ব্রহ্মপুত্রে চীনের তৈরি বাঁধ বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য ক্ষতিকর হবে না by অধ্যাপক ড. প্রণবকুমার রায়

অধ্যাপক ড. প্রণবকুমার রায় কলকাতাভিত্তিক সিএইচএমআর (সেন্টার ফর হাইড্রো-মেটিওরোলজিক্যাল রিসার্চ) প্রতিষ্ঠা করেন ২০১০ সালে। বর্তমানে তিনি পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া তিনি আন্তঃসীমান্ত নদী নিয়ে দিলি্লভিত্তিক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। সিএইচএমআর প্রতিষ্ঠার আগে ১৯৭৬ সাল থেকে তিনি পশ্চিমবঙ্গের প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। প্রণবকুমার রায় ১৯৬৭ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক এবং ১৯৬৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭২-৭৬ সালে তিনি ইংল্যান্ডের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পানিসম্পদ বিষয়ে পিএইচডি করেন। একই সময়ে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন। তার জন্ম ১৯৪৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ায়। ড. রায়ের সর্বসাম্প্রতিক বই 'আন্তঃরাষ্ট্রীয় নদী ব্যবস্থা :প্রসঙ্গ ভারত ও বাংলাদেশ' ২০১৩ সালে প্রকাশিত...
সমকাল :আমরা জানি, আপনি দীর্ঘ দিন ধরে পানিসম্পদ, বাংলাদেশ-ভারত ও ভারত-চীন আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি বণ্টন ইস্যুতে কাজ করছেন। আপনার সর্বশেষ বইয়ে বাংলাদেশ-ভারত নদী ব্যবস্থায় বিশেষত গঙ্গা ও তিস্তা নদী প্রাধান্য পেয়েছে। আপনি এবার ঢাকা সফরে একটি গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থাপিত নিবন্ধে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেছেন। কিন্তু আমরা এই সাক্ষাৎকারে মূলত জোর দিতে চাই দুই দেশের অপর প্রধান নদ ব্রহ্মপুত্র বিষয়ে। প্রবাহের পরিমাণ ও দৈর্ঘ্য বিবেচনায় এই নদ ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রধানতম হলেও আলোকপাত হয়েছে অপেক্ষাকৃত কম। বলে রাখতে চাই যে, আমার সুযোগ হয়েছে মূলত ব্রহ্মপুত্র সামনে রেখে ভারত ও চীনের মধ্যে পানি বণ্টন বিষয়ে আপনার প্রণীত সমীক্ষাটি দেখার। আমরা জানি, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্বীকৃত অভিন্ন নদীর সংখ্যা ৫৪। আপনার কাছে জানতে চাইব, চীন ও ভারতের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র ছাড়াও আর কয়টি অভিন্ন নদী রয়েছে?
প্রণব কুমার রায় :শুধু চীন ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন নদী নেই বললেই চলে। দুই দেশের সব আন্তঃসীমান্ত নদী আসলে হিমালয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সঙ্গেও যুক্ত। যেমন ব্রহ্মপুত্র চীন, ভুটান, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিস্তৃত। এর বাইরে সিল্পুুব্দ ও সাতলাজ চীন, ভারত ও পাকিস্তানে বিস্তৃত। কোশি, অরুণ, বরুণ, কার্নালি_ এই নদী চারটি চীন, নেপাল ও ভারতের মধ্যে প্রবাহিত। তার মানে, এক অর্থে ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি সাতটি বড় আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে।
সমকাল :ব্রহ্মপুত্র ভুটানের সঙ্গে যুক্ত বোধ হয় উপনদীর মাধ্যমে?
প্রণব রায় : হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন। এ ছাড়া মানস নদী চীন হয়ে ভুটানের মধ্য দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে। নিচের দিকে এসে বিভক্ত হয়ে এটি বেকি নদী নামে ব্রহ্মপুত্রে পতিত হয়েছে। লোহিত নদী চীন থেকে এসে অরুণাচলে ব্রহ্মপুত্রে পতিত হয়েছে। সুবনছিরি নদীও চীন থেকে এসে ভুটানের মধ্য দিয়ে অরুণাচলে প্রবেশ করেছে ও ব্রহ্মপুত্রে পড়েছে।
সমকাল :২০০৫ সালে আমার সুযোগ হয়েছিল একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অরুণাচলে গিয়ে সুবনছিরি নদী দেখার। সেখানে নির্মীয়মাণ একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছিলাম আমরা।
প্রণব রায় :ওই জলবিদ্যুৎ বাঁধটি নির্মাণ এখন বন্ধ আছে।
সমকাল :তাহলে তো ব্রহ্মপুত্রের জন্য মন্দের ভালো। আপনার কাছে জানতে চাইব ব্রহ্মপুত্রের চীন অংশ সম্পর্কে।
প্রণব রায় :লাখ লাখ বছর আগে ব্রহ্মপুত্র কিন্তু ভারতের দিকে প্রবেশ করত না। তিব্বত হয়ে চীন সাগরে পতিত হতো। তিব্বতে এর নাম ইয়ারলুং-সাংপো। উৎপত্তি আংসি হিমবাহের তামলুং হ্রদ থেকে। অনেকে নদটির উৎস হিসেবে চেমইয়ুংদাং হিমবাহের কথা বলেন, যা ভুল। তিব্বতে সাংপো কমবেশি ১ হাজার ২১৭ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়েছে। তার পর এটি অরুণাচলে প্রবেশ করে সিয়াং বা ডিহং নাম ধারণ করেছে। একটি অংশে এর নাম ডিবাং। আসামে প্রবেশ করে এই নদের নাম হয় ব্রহ্মপুত্র। চীন, ভুটান, ভারত, বাংলাদেশ মিলে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার অর্ধেকের বেশি চীনে; কিন্তু মোট প্রবাহের মাত্র ২৯ শতাংশ চীন থেকে আসে। এর কারণ তিব্বতের শীতল মরু জলবায়ু।
সমকাল :ব্রহ্মপুত্র নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে কি কোনো চুক্তি বা সমঝোতা আছে?
প্রণব রায় : না, নেই। কোনো সমঝোতা স্মারক নেই, প্রটোকল নেই। চুক্তি তো নেই-ই। তবে দু্ই দেশের মধ্যে জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহ সম্পর্কে তথ্যবিনিময় হয়। চীনের পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয় সেই তথ্য ভারতের পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয়ের কাছে দেয়। ভারতের পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয় তা সেন্ট্রাল ওয়াটার বোর্ড, আসাম ওয়াটার বোর্ড, ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের কাছে সরবরাহ করে। এ ধরনের তথ্য সাধারণত বন্যা সতর্কীকরণের জন্য প্রয়োজন হয়। কিন্তু কথা হচ্ছে, তিব্বতে সাংপো নদীতে বন্যার কোনো আশঙ্কা থাকে না। কারণ সেখানে নদীটি প্রবাহিত হয়েছে গিরিখাতের মধ্য দিয়ে। প্রায় তিন হাজার মিটার গভীর গিরিখাত। যত বৃষ্টিপাতই হোক, বন্যার আশঙ্কা থাকে না।
সমকাল :ওই গিরিখাতেই তো চীন একটি ড্যাম তৈরি করছে? আমাদের এখানে আশঙ্কা রয়েছে যে, সেই ড্যাম দিয়ে চীন ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহ ঘুরিয়ে দেবে। আমরা দেখেছি, ভারতীয় পক্ষগুলোর মধ্যেও একই আশঙ্কা রয়েছে।
প্রণব রায় :ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহ ঘুরিয়ে দেওয়ার কোনো আশঙ্কা আমি অন্তত দেখছি না। কারণ সেটা কারিগরিভাবেই সম্ভব নয়। কারণ যেখানে চীন জাংবো ড্যাম তৈরি করছে, সেটা এত গভীর গিরিখাত যে, বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়া প্রবাহ ঘুরিয়ে অন্যদিকে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারা ড্যামটি তৈরি করছে নদীর দুই পাশের দুটি পর্বতের মধ্যে। পর্বত দুটির নাম নেইলা পেরি। আর প্রবাহ ঘুরিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন তখনই হয়, যখন সেচ প্রকল্প থাকে। তিব্বতে চীন কোনো সেচ প্রকল্প করছে না। তারা ওই অঞ্চলে শিল্পায়ন করতে চায়। সে জন্য তাদের বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। যে কারণে কেবল সাংপোতে ড্যাম তৈরি করছে না। এর উপনদীগুলোতে আরও ১৩টি ড্যাম তৈরি করেছে। জাংবো ড্যামের ভাটিতে আরও চারটি রানঅফ রিভার ড্যাম তৈরি হবে। চীন বরং সিন্ধু ও সাতলাজ থেকে তিব্বতের দিকে পানি নিতে চায়। সেখানে তারা ব্যারাজ তৈরি করার কথা ভাবছে। ফলে ভারতের মূল চিন্তা হওয়া উচিত সিন্ধু ও সাতলাজ নিয়ে; ব্রহ্মপুত্র নিয়ে নয়।
সমকাল :কিন্তু আমরা তো দেখেছি, ভারতের পরিবেশকর্মী ছাড়াও সরকারি নীতিনির্ধারকরা ব্রহ্মপুত্রে চীনের ড্যাম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এমনকি এই ইস্যুতে ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করার কথাও বলা হচ্ছে।
প্রণব রায় :আমার ধারণা, সেটা প্রাথমিক ধারণার ভিত্তিতে। আগেই যেমনটি বললাম, কারিগরিভাবেই এটা সম্ভব নয়। একটা হতে পারে, জাংবোর ভাটিতে আরও ড্যাম ও রিজার্ভার তৈরি করে পানি ধরে রাখলে। একবার জলবিদ্যুৎ বাঁধের মধ্য দিয়ে আসা পানি ধরে রেখে আবার সেই পানি ঘুরিয়ে নিয়ে বাঁধের উজানে ফেলা। তাহলেই কেবল ব্রহ্মপুত্রে চীন থেকে আসা পানি কমতে পারে। কিন্তু সেটা ওই পার্বত্য অঞ্চলে কারিগরিভাবে প্রায় অসম্ভব। সম্ভবত হলেও খরচ এত বেশি পড়বে যে, তা কুলানো যাবে না। বড় কথা, ব্রহ্মপুত্রের যে প্রবাহ তিব্বত থেকে আসে, তা সামান্য। কারণ তিব্বত হচ্ছে প্রায় বৃষ্টিহীন অঞ্চল। মূল বৃষ্টিপাত হয় আসাম অঞ্চলে। এই বৃষ্টির ফলেই ব্রহ্মপুত্রে বিপুল পানি থাকে। এ ছাড়া উপনদীগুলো নেপাল ও ভুটানের মধ্য দিয়ে এসে ব্রহ্মপুত্রে পড়েছে। চীনের তুতিং পয়েন্টে যেখানে মাত্র চার হাজার কিউসেক পানি প্রবাহ থাকে, সেখানে ভারতের পাসিঘাট পয়েন্টে থাকে ৩২ হাজার কিউসেক পানি। আপনি দেখবেন, এখন ভারত আর আগের মতো এ নিয়ে কথা বলছে না। আমি নিজে বিষয়টি নিয়ে আমাদের পানিসম্পদমন্ত্রী উমা ভারতী, উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিষয়ক মন্ত্রী, অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বুঝেছেন। সরকারি আমলারাও বিষয়টি বুঝেছেন। ভারত এখন আসলে চাইছে, আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চীন যেন সাংপোতে ২০ শতাংশ পানি নদীর জন্য রাখে। তাহলেই চলবে।
সমকাল :এখন তাহলে চীনের সঙ্গে পানি বণ্টনের ক্ষেত্রে ভারতকে এবং পাকিস্তানকে সিন্ধু নদ ও সাতলাজ নিয়ে ভাবতে হবে?
প্রণব রায় :আমি তাই মনে করি। ওই অঞ্চলে চীন যেসব প্রকল্প নিতে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে মনোযোগ দেওয়া দরকার।
সমকাল :ব্রহ্মপুত্রে চীনের বাঁধ নিয়ে তাহলে বাংলাদেশের উদ্বেগের কিছু নেই? কয়েক দিন আগে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের নতুন রাষ্ট্রদূত কিন্তু এই কথাই বলেছেন। তিনি বলেছেন, চীন ব্রহ্মপুত্রে এমন কিছু করবে না, যা বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর হয়। আপনি বলছেন, ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রত্যাহার চীনের জন্য কারিগরিভাবেই সম্ভব নয়?
প্রণব রায় :তিনি এক অর্থে ঠিকই বলেছেন। কিন্তু সে জন্য বসে থাকা উচিত হবে না। আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে, নজর রাখতে হবে।
সমকাল :ব্রহ্মপুত্র নিয়ে তাহলে বাংলাদেশের উদ্বেগের কেন্দ্র ভারত ও ভুটান? কারণ বহুল আলোচিত আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ভারত ব্রহ্মপুত্রের পানি সরিয়ে নিতে চাইছে। ভুটান দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদ ব্যবস্থার উপনদীগুলোতে ড্যাম তৈরি হচ্ছে।
প্রণব রায় :আমি নিজে এভাবে পানির বেসিন ট্রান্সফারের বিপক্ষে। তবে জলবিদ্যুৎ প্রশ্নে অভিন্ন অববাহিকার মধ্যে ড্যাম হতে পারে। কারণ উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে।
সমকাল :কিন্তু এতে ভাটির দেশ বাংলাদেশের কী লাভ? বরং ক্ষতি হবে। কারণ ড্যামের কারণে নদীর পানির গুণগত মান নষ্ট হবে। জীববৈচিত্র্য নষ্ট হবে। মৎস্যসম্পদের ক্ষতি হবে। ভাটিতে ভাঙন ও পলিপতন বাড়বে।
প্রণব রায় :এ জন্যই আমি অববাহিকাভিত্তিক যৌথ ব্যবস্থাপনার কথা বলি। যাতে সুফল অববাহিকার সব দেশ পেতে পারে। কুড়িগ্রাম ও ধুবড়ির কাছে একটি ব্যারাজ তৈরি করে ব্রহ্মপুত্রের উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে রংপুর, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ অঞ্চলের নদীগুলোতে পানি দেওয়া যেতে পারে। সেখানে সেচের কাজে লাগবে। কৃষি উৎপাদন বাড়বে। ওইসব অঞ্চলে ছোট ছোট অনেক নদী আছে। ফলে নতুন করে সেচখাল খননের প্রয়োজন নেই। নদীগুলোই সেচখাল হিসেবে ব্যবহৃত হবে। একই কাজ টিপাইমুখের ভাটিতেও করা যায়।
সমকাল :আপনি জানেন, অববাহিকাভিত্তিক নদী ব্যবস্থাপনা তখনই সম্ভব, যখন উজানের দেশ অভিন্ন নদীগুলোতে ভাটির দেশের অধিকার স্বীকার করে নেবে। কিন্তু ব্রহ্মপুত্রসহ অভিন্ন নদীগুলো নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে তো কোনো পানি বণ্টন বা অধিকার চুক্তিই সম্ভব হচ্ছে না! অভিন্ন নদীগুলোর কোথায় কোথায় কী ধরনের স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে, সে সম্পর্কেও খুব বেশি তথ্য বাংলাদেশ পাচ্ছে না। অথচ গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি অনুযায়ী এসব সম্পর্কে বাংলাদেশকে বিস্তারিত জানানোর কথা।
প্রণব রায় :সে জন্যই আমি বলছি, পানি বণ্টন চুক্তি নয়; অববাহিকাভিত্তিক নদী ব্যবস্থাপনা চুক্তি করতে হবে। যৌথ ব্যবস্থাপনায় বন্যার সময় পানি ধরে রেখে শুকনো মৌসুমে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ হবে, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, ভাঙন কমবে, নৌপথে নাব্য থাকবে।
সমকাল :ভারতের বেসরকারি পর্যায় থেকে অববাহিকাভিত্তিক ব্যবস্থাপনার কথা বিভিন্ন সময়েই শুনেছি আমরা। কিন্তু সরকারি পর্যায় কি সেটা উপলব্ধি করে?
প্রণব রায় :আসলে বেসরকারি পর্যায় থেকেই এতদিন বিষয়টি ভাবা হয়নি। এখন হচ্ছে। এর প্রভাব সরকারি পর্যায়েও পড়বে। সবার প্রয়োজন মেটাতে সেদিকেই যেতে হবে।
সমকাল :ব্রহ্মপুত্র নিয়ে কি মেকংয়ের মতো চুক্তি সম্ভব? যেখানে বাংলাদেশ-ভারত ছাড়াও চীন ও ভুটান বা নেপাল থাকবে?
প্রণব রায় :আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সম্ভব। নেপাল, ভুটান, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তো সম্ভবই। সব পক্ষ রাজি হলে চীনও থাকতে পারে। এ নিয়ে আরও বেশি বেশি আলোচনা হতে হবে। সরকারি পর্যায়ের আগে বেসরকারি পর্যায়ে বেশি আলোচনা হতে হবে।
সমকাল :আপনার প্রত্যাশা বাস্তবে পরিণত হোক। আমাদের সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
প্রণব রায় :আপনাকেও ধন্যবাদ।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : শেখ রোকন

No comments

Powered by Blogger.