লিমনের পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ- মামলাটি থানায় লিপিবদ্ধ হচ্ছে না, তদন্তের নির্দেশ

র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেনের মা-বাবা, ভাইসহ ১০ জনের নামে হত্যা মামলা দায়েরের আদেশ সংশোধন করেছেন আদালত। ফলে হত্যা মামলাটি আপাতত থানায় লিপিবদ্ধ হচ্ছে না। রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদেশটি সংশোধন করা হয়।


লিমন ও তার মায়ের ওপর হামলার পর র‌্যাবের সোর্স হিসেবে পরিচিত ইব্রাহিম হাওলাদার নালিশি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলী গতকাল শুক্রবার আদেশ সংশোধনের কথা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
সংশোধিত আদেশে ইব্রাহিম হাওলাদারের শ্যালক ফোরকান হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় ২১ আগস্ট রাজাপুর থানায় করা অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে ইব্রাহিমের করা নালিশি মামলা (ফোরকান হত্যার অভিযোগে) সংযুক্ত করে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত ও রাজাপুর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০ আগস্ট ঈদের দিন বিকেল পাঁচটায় লিমন ও তার পরিবারের ওপর হামলা চালান ইব্রাহিম হাওলাদার। এর এক ঘণ্টা পর মারা যান ফোরকান। পরদিন ইব্রাহিমের স্ত্রী ও ফোরকানের বোন লিলি বেগম ফোরকানের মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য থানায় আবেদন করেন। থানা আবেদনটি অপমৃত্যু মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ করে।
কিন্তু অপমৃত্যু মামলার বিষয়টি গোপন করে দুই দিন পর ইব্রাহিম হাওলাদার বাদী হয়ে ফোরকানকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নুসরাত জাহানের আদালতে নালিশি মামলা করেন। এতে লিমনের মা-বাবা, ভাই-মামাসহ গ্রামের ১০ জনকে আসামি করা হয়। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে ওসিকে এজাহার নেওয়ার নির্দেশ দেন।
আদালতের আদেশ ও ফোরকানের মৃত্যুর বিষয়ে করা অপমৃত্যু মামলা পর্যালোচনা করে ওসি তোফাজ্জেল হোসেন ২৯ আগস্ট জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে একটি আবেদন করেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, যেহেতু ফোরকানের মৃত্যুর বিষয়ে তাঁর বোন লিলি বেগমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও পাওয়া গেছে। কাজেই ন্যায়বিচারের স্বার্থে সার্বিক বিষয়টি পরবর্তী আদেশের জন্য আদালতকে অবহিত করা হলো। আদালত ওসির আবেদন পর্যালোচনা করে একই দিন ইব্রাহিমের করা নালিশি আবেদন এজাহার হিসেবে নেওয়ার আদেশ সংশোধন করে অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে তদন্তের আদেশ দেন।
আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন, ইব্রাহিম হাওলাদারের নালিশি মামলায় ফোরকান মারা যাওয়ার পর রাজাপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়েরের বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছিল। তাই আদেশ সংশোধন করা হলো।
রাজাপুর থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা আ. হালিম তালুকদার বলেন, ‘আদালতের সংশোধিত আদেশ আমাদের হাতে পৌঁছেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত করা হবে।’

No comments

Powered by Blogger.