ভয়াল ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। অবৈধ সরকার দুঃশাসন টিকিয়ে রাখতে পুরো দেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। সরকারি গুপ্তঘাতক পেটোয়া পুলিশ-র‌্যাব বাহিনী প্রতিনিয়তই বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বসতবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করার পর রাস্তাঘাটে, মাঠে-ময়দানে, খালে-বিলে, ক্ষেতে-খামারে লাশ ফেলে রেখে গ্রেপ্তারের দায়িত্ব অস্বীকার করছে। তিনি বলেন, ঢাকার মিরপুর ও ঝিনাইদহে ৬ জনের অসংখ্য গুলিবিদ্ধ লাশের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরও পুলিশ বলছে- তারা গণপিটুনিতে মারা গেছে। নিহতদের পরিবারের বক্তব্য অনুযায়ী কয়েকদিন আগেই পুলিশ তাদের বিনা কারণে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় পরিবারের সঙ্গে তাদের টেলিফোনে কথা হয়। পুলিশ তাদের কাছে টাকাও দাবি করে। সালাহউদ্দিন বলেন, মিরপুর ১০নং ওয়ার্ড শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াদুদকে গ্রেপ্তারের পর বন্দুকযুদ্ধের সাজানো নাটকে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিএনপি কর্মী দেলোয়ার হোসেন দুলাল ও গোলাম আজম পলাশকে ডিবি পুলিশ কয়েকদিন আগেই গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে হত্যার পর লাশ উপজেলার ডেফোলবাড়িয়া মাঠে ফেলে রেখে যায়। এবং গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করে। মিরপুরের নিহত অপর তিনজন জুয়েল, সুমন ও রবিনের গায়ে ৫৪টি গুলির চিহ্ন পাওয়ার পরও পুলিশের দাবি গণপিটুনিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে। আমরা বরাবরের মতো এই সকল জঘন্য গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সময়ের পট পরিবর্তন হলে এইসব গণহত্যায় দায়ী ব্যক্তিদেরকে বিচারের জন্য উপযুক্ত আদালতের আওতায় আনা হবে। সালাহউদ্দিন বলেন, এই জনপদের মানবতার শত্রু, গণহত্যাকারী, গণতন্ত্রের আততায়ী অবৈধ আওয়ামী সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- জনগণের ব্যালটের অধিকার বুলেটের মাধ্যমে কেড়ে নিয়ে ক্ষমতার উত্তাপে অন্ধ হলেও প্রলয় বন্ধ হবে না। প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাই- বোনদেরকে আহ্বান জানাই- আপনারা জনগণ এবং রাষ্ট্রের সেবক হিসেবে নিরপেক্ষ থেকে দায়িত্ব পালন করুন। কোন ব্যক্তি বা দলের অবৈধ ইচ্ছা বা আদেশ পালনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবেন না। জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে বিজাতীয় শত্রুর মতো আচরণ করবেন না। ভাইয়ের বুকে গুলি চালাবেন না। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের মধ্য দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমিকে দাসানুদাসে পরিণত করার আওয়ামী ষড়যন্ত্র থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করার কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, চলমান অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে এবং সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের যেসব নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন, খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করছি। নিহতদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা। গণআন্দোলনে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ, দেশ রক্ষার এই সংগ্রামে জনতার বিজয় অনিবার্য ইনশাআল্লাহ্‌।

No comments

Powered by Blogger.