যে খবর নাড়া দেয়- বৃক্ষসখা

গাছতলায় আসর জমিয়েছেন প্রবীণ গ্রাম্য কবিরাজ। সমবেত উৎসুক জনতার কাছে কবিরাজের প্রশ্ন, ‘বলেন দেখি, গাছ আমাদের কী কাজে লাগে?’ গ্রামবাসী কেউ বলে, ‘গাছ আমাদের ছায়া দেয়,’ কেউ বলে, ‘গাছ আমাদের নানা কাজে লাগে,’ আবার কেউ বলে, ‘গাছ কেটে আমরা আসবাবপত্র বানাই।


’ কবিরাজ মন দিয়ে সব উত্তর শোনেন আর বলেন, ‘আসল কথাটা কেউ কইলা না, মিয়ারা।’ সেই আসল কথাটা কী? গ্রামবাসী মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে।
আসল কথাটা হচ্ছে, এই যে বুকভরে টেনে নিচ্ছি অক্সিজেন। সেটার জোগান দেয় এই গাছ। বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত বহু পুরোনো এই জনসচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন কি আপনাদের মনে পড়ে?
বিজ্ঞাপনে সত্যিই কাজ হয়। গ্রামের লোকজন বুঝে নিয়েছে, গাছ সত্যিই মহা উপকারী। এক দল মানুষ গাছ লাগাচ্ছে। আরেক দল দুরাচার চালু করেছে অভিনব বৃক্ষ কর্তন সংস্কৃতি। গাছ মহা উপকারী। মূল্যবান সম্পদ। তাই কাউকে পথে বসাতে চাও তো ঘরবাড়ি লুট করার দরকার নেই; গাছগাছালি সব কেটে সাফ করে দাও। কী বিচিত্র! কী কুৎসিত!
ছবির মানুষটাকে দেখুন। নয় বছর ধরে তিনি মেহগনি গাছগুলো লালন করেছেন। গাছগুলো সুবজ ডালপালা মেলে বেড়ে উঠেছে। আর এর মধ্যেই...। কতিপয় দুর্বৃত্তের রোষানলে পড়ে ঝরে গেছে ৮০টি তরতাজা সবুজ মেহগনিগাছের প্রাণ। ঘটনাটা ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার। (সূত্র: প্রথম আলো, পৃষ্ঠা: ৫, ২৮ আগস্ট, ২০১২)।
প্রতিশোধ নিতে গাছ হত্যা—এই কুৎসিত কায়দা কীভাবে আমাদের দেশে প্রচলিত হয়ে গেল?
এই বৃক্ষহন্তারকের বিচার কী? গাছের যদি প্রাণ থাকে, তাহলে রাতারাতি এভাবে ৮০টি ‘প্রাণ’ কেড়ে নেওয়ার শাস্তি কী হওয়া উচিত?
—ইকবাল হোসাইন চৌধুরী

No comments

Powered by Blogger.