পিলখানা হত্যাযজ্ঞ- এক হতভাগ্য পিতার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ by হাবিবুর রহমান

দুর্বিষহ সময়ের ছয়টি বছর পেরিয়ে গেল। এক নির্মম-নিষ্ঠুর অন্তহীন যন্ত্রণা-বর্বরতা আর নিদারুণ পৈশাচিকতার ২০০৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি থেকে আরও এক ফেব্রুয়ারি। আমাদের জীবনের সামনে আর কয়টা ২৫শে ফেব্রুয়ারি ফিরে আসবে জানি না। যত দিন এ দিনটি  ঘুরে আসবে, তত দিন এ সন্তান হারানো সীমাহীন শোক দুঃসহ বেদনা আমাদের জর্জরিত করে রাখবে। এ যন্ত্রণা যে কত নিদারুণ ও বেদনাময় তা শুধু ভুক্তভোগীই বুঝবেন। তবুও আমাদের সইতে হবে, সইতে হবে অবর্ণনীয় দুঃখময় এ দুঃসহ স্মৃতি। পিতা হিসেবে সন্তানের কফিন যে কত ভারি- তা কেউ বুঝবে না কোনদিন। ওর মাও এ নিদারুণ কষ্ট সইতে না পেরে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো আজ প্রায় তিন বছর। আমি সেই হতভাগ্য পিতা, হারিয়েছি আমার প্রাণাধিক পুত্র কর্নেল কুদরত এলাহী রহমান শফিক এনডিসি, পিএসসিকে। এলাহীর জীবন প্রদীপ নিভে গেছে একদল বর্বর মানুষরূপী হায়েনা-ঘাতকের বুলেটে-বেয়নেটে। ২৫শে ফেব্রুয়ারি পিলখানা সৃষ্টি করেছে ইতিহাসের একটি কলঙ্কময় অধ্যায়। ঘাতকের বুলেটে শহীদ হলো আমাদের সন্তান কর্নেল এলাহী। সন্তানহারা এ শোক বুকে নিয়ে যে কিভাবে বেঁচে আছি, তা শুধু আল্লাহপাকই ভাল জানেন। আমাদের সন্তান কর্নেল এলাহীকে আর কোন দিন ফিরে পাবো না। তার হত্যার বিচারও কি আমরা পাবো কোন দিন? দেখতে চাই সত্যিকার বিচার, বিচারের প্রহসন নয়, সে বিচার দেখে যেন ভবিষ্যতে কেউ কোন দিন কোন মানুষ হত্যা করতে উদ্যত না হয়। ২৫শে ফেব্রুয়ারির বর্বরতাই যেন হয় বাংলার ইতিহাসের শেষ কলঙ্ক। তাহলেই হয়তো এলাহীর বিদেহী আত্মা শান্তি পাবে।
আমরা তো শুধু আমাদের সন্তান কর্নেল এলাহীকেই হারাইনি। দেশ হারিয়েছে এক অসাধারণ মেধাবী সেনাকর্মকর্তাকে। এলাহী তার মেধা দিয়ে শুধু নিজেকেই গড়ে তোলেনি, দেশকেও দিয়েছে অনেক কিছু। দিয়েছে সম্মান, দিয়েছে সেবা। তার উজ্জ্বল জীবনী এবং বর্ণাঢ্য কর্মজীবন দেশের যে কোন মূল্যবান নাগরিকের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। প্রতিটি পর্যায়ে নিজেকে সে দিবালোকের মতো সমুজ্জ্বল করে রেখেছিল। তার সামনে এসে গিয়েছিল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে উন্নীত হওয়ার সময়। ২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০০৯-এর আর মাত্র ৫ মাস পরেই এলাহী এ পদে অভিষিক্ত হতো। এমন একজন মেধাবী সেনাকর্মকর্তার কিছুই দেখে যেতে পারলাম না আমরা। দেশও তার কাছে পেতে পারতো আরও অনেক কিছু। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস!
এলাহীর জন্ম রংপুরে ১৯৬২ সালের ১লা নভেম্বর। ক্যাডেট কলেজের পাঠ সমাপ্ত করে এলাহী বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) যোগদান করে। সে কমিশন লাভ করে ১৯৮৩ সালের ১০ই জুন। ভাটিয়ারিতে সামরিক প্রশিক্ষণকালে এলাহী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভ করে। অতঃপর সে থার্ড বেঙ্গল রেজিমেন্টে অফিসার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে। সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন হিসেবে তাকে সিলেটে স্কুল অব ইনফেন্ট্রি অ্যান্ড টেকটিকসে (এসআইএনটি) প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। যেসব অফিসার এ কোর্সে সর্বশ্রেষ্ঠ বিবেচিত হয় কেবল তাদেরই এ দায়িত্বে নিয়োগ দেয়া হয়। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তিনজন সেনা অফিসারকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনে (আইবিএ) পড়তে পাঠানো হয়েছিল। দু’বছরের এ কোর্সে এলাহী এমবিএতে (মার্কেটিং) প্রথম স্থান লাভ করে এবং উজ্জ্বল করে সেনাবাহিনীর মুখ। এ এক অনন্য অর্জন।
কর্নেল এলাহী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগ দেয়ার জন্য বসনিয়া যায় এক বছরের জন্য। বসনিয়া থেকে দেশে ফেরার পর এলাহী ব্রিগেড মেজর হিসেবে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্টে যোগ দেয়। কয়েক মাস সেখানে দায়িত্ব পালন করার পর এলাহী ডিফেন্স সার্ভিসে পিএসসি ডিগ্রি লাভ করে। এ পরীক্ষায় তার বিশেষ কৃতিত্বের জন্য তাকে মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় পিএসসি কোর্সের জন্য পাঠানো হয়। সেখানেও সে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে এবং দুটি পিএসসি লাভ করে। এ সময় সরকার সেনানিয়ন্ত্রিত একটি সায়েন্স ও টেকনোলজি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়। এখানে সামরিক অফিসার এবং বেসামরিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, এমবিএ, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি বিভাগ খোলার সিদ্ধান্ত হয়। সরকার এখানে এলাহীকে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করে তার অসাধারণ মেধার স্বীকৃতিস্বরূপ। ইতিমধ্যে এলাহী লে. কর্নেল পদে উন্নীত হয়। সেনা নিয়ম অনুসারে লে. কর্নেল পদে পদোন্নতি লাভের সঙ্গে সঙ্গেই একজন সামরিক কর্মকর্তাকে একটি ব্যাটালিয়নের কমান্ডে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু কুদরত এলাহীকে গুরুত্বপূর্ণ মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে (এমআইএসটি) নিয়োগ করা হয় প্রথম এমবিএ কোর্স সংগঠন ও পরিচালনার জন্য। এক বছর পর এলাহী পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৮ বেঙ্গল কমান্ডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ পায়। সেখানে দু’বছর দায়িত্ব পালনের পর তাকে স্টাফ কলেজে ডাইরেকটিং স্টাফ পদে নিয়োগ করা হয়। এর মাত্র কয়েক মাস পরই কুদরত এলাহী ফুল কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি পায় এবং স্টাফ কলেজের সিনিয়র প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব লাভ করে। মাত্র কয়েক মাস পরই কর্নেল এলাহী আবার শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে সুদান চলে যায়। ২০০৭ সাল থেকে সেখানে সে এক বছর দায়িত্ব পালন করে। সুদানে দায়িত্ব পালনকালে কর্নেল এলাহীকে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন নিজে ‘জাতিসংঘ সাহসিকতার পদক’ পরিয়ে দেন। এটিও একটি বিরল সম্মান। জাতিসংঘে পাঠানো মাত্র কয়েকজন এ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন এ পর্যন্ত। সুদান থেকে ফিরে আসার পর তাকে এক বছরের কোর্সে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে পাঠানো হয়। সাধারণত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এবং উচ্চ পদস্থদেরই এ কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পাঠানো হয়। এলাহীর ক্ষেত্রে এই ব্যতিক্রম শুধু তার অসাধারণ মেধা। ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এলাহী কৃতিত্বের সঙ্গে এনডিসি কোর্স সমাপ্ত করে। এনডিসি কোর্স সমাপ্ত করার সময়ই কর্নেল এলাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল ডিগ্রি লাভ করে এবং সুবিধামতো সময়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভের পথ সুগম করেছিল। অল্প বয়সে সে যখন সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন আমি ও তার মা তাকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখিয়েছিলাম। তার মেধার কারণে দেশে এবং দেশের বাইরে লেখাপড়া শেষ করে বিদেশ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে বিদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সে অধ্যাপনা করুক, এটাই আমরা চেয়েছিলাম। তাই সেনাবাহনীতে থেকেই এলাহী পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করে আমাদের সে আশা পূরণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু বিধিবাম। ওর সে স্বপ্নও পূর্ণ হয়নি।
২০০৯ সালের ১১ই জানুয়ারি কর্নেল এলাহী দিনাজপুরে বিডিআরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে যোগ দেয়। সেখানে সে মাত্র এক মাস ১০ দিন দায়িত্ব পালন করেছিল। ২১শে ফেব্রুয়ারি ২০০৯ বিডিআর সপ্তাহ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য কর্নেল এলাহী ঢাকা আসে। বিডিআর বিদ্রোহে অন্যান্য সেনাকর্মকর্তাদের সঙ্গে বিডিআর দরবার হলে কর্নেল এলাহীও শাহাদতবরণ করে। যতদূর জানা যায়, ২৫শে ফেব্রুয়ারিতেই সে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় এলাহী তার কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সহকর্মী এবং বন্ধুর কাছে মেসেজ পাঠিয়েছিল যে সে বেঁচে আছে এবং তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করার অনুরোধ করেছিল। ভাগ্যবিরূপ! তাই তার সে করুণ আবেদন শুধু অরণ্যে রোদন মাত্র।
আমরা পরিবারের সবাই মিলে দু’দিন ধরে যখন টেলিভিশনে বিডিআরের ঘটনাবলি প্রত্যক্ষ করছিলাম, তখন তৃতীয় দিনে ২৭শে ফেব্রুয়ারি বিকালে দেখলাম কর্নেল এলাহীর নাম শহীদের তালিকায় এসে গেছে। তখন সব শেষ! এই ভয়াবহ ঘটনার সময় সে আমাদের কাছে একটি টেলিফোন কিংবা কোন মেসেজ পাঠায়নি। আমরা যন্ত্রণায় ছটফট ও ছোটাছুটি করবো বলে। ২৭শে ফেব্রুয়ারিতে বিডিআর সপ্তাহ সমাপ্ত হওয়ার পর তার সঙ্গে আমাদের দিনাজপুরে যাওয়ার কথা ছিল। আমরা অনেক আশা করেছিলাম সবাই মিলে দিনাজপুরে যাবো। সেখানে ওর সঙ্গে কয়টা দিন কাটিয়ে আসবো। ভাগ্যের এও এক নির্মম আঘাত! সেদিনই জানতে পারলাম এলাহী পৃথিবীর সব মায়া ত্যাগ করে আমাদের ছেড়ে চিরদিনের মতো চলে গেছে না ফেরার এক অন্য জগতে।
পাঁচ মাস পর ২০০৯ সালের জুলাইয়ে সেনাবাহিনীর প্রমোশন বোর্ড বসে। ওই বোর্ডে এলাহী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে উন্নীত হওয়ার কথা ছিল। সে ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র।
দু-তিন বছরের মধ্যে এলাহীর কোর্সের পাঁচজন সহকর্মী মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হয়ে বর্তমানে সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত আছেন কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম লিখন, এলাহীর ভাগ্যে কর্নেলের ওপরে আর ওঠা হলো না। তার সহকর্মীরাই বলেন, এলাহী বেঁচে থাকলে সে তাদের আগেই মেজর জেনারেল হতো হয়তোবা আরও ওপরেও উঠতে পারতো। একেই বলে নিয়তি। ইংরেজ কবি লংফেলো যথার্থই বলেছেন,
“Full many a gem of purest ray serene
The dark unfathomed caves of ocean bear,
Full many a flower is born to blush unseen,
And waste its sweetness in the desert air.”
কুদরত এলাহী ছিল তার সহকর্মী, বন্ধু, আত্মীয়স্বজন এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের অতিপ্রিয় একজন মানুষ। পিতা-মাতার প্রতি তার অসীম শ্রদ্ধা এবং স্ত্রী-পুত্র, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজনের প্রতি অত্যন্ত দায়িত্বশীল। সে অধস্তনদের কাছে ছিল অত্যন্ত অমায়িক। মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতা করার জন্য সে ছিল নিবেদিতপ্রাণ। তার মানবিকতার একটি অনন্য দৃষ্টান্ত আমি তুলে ধরতে চাই। যখন সে পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৮ বেঙ্গল ব্যাটালিয়নের কমান্ডার ছিল, তখন তার সেকেন্ড ইন কমান্ড এক মেজর স্পিডবোট নিয়ে কাপ্তাই লেকে প্রহরাকালে শান্তিবাহিনীর আক্রমণে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়। ওই মেজরকে দ্রুত হেলিকপ্টারে ঢাকার সিএমএইচে আনা হয়। ডাক্তাররা তার আঘাতের গভীরতা বিবেচনায় তাকে সিঙ্গাপুর অথবা লন্ডনের কোন হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারলে ভাল ফল পাওয়া যাবে বলে মত দেন। ঊর্ধ্বতনরা তাকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেন। লন্ডনে তার চিকিৎসা আরও ভাল হবে এবং তিনি জীবনে বেঁচে যাবেন এ চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠলো এলাহী। সেনাবাহিনীর বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে এলাহী সরাসরি সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেখা করে তাকে রাজি করাতে সক্ষম হয়। এ কারণে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে তিরস্কারও শুনতে হয়েছিল। শেষ অবধি চিকিৎসার জন্য ওই অফিসারকে লন্ডনেই পাঠানো হয়। অল্পদিনের মধ্যেই তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই পদোন্নতিও পান। তার একজন অধীনস্থ অফিসারের জন্য সে এতখানি না করলেও পারতো। মানুষের বিপদে এমনিভাবে এগিয়ে আসাই ছিল তার ধর্ম।
কর্নেল এলাহীকে যখন কবরে শুইয়ে দিয়েছিলাম, তখন সেখানে দাঁড়িয়ে একজন সেনাকর্মকর্তা বলছিলেন, ‘কর্নেল এলাহীর কাছে তার জুনিয়র-সিনিয়র সবারই অনেক শেখার ছিল।’ একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সেখানে বলেছিলেন, ‘সেনাবাহিনীতে কর্নেল এলাহীর অভাব কখনোই পূরণ হবে না।’ অন্য একজন অফিসার কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যে ক্ষতি হলো তা ৫০ বছরেও পূরণ হওয়ার নয়।’ কর্নেল এলাহী দিনাজপুরে মাত্র ১ মাস ১০ দিন দায়িত্ব পালন করেছিল। হাজার হাজার বিডিআর জওয়ানের মধ্যে হাতেগোনা মাত্র কয়েকজন তাকে চিনতো। তার কোন শত্রুও ছিল না। অথচ সেই মানুষটিকে বর্বর বিডিআর সদস্যরা কি নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করলো। তার সঙ্গে আরও হারিয়ে গেল দেশের ৫৬ জন মেধাবী সেনাকর্মকর্তা। এই অভাব আর কোন দিন পূরণ হবে? হয়তো না! কি জবাব আছে এ মৃত্যুর? উদ্দেশ্য কি এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের? হয়তো এ প্রশ্নেরও জবাব মিলবে না কোন দিন।
সন্তানকে স্মরণ করে যখন ওর কথা লিখছিলাম আমার দুচোখ অশ্রুতে ঝাপসা হয়ে আসছিল। কলম থেমে যাচ্ছিল, বুকের স্পন্দন স্তব্ধ হয়ে আসছিল আর লিখতে পারি নি। এখন আল্লাহর কাছে শুধু একটিই প্রার্থনা, তিনি যেন কর্নেল এলাহীকে এবং তার সব সহকর্মীকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করেন।
-হাবিবুর রহমান, শহীদ কর্নেল কুদরত এলাহীর হতভাগ্য পিতা

No comments

Powered by Blogger.