বর্ষবরণের সময় হামলা-মিসর ও নাইজেরিয়ায় নিহত ৫১

বর্ষবরণের উৎসবে মেতেছিল সারা বিশ্ব। লাল-নীল বাতি দিয়ে সাজানো হয় লন্ডন, প্যারিস, নিউইয়র্ক, বার্লিনের গুটেনবার্গ গেট, মস্কোর রেড স্কয়ারসহ নানা স্থান ও স্থাপনা। কিন্তু কয়েকটি দেশে সহিংস হামলা এ উৎসবকে শোকাবহ অনুষ্ঠানে পরিণত করেছে।
মিসরে একটি গির্জার সামনে গত শুক্রবার গাড়িবোমা হামলায় কমপক্ষে ২১ জন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়েছে। একই দিন নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজার একটি পানশালায় বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছে।
মিসরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উসমা আবদেল মোনেইম বলেন, উত্তরের আলেকজান্দ্রিয়া নগরীর সিদি বেশর এলাকার আল-কিদিসাইন গির্জার বাইরে একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে ২১ জন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আটজন মুসলমান।
মিসরের অন-টিভিকে প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানায়, গির্জার বাইরে একটি সবুজ রঙের সকোদা গাড়ি দাঁড়ানো ছিল। নববর্ষের প্রার্থনা ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে মধ্যরাতের কিছু সময় পরে লোকজন বেরিয়ে আসছিল। এ সময় গাড়িবোমার বিস্ফোরণ ঘটে। গত বছর নভেম্বরে আল-কায়েদা মিসরের গির্জাগুলোতে হামলার হুমকি দেওয়ার পর গির্জার বাইরে গাড়ি রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ সত্ত্বেও কিভাবে গাড়িটি গির্জার সামনে রাখা হলো তার তদন্ত চলছে।
এখন পর্যন্ত কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি। আলেকজান্দ্রিয়ার মেয়র আদেল লাবিব হামলার জন্য আল-কায়েদাকে দায়ী করেছে। এ ঘটনার পর খ্রিস্টান ধর্মের কপটিক সম্প্রদায়ের লোক রাস্তায় নেমে আসে। গির্জার পার্শ্ববর্তী একটি মসজিদে তারা পাথর ছুড়ে মারে এবং ভেতর ঢুকে পড়ে। এতে মুসলমান ও খ্রিস্টানদের মধ্যে পাথর ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর ওই এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
খ্রিস্টান-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক।
নাইজেরিয়ায় নিহত ৩০
নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজার সানি আবাচে সেনা ব্যারাকের কাছে একটি পানশালায় বোমা হামলায় কমপক্ষে ৩০ জন মারা গেছে। আহত হয়েছে ২৪ জন। তবে পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, হামলায় চারজন নিহত হয়েছে। বোকো হারাম নামের একটি ইসলামী দল হামলার দায় স্বীকার করেছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, শুক্রবার জনপ্রিয় ওই পানশালাটি কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। সবাই এসেছিল বর্ষবরণ উৎসবে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এরিক নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হামলার পরপর লোকজন দিগ্বিদিক ছুটতে শুরু করে। হামলাস্থলের চারপাশে আহত ও নিহতদের দেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। সেনাবাহিনী এসে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং মৃতদেহ সরিয়ে নেয়। হামলার পরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে বোকো হারাম গ্রুপের ৯২ জনকে গ্রপ্তার করেছে।
নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট গুডলাক জনাথন হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এক বিবৃতিতে হামলাকারীদের 'শয়তান' অভিহিত করেছেন।
ফিলিপাইনে নিহত ২
নতুন বছর উদ্যাপন করতে গিয়ে ফিলিপাইনে দুজন মারা গেছে। পটকাবাজি পুড়িয়ে এবং তাজা গুলি চালিয়ে বর্ষবরণ উৎসব পালন করার সময় এ ঘটনা ঘটে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বাজিতে আহত হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ শ এবং কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে গুলিতে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি ও আল-জাজিরা।

No comments

Powered by Blogger.