ঈদের ড্রেস ম্যাচিং by তৌফিক অপু

ফ্যাশন মানে হচ্ছে পরিবর্তন। আর এই পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের পোশাক। তবে ফ্যাশনের কথা এলেই একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে মেয়েদের পোশাকের কথা। নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাকের মাধ্যমে নিজেকে আলাদা ও ব্যতিক্রমী হয়ে উঠবার চেষ্টায় মেয়েরা আকর্ষণীয় এসব পোশাক তৈরি করে।


আর ঈদ এলে তো কথাই নেই। তাই বর্তমানে মেয়েরা ফ্যাশন হাউসে তৈরি করা পোশাক ছাড়াও নিজের ডিজাইন করা পোশাকগুলো পরতে বেশি পছন্দ করে। এজন্য পোশাকে ভিন্নতা ও নতুনত্ব আনতে বিভিন্ন ধরনের লেইস, ব্রুজ, ইয়ক, বাটন, পাইপিং প্রভৃতি ব্যবহার করে।
গতানুগতিক ধারার বাইরে একটু ব্যতিক্রমী লুক দেওয়ার প্রয়াসে শুরু হয়েছিল লেইসের ব্যবহার। কিন্তু এর আধিপত্য যেন দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সালোয়ার কামিজ, ফতুয়া, টপস বা শাড়ি সব ধরনের পোশাকেই চলছে বিভিন্ন লেইসের ব্যবহার। তাই আপনি চাইলে আপনার পোশাকে চাকচিক্যময় লেইস, ব্রুজ, বাটন, অথবা ইয়ক ব্যবহার করে সাধারণ পোশাকও জমকালো ও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনি যেই লেইসটি ব্যবহার করছেন তা যেন আপনার কাপড়ের সঙ্গে ফুটে ওঠে। একই কালারের লেইস ব্যবহার না করা ভাল। যেহেতু মেয়েদের পোশাকের বড় একটা অংশজুড়ে থাকে সালোয়ার কামিজ। তাই ফ্যাশন সচেতন তরুণীরা এখন তাদের কামিজে রুচিশীল লেইস অথবা ব্রুজ ব্যবহার করে। কামিজের গলার জন্য ব্রুজ ব্যবহার করায় ভাল। বাজারে এসব ব্রুজ আপনি ২০০-২২০০ টাকায় পেতে পারেন। এক্ষেত্রে গলার কাট অনুযায়ী লেইসও ব্যবহার করা যেতে পারে। এখানে আপনার রুচি ও সৃজনশীলতা ব্যবহার করে কামিজের ডিজাইন করতে পারেন।
ফ্যাশন হাউস কামরাঞ্জির ডিজাইনার মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে লেইসের ব্যবহার এতটাই জনপ্রিয় যে, এখন পোশাকের প্রয়োজনে লেইস নয় বরং লেইসের কথা মাথায় রেখেই পোশাক তৈরি করা হয়। তিনি আরও জানান, কেউ চাইলে পাশাপাশি লেইস ব্যবহার করেও নতুন ডিজাইন তৈরি করতে পারেন, যা আপনার পোশাককে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতারাও ফ্যাশন হাউসে তৈরি পোশাক থেকে নিজের ডিজাইন করা পোশাকগুলোই বানাতে বেশি আগ্রহী। নিউ মার্কেটের ভাই ভাই লেইসের স্বত্বাধিকারী মনির জানান, এখন সালোয়ার কামিজ, ফতুয়া, টপস, শাড়ি এমনকি বোরকা বা হিজাবেও ব্যবহার করছে লেইস। তাই বাজারে বিভিন্ন রকমের লেইসের মধ্যে আপনাকে বেছে নিতে হবে আপনার কাপড়ের সঙ্গে মানানসই লেইসটি। মার্কেটে পাওয়া বিভিন্ন লেইসের মধ্যে কুশিকাঁটা লেইস, নেট লেইস, পার্ল লেইস, কাতান লেইস, ভেলভেট লেইস, টিস্যু লেইস পাওয়া যাবে ২০-২৮০ টাকার মধ্যে। চুমকির লেইস, পাথর বা স্টোনের লেইস, বলবল লেইস, চিকেনের লেইস পাবেন ৪০-৫০০ টাকায়। ডলার লেইস ও কেমিক্যাল লেইস মিলবে ৮০-৩৫০ টাকায়। ঝুনঝুনি ও এ্যাম্বডারি লেইস পাবেন ৭০-৪০০ টাকার মধ্যে। এজন্য সালোয়ার কামিজ বা ফতুয়ার ভিন্ন মাত্রা আনতে আপনিও বসিয়ে নিতে পারেন দৃষ্টিনন্দন একটি লেইস। তবে এগুলো বসানোর ক্ষেত্রে পোশাকের ডিজাইন কিভাবে করতে চাচ্ছেন তা মাথায় রাখা জরুরী।
ফ্যাশনবোদ্ধাদের মতে কামিজ বা ফতুয়ায় পাড়ে বসাতে পারেন চিকেন লেইস, যা আপনার পোশাকটি আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। তবে ইয়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। শুধু শিফন কাপড়ে ইয়ক বেশি সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন হয়। এ ছাড়া ওড়না ও কামিজের হাতে বসানোর জন্য বিশেষ কিছু লেইস ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে পাইপিং বা কুচির লেইস বসাতে পারেন। ওড়নার দু’পাশে ঝুলিয়ে দিতে পারেন পুঁথি বা চুমকির লেইস।
লেইস, ব্রুজ অথবা ইয়ক ব্যবহার করে যে পোশাকই বানান না কেন, শুধু খেয়াল রাখবেন আপনাকে যেন বেমানান না লাগে। মনে রাখা জরুরী, নিজের ব্যক্তিত্বকে যথেষ্ট আধুনিক ও ফ্যাশনেবল করে উপস্থাপন করতে পোশাকের রঙ, ডিজাইন সত্যিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ছবি : আরিফ আহমেদ

No comments

Powered by Blogger.