বের বন্ধুর কাছে পল্লীবন্ধু হেরে গেলেন by আবদুল গাফফার চৌধুরী

বাংলাদেশে এরশাদের জমানায় শিল্পী কামরুল হাসান একটি খেতাব আবিষ্কার ও প্রবর্তন করেছিলেন। এই খেতাবটির নাম বিশ্ব বেহায়া। একটি কার্টুন এঁকে খেতাবটি তিনি তখনকার স্বৈরাচারী শাসক জেনারেল এরশাদকে উপহার দিয়েছিলেন। এরশাদ সাহেব নিজে একটি খেতাব ধারণ করেছিলেন। সেটি হলো পল্লীবন্ধু।


এই খেতাবটি দেশবাসীর কাছে স্বীকৃতি পায়নি। তিনি তাদের কাছে বিশ্ব বেহায়া এই খেতাবে পরিচিত হয়েছিলেন।
তারপর বহু বছর কেটে গেছে। এই খেতাবটি নতুন করে আর কাউকে দেয়া হয়নি। যদিও এই খেতাব লাভের একাধিক যোগ্যপ্রার্থী এখন বাংলাদেশে আছেন। শিল্পী কামরুল হাসানের মৃত্যু হওয়ায় এই খেতাব পাওয়ার যোগ্যপ্রার্থী আর খোঁজা হয়নি, কাউকে দেয়া হয়নি। বর্তমানে অর্ধ নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যকলাপ দেখে কেউ কেউ বলছেন, বিশ্ব বেহায়া এই খেতাবটি যদিও এখনও জেনারেল এরশাদ ধারণ করে আছেন, কিন্তু এখন এই খেতাবটি নোবেল জয়ীর পাওয়া উচিত। তিনি ইতোমধ্যে গরিবের বন্ধু নামে একটি খেতাব নিজেই ধারণ করেছেন। কিন্তু বিশ্ব বেহায়ার ভূমিকায় তিনি বহু আগেই পল্লীবন্ধু এরশাদকে হারিয়ে দিয়েছেন। এক কথায় গরিবের বন্ধুর কাছে পল্লীবন্ধু হেরে গেছেন। সুতরাং বিশ্ব বেহায়া খেতাবটি এই সময়ের জন্য গরিবের বন্ধুকেই দেয়া উচিত।
আমার কোন কোন বন্ধু বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জেনারেল এরশাদের মধ্যে চরিত্রগত একটা মিলও আছে। দু’জনেই স্বৈরতান্ত্রিক চরিত্রের একজন পল্লীবন্ধু সেজে প্রায় দশ বছর ধরে বাংলাদেশে সামরিক স্বৈরতন্ত্র কায়েম রেখেছিলেন। আরেকজন ত্রিশ বছরের বেশি সময় ধরে গরিবের বন্ধু সেজে কয়েক লাখ গরিব নারী ও পুরুষের ওপর তার একক অর্থনৈতিক স্বৈরতন্ত্র চাপিয়ে রেখেছিলেন। দু’জনের কেউ স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ত্যাগ করেননি। দু’জনকেই ক্ষমতা থেকে সরাতে হয়েছে। তবে দু’জনেরই কার্যকলাপে প্রমাণিত হয়েছে, বিশ্ব বেহায়ার ভূমিকার প্রতিযোগিতায় একজন আরেকজনকে হারিয়ে দিয়েছেন এবং জয়টি অর্জন করেছেন। গরিবের বন্ধুই।
গত কয়েকদিন যাবত ঢাকার বড় বড় কাগজগুলোর পাতা ওল্টালেই দেখা যাবে বিশাল বিশাল বিজ্ঞাপন অথবা বিজ্ঞপ্তি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে সেটি ইউনূস সেন্টার থেকে পাঠানো। এতদিন এই সেন্টারটির নাম শোনা যায়নি। এখন শোনা যাচ্ছে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এই বিজ্ঞপ্তি প্রশ্নোত্তরমূলক। ড. ইউনূস নিজে অথবা তার অধীনস্থ ব্যক্তিরা নিজেরাই প্রশ্ন সাজিয়ে তার জবাব দিয়েছেন। বলা হয়েছে ‘গ্রামীণ ব্যাংক প্রসঙ্গে সমালোচকদের কিছু প্রশ্ন ও প্রকৃত তথ্য।’ প্রকৃত তথ্যের নামে পরিসংখ্যানের জগাখিচুড়ি পাকিয়ে এমন ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছে যে, যাতে সেই ধূম্রজালের আড়ালে তাঁর ত্রিশ বছরের অধিকালের ডিকটেটরশিপ এবং তাঁর রাজনৈতিক অভিসন্ধি ও অর্থনৈতিক অনিয়মগুলো ঢাকা পড়ে যায়।
নাৎসি জার্মানীর গোয়েবলস সাহেব বলতেন, ‘একটা মিথ্যা একশ’বার বললে সত্য হয়ে যায়। তাতেও যদি সত্যকে সত্য করা না যায়, তাহলে juggling of statistics বা পরিসংখ্যানের জগাখিচুড়ি পাকিয়ে সকলের চোখ ধাঁধিয়ে দাও, যাতে আসল সত্যটি কারও চোখে না পড়ে।’ বাংলাদেশের ইউনূস সেন্টার থেকে পাঠানো ঢাউস মার্কা বিজ্ঞাপনে এই কাজটিই করা হয়েছে।
এই বিজ্ঞাপন প্রচারে কতো অর্থ ঢালা হয়েছে তা আমি জানি না। ঢাকার মিডিয়া ড. ইউনূসের প্রতি ভক্তি ও আস্থার জন্য এই বিজ্ঞপ্তি বিনা পয়সায় ছেপেছে, না বিজ্ঞাপনের ধার্র্যকৃত মূল্য নিয়ে ছেপেছে, তা আমার জানা নেই। তবে ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিক আমাকে জানিয়েছে, বিজ্ঞাপন কথাটি উল্লেখ না করলেও বিজ্ঞাপনের নির্দিষ্ট অর্থ নিয়েই ইউনূস-সেন্টারের পাতা জোড়া বিজ্ঞপ্তি তারা ছেপেছেন। ঢাকায় ইংরেজী ও বাংলা অধিকাংশ দৈনিকে এ ধরনের পাতা জোড়া বিজ্ঞাপন যদি অর্থমূল্যে ছাপা হয়ে থাকে, তাহলে সেই অর্থের পরিমাণ ভেবে দ্বিধাদ্বন্ধে ভুগছি। অবশ্য লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন। গৌরী সেন থাকতে ইউনূস-সেন্টারের ভাবনা কি?
অঢেল অর্থ ঢেলে মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন ছড়িয়েই ড. ইউনূস ক্ষান্ত হননি, তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবে দেশের কিছু মুখচেনা ব্যক্তির দ্বারা সংবাদ সম্মেলনের ব্যবস্থা করে গ্রামীণ ব্যাংক কমিটি-জাতীয় একটি কমিটি গঠনেরও উদ্যোগ নিয়ে ফেলেছেন। গ্রামীণ ব্যাংক রক্ষা নয়, নিজেকে রক্ষার জন্য ড. ইউনূস যা শুরু করেছেন, তা পল্লীবন্ধু এরশাদের এক সময়ের নির্লজ্জতাকে অনেক আগেই ছাড়িয়ে গেছে। সুতরাং বিশ্ববেহায়া এই শিরোপাটি ড. ইউনূস যে এরশাদ সাহেবের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন একথাটি অনায়াসে বলা যায়।
আমার কাছে বিস্ময় লাগে, গ্রামীণ ব্যাংকের কর্তৃত্ব থেকে সয়ে যাওয়া এবং দেশের উচ্চ আদালতে সরকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করে হেরে যাওয়ার পর কিছুদিন তিনি অনেকটা চুপচাপ ছিলেন। তারপর হঠাৎ তিনি গ্রামীণ ব্যাংকে কেন্দ্র করে নোবেল জয়ীর সুউচ্চ আসন থেকে নেমে এসে এই নির্লজ্জ কাদা ছোড়াছুড়িতে লিপ্ত হলেন কেন? তা কি গ্রামীণ ব্যাংকের গত ত্রিশ বছরের অনিয়ম ব্যবস্থা সম্পর্কে সরকার তদন্ত কমিটি গঠনের যে ঘোষণা দিয়েছে তার প্রতিক্রিয়া এই ঘোষণার পরই তিনি এমন মরিয়া হয়ে উঠলেন কেন? তা কি গ্রামীণ ব্যাংক রক্ষা, না নিজেকে রক্ষার জন্য? এই প্রশ্নটির জবাব ইউনূস- সেন্টারের বিজ্ঞপ্তিতে নেই।
একজন নোবেল জয়ীর আত্মমর্যাদাবোধ সম্পর্কে সচেতন থাকলে ড. ইউনূস অবশ্যই গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ নিয়ে সুপ্রীমকোর্টে নিজে মামলা দায়ের করে হেরে যাওয়ার পর তা মেনে নিয়ে নিশ্চুপ থাকতেন। তিন সরব ও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারতেন, যদি দেখতেন তাঁর প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকটি ভালভাবে চলছে না কিংবা সেটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কিন্তু এর কোনটিই হয়নি।
নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের অভিমত, ব্যাংকটি ভালই চলছে। তার সুদের হার কমেছে। ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ে নির্যাতন বন্ধ হয়েছে। কিন্তু আদায় নিয়মিত হচ্ছে। সবচাইতে বড় কথা, গ্রামীণ ব্যাংকের মুনফা গ্রামীণ ব্যাংকেই থাকছে তা দিয়ে একটার পর একটা নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে সাবেক এমডি সাহেবের কর্তৃত্বে গোটা মালিকানায় যাচ্ছে না। সাবেক এমডি সাহেবের পছন্দসই নারীদের দ্বারা গঠিত পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতা তাতে কিছুটা খর্ব হতে পারে, কিন্তু ব্যাংকটির কয়েক লাখ গরিব শেয়ার হোল্ডারের স্বার্থ ও অধিকার তাতে রক্ষা পাবে।
ব্যাংকটির এই অবস্থা দেখে ড. ইউনূসের খুশি হওয়ার কথা ছিল। তিনি তা হননি। তিনি বাঘ দেখার আগেই চিৎকার জুড়ে দিয়েছেন। বাঘ আসছে, বাঘ আসছে। অর্থাৎ ব্যাংকটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এই অপ্রমাণিত অভিযোগটি তুলেই তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হননি। তিনি নিজেকে ভিকটিম সাজিয়ে, হাসিনা সরকারকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা দ্বারা এই অপরাধীকে সাজা দেয়ার নামে গোটা বাংলাদেশকেই সাজা দেয়ার জন্য সারাবিশ্বে জনমত সৃষ্টির প্রয়াস চালাচ্ছেন।
তাঁর এই প্রচেষ্টা যদি দেশের ভেতরে এবং জাতীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকত, তাহলে আপত্তির কিছু ছিল না। কিন্তু নিজের দেশের সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণায় তিনি বিদেশী শক্তিকেও এনে নিজের পক্ষে যুক্ত করেছেন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে এই বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ এতো নগ্ন হয়ে উঠেছে যে, তাতে দেশটির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবোধক হয়ে উঠেছে। গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকার যে সিদ্ধান্তই নেন, তার প্রত্যেকটিতেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। কথা বলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত। বার বার শেখ হাসিনার কাছে চিঠি লেখেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর মাজেজাটা কি? ইউনূস-সেন্টারের বিজ্ঞাপনে তো এই প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায় না।
সবচাইতে নির্লজ্জতার বিষয় এই যে, একটি ব্যাংকের পরিচালনা ব্যবস্থায় মাত্র পরিবর্তন আনা হয়েছে, তাও দেশের নিয়ম কানুন মেনে। ব্যাংকটি বন্ধ করা হয়নি, বা বন্ধ হওয়ার অপেক্ষাও দেখা দেয়নি। তারপরও গরিবের অধিকার খর্ব হওয়া, নারীর ক্ষমতায়ন নষ্ট হওয়ার ধুয়া তোলা হয়েছে। বিশ্বের একটি সুপার পাওয়ার, ইউরোপের অধিকাংশ দাতা দেশ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে এই যুদ্ধে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো হয়েছে।
কিসসা তো এখানেই শেষ নয়, হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারযুদ্ধে লন্ডনের ইকোনমিস্ট, আমেরিকার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতো প্রভাবশালী কাগজগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে। লন্ডনের বাজারে গুজব এ ব্যাপারেও আন্তর্জাতিক চাপ ও টাকার খেলা নেপথ্যে কাজ করছে। দেশের দুটি প্রভাবশালী ইংরেজী ও বাংলা দৈনিক তো ইউনূস সাহেবের কব্জায়। তারা ইউনূস সাহেবকে সরকারের ভিকটিম সাজিয়ে অনবরত প্রচার চালাচ্ছে।
তাতেও ড. ইউনূস সন্তুষ্ট থাকেন না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জামায়াত-বিএনপিপন্থী যতো অধ্যাপক, প্রভাষক আছেন, তার সমর্থন সুশীল সমাজের যতো বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী-অর্থাৎ এমন কোন মহল নেই, যাদের দ্বারা প্রত্যহ মিডিয়ায় বিবৃতি দেয়াচ্ছেন না। প্রেস কনফারেন্স তো একটার পর একটা চলছেই। এখন শুরু হয়েছে মিডিয়াজুড়ে বিজ্ঞাপন প্রচার। নিজেরাই প্রশ্ন বানিয়ে নিজেরাই উত্তর দিয়ে সংখ্যাতত্ত্বের আড়ালে ত্রিশ বছরের বেশি সময়ের অনিয়ম, অব্যবস্থা ঢাকা দেয়ার চেষ্টা।
একটা ব্যাংকের পরিচালনা নিয়ে এতো কিছু করার দরকার ছিল কি, না আছে? ফলে অনেকেই সন্দেহ করছে? এটা ব্যাংক উদ্ধারের যুদ্ধ নয়; এটা ব্যাংক সম্পর্কিত তদন্ত বন্ধ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠা যুদ্ধ। এটা ব্যাঙ্ক সম্পর্কিত তদন্ত বন্ধ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠা যুদ্ধ। এটা ড. ইউনূসের রাজনৈতিক যুদ্ধও। তাই তাঁর পক্ষে এসে দাঁড়িয়েছে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা এই যুদ্ধের বিরোধী ছিল, সেই মহলগুলোরই অধিকাংশ লোক। গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কিত এই যুদ্ধে আজ পরিষ্কারভাবে দু’টি শিবির। একটির অধিকাংশ লোক মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের সমর্থক শিবিরের। অন্যটিতে জমায়েত ঘটেছে মুক্তিযুদ্ধে আদর্শের বিরোধী শিবিরের অধিকাংশ লোকের। ড. ইউনূস এই দ্বিতীয় শিবিরের সৈন্যাপত্য গ্রহণ করেছেন।
এই সত্যটি সম্প্রতি তুলে ধরেছেন হিউ সিনক্লেয়ার (Hugh sinclair) নামের এক পশ্চিমা মাইক্রোফাইনান্স বিশেষজ্ঞ। তার একটি নিবন্ধ ঢাকায় ইংরেজী দৈনিক নিউএজে’ ২৯ আগস্ট পুনর্মুদ্রিত হয়েছে। নিবন্ধটির শিরোনামে A question for Muhammad Yunus (মোহাম্মদ ইউনূসের জন্য একটি প্রশ্ন)। আমি জনকণ্ঠের প্রত্যেক পাঠককে এই নিবন্ধটি পড়ে দেখার জন্য অনুরোধ জানাই। তাহলেই তারা ঢাকার কাগজে বড় বড় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রশ্নোত্তরের নামে আসল প্রশ্নের জবাব এড়াবার জন্য নোবেল জয়ী চালটি ধরতে পারবেন।
হিউ সিনক্লেয়ার স্পষ্টই বলেছেন, Yunus defence against the Bangaldesh government is largely political. (বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ইউনূসের আত্মসাফাই বহুলাংশেই রাজনৈতিক)। তিনি আরও দেখিয়েছেন, বিশ্ব ধনবাদী গোষ্ঠীর স্বার্থ ও আধিপত্যের সঙ্গে তার নাড়ির যোগ। ফলে বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের সরকার হস্তক্ষেপ করায় এই নাড়ির যোগে টান পড়েছে এবং গোটা বিশ্বের কায়েমি স্বার্থ ও ইউনূসকে রক্ষার মার মার শব্দে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছে।
হিউ তাঁর নিবন্ধে দেখিয়েছেন, গরিবের বন্ধু সেজে গরিবের রক্ত শোষকেরা কি অবিশ্বাস্য হারে সুদ আদায় করছে তাদের কাছ থেকে। ড. ইউনূস তাদের সঙ্গে যুক্ত এবং অত্যন্ত চাতুর্যের সঙ্গে এই সুদের হার সম্পর্কে কথা বলতেও সে সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণে নিষ্ক্রিয়। বরং এই আন্তর্জাতিক শোষকদের সঙ্গে তিনি সরাসরি যুক্ত। বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার নিয়ে তাঁর বক্তব্যও শুভঙ্করের ফাঁকি। হিউ সিনক্লেয়ারের লেখায় এই ফাঁকিটি দেখানো হয়েছে। আমি অপেক্ষায় আছি, ইউনূস-সেন্টার হিউ সিনক্লেয়ারের বক্তব্যের জবাবেও একটি ঢাউস বিজ্ঞাপন ঢাকার কাগজে প্রকাশ করে কিনা।

লন্ডন ৩১ আগস্ট, শুক্রবার ॥ ২০১২

No comments

Powered by Blogger.