প্রবীণ রাজনীতিক নূর আলম জিকুর ইন্তেকাল

প্রবীণ রাজনীতিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সাবেক সভাপতি নূর আলম জিকু আর নেই। রবিবার ভোরে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি..... রাজেউন)।
মৃত্যুকালে জাতীয় সংসদের সাবেক এ চীফ হুইপের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ে, আত্মীয়স্বজনসহ অসংখ্য রাজনৈতিক অনুসারী রেখে গেছেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী নূর আলম জিকু ২০০৫ সালে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই শয্যাশায়ী ছিলেন। এ সময়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা হয় তাঁর। কিন্তু মৃতু্য নামক নিয়তির কাছেই হার মানতে হয় তাঁকে। তিনি মসত্মিষ্কে রক্তৰরণ ছাড়াও হৃদরোগ, ডায়াবেটিকসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।
জিকুর মৃতু্যর খবরে রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই হাসপাতাল ও রাজধানীর পুরনো ঢাকার ওয়াইজঘাটের মরহুমের বাসভবন 'বুড়িগঙ্গা ভবনে' জড়ো হন। মরদেহের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনসহ শোকসনত্মপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা রবিবার বাদ জোহর পুরনো ঢাকার ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিলের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। আজ সোমবার সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যনত্ম বিভিন্ন দল ও মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরহুমের লাশ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউস্থ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে রাখা হবে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দ্বিতীয় জানাজা, বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে তৃতীয় জানাজা এবং বাদ আছর সংসদ ভবনের দণি পস্নাজায় চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে নূর আলম জিকুকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।
নূর আলম জিকুর মৃতু্যতে জেএসডি সারাদেশে তিন দিনের দলীয় শোক কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। রবিবার থেকে শুরম্ন হওয়া শোক কর্মসূচী কাল মঙ্গলবার পর্যনত্ম চলবে। ওই সময় পর্যনত্ম সারাদেশে দলের সকল কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণসহ দলের নেতাকর্মী সদস্যরা কালো ব্যাজ ধারণ করবেন।
মুক্তিযুদ্ধে বিএলএফের দৰিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ডেপুটি কমান্ডার নূর আলম জিকুর জন্ম ১৯৩৮ সালে। স্কুলের ছাত্রাবস্থায় কুষ্টিয়ায় ভাষা আন্দোলনে যোগ দিয়ে প্রথম গ্রেফতার হয়ে কারাবারণ করেন। জেল থেকে মুক্ত হয়ে তদানীনত্মন পূর্ব পাকিসত্মান ছাত্রলীগে যোগ দেন। ১৯৬২ সালে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
নূর আলম জিকুর মৃতু্যতে জাতীয় সংসদের স্পীকার এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, ডেপুটি স্পীকার কর্নেল (অব) শওকত আলী, জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি সিরাজ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক, আরেকাংশের সভাপতি আবদুল কাদের হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক বাদল খান, ফিলিসত্মিন প্রত্যাগত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান জিয়াউর কবির দুলু, বাসদের একাংশের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খানসহ বিভিন্ন সংগঠন বিবৃতির মাধ্যমে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। পৃথক শোক বার্তায় তাঁরা শোকসনত্মপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ এবং মরহুমের রম্নহের মাগফেরাত কামনা করেন তাঁরা।

No comments

Powered by Blogger.