বিচার বিভাগীয় তদন্ত-সিআইএর বিরুদ্ধে বন্দি নির্যাতনের প্রমাণ পায়নি যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) বিরুদ্ধে আফগানিস্তান ও ইরাকে মার্কিন বন্দিশিবিরে নির্যাতনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই সিআইএর কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগও গঠন করা হবে না। তিন বছর তদন্ত করার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ গত বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছে।
তদন্তের এ ফলকে 'প্রহসন' বলে অভিহিত করেছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।
ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন বন্দিশিবিরের দুই বন্দি মারা যাওয়ার পর সিআইএর বিরুদ্ধে বন্দি নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। ওই দুই বন্দির নাম প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, তাদের নাম গুল রহমান ও মানাদেল আল জামাদি। ২০০২ সালে গুল রহমান আফগানিস্তানে সিআইএ পরিচালিত একটি কারাগারে মারা যায়। আর ২০০৩ সালে ইরাকের আবু গারিব কারাগারে মারা যান জামাদি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তাদের মৃত্যুর সঠিক কারণ উল্লেখ করা হয়নি। এ থেকে অভিযোগ ওঠে, সিআইএ-র নির্যাতনেই এ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রসঙ্গত, ৯/১১ হামলার পর ওই দুজনকে আটক করা হয়।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু করে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জন ডারহাম তদন্ত শুরু করেন। ২০১১ সালের জুনে তিনি তদন্ত বন্ধ করে দেন। তবে এ ঘটনার একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের সুপারিশ করেন ডারহাম। এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার এক বিবৃতিতে বলেন, সন্দেহবশত সিআইএর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা প্রমাণের পক্ষে তদন্তকারী যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য কোনো প্রমাণ পাননি। তাই তিনি তদন্ত অব্যাহত না রাখার সিদ্ধান্ত নেন। 'ডারহাম তার কাজ শেষ করেছেন এবং সিআইএ'র বিরুদ্ধে বন্দি নির্যাতনের প্রাথমিক কোনো অভিযোগ না আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিচার বিভাগ।'
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বিচার বিভাগের এ সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়নের (এসিএলইউ) পরিচালক জামীল জাফের বলেন, 'সিআইএর হেফাজতে বন্দি নিহতের ঘটনায় বিচার বিভাগ কোনো দোষীকেই চিহ্নিত করতে পারেনি। এটা প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়।'
সিআইএর পরিচালক ডেভিড পেট্রাউস বিচার বিভাগের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত থেকেই বেরিয়ে এসেছে সিআইএর কর্মকর্তারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত নয়। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.