সাতক্ষীরায় গভীর রাতে ভূমিহীনদের ওপর বোমা হামলা লুটপাট

জেলার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ীর ভূমিহীন জনপদে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা দফায় দফায় বোমা হামলা চালিয়েছে। ভূমিহীনদের দখলে থাকা প্রায় ৫৪ একরের ঘোলার চরটি দখল নিতে সন্ত্রাসীরা দফায় দফায় ৫০টিরও বেশি বোমা হামলা চালায় বলে এলাকাবাসী জানায়।


রাত আড়াইটার সময় ঘুমন্ত ভূমিহীন পল্লীতে বোমাবাজির ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলার ঘটনায় ভূমিহীন পল্লীর লোকজন প্রতিরোধ গড়ে তুললে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ সময় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় ভূমিহীনরা ৫ বোমাবাজকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ কিছু দেশীয় অস্ত্র। পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান হামলা ও আটকের ঘটনা স্বীকার করে শুক্রবার বিকালে জনকণ্ঠকে বলেন, আটকৃতদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এলাকাবাসী মামলা না করলে পুলিশবাদী মামলা করা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে ঘোলার খাস জমি থেকে ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করতে এলাকার মহিদুল ইসলাম ও আবুল কালামের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন বোমা, রামদা, লাঠি, ঢাল, সড়কি ইত্যাদি দেশী অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা ভূমিহীন পল্লীতে ঘরবাড়ি ভাংচুর, জিনিসপত্র লুট ও ব্যাপক বোমা হামলা চালাতে থাকে। বোমার শব্দে শতাধিক ভূমিহীন পরিবারের ভেতর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসীর চিৎকারে ভূমিহীনরা সংঘবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ঢালী, মিজানুর রহমান, আনিসুর রহমানসহ ভূমিহীনরা দলবদ্ধ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে হামলাকারী দলের সদস্য উপজেলার ঘোলা গ্রামের মাসুম বিল্লাহ, জাহাঙ্গীর, গোলাম মোস্তফা, ফরজ আলী, আবুল কাশেম গাজীকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দা, লাঠি, ঢাল, বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি, বালতি উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার সকালে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ দৌলতুজ্জামান খানসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে জনগণ আটক ৫ সন্ত্রাসীকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। শ্যামনগর থানার ওসি আমির তৈমুর শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় জনকণ্ঠকে বলেন, হামলাকারী সবাই স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থাকে। এ ঘটনায় শ্যামনগর থানায় বিস্ফোরক ও ভাংচুর লুটপাটের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলে তিনি জানান।

No comments

Powered by Blogger.