কৃষকের হাসি-কান্না by শিখা ব্যানার্জী

প্রতিবছরই ফসলের বাম্পার ফলন ফলিয়েও কৃষক কেঁদে আকুল হচ্ছে। খুবই কষ্ট লাগে তখন। এরকম কেন হবে? এখনও দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছে দেশের লাখ লাখ মানুষ। কৃষিখাতে সরকার যে একেবারে উদাসীন ,তা কিন্তু নয়, তবে কথায় বলে নাÑ সব ভাল তার, শেষ ভাল যার।এখানেই ব্যর্থতা।


শুরুতে সার, ডিজেল কিংবা স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা হয় ঠিকই, কিন্তু যখন ফসলে ফসলে মাঠ ভরে যায়, তখন তাদের কর্মতৎপরতা তেমন লক্ষ্য করা যায় না। তাই ফসল সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত হিমাগার তৈরির ব্যাপারে তাদের অবহেলা লক্ষ্য করার মত। যার কুফল ভোগ করে চাষীরা। চাষের প্রয়োজনে কৃষকরা বিভিন্ন এনজিও কিংবা গ্রামের মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে থাকে। তাদের আত্মবিশ্বাস থাকে যে, তারা তাদের নিজের কাজে যেহেতু কখনও অবহেলা করে না, প্রকৃতি বিরূপ না হলে তাদের ফলানো ফসলের দামেই সব ঋণ শোধ করে তারা নিজের পায়েই সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে। উন্নত দেশে তেমনটাই হয়ে থাকে। কখনও শোনা যায়নি সেসব দেশে কোন ফসল ক্ষেতে বসেই নষ্ট হয়েছে, শোনা যায়নি চাষীরা রাগে-দুঃখে কষ্টার্জিত ফসল নদীতে ফেলে দিয়েছে কিংবা গরু-ছাগলকে খাইয়ে নিজেরা অঝোর ধারায় কেঁদেছে । কারণ সেসব দেশে সংশ্লিষ্টদের তীক্ষè নজর থাকে ফসল রক্ষণাবেক্ষণের উপর। তারা মাঠ থেকেই ফসলের সরবরাহ সুনিশ্চিত করে, উপযুক্ত পরিবেশে সংরক্ষণের সুব্যবস্থা করে । ফলজাতীয় দ্রব্যাদির বিবিধ ব্যবহার নিশ্চিত করে দেশের অথনীতির চাকা সচল রাখে।
আমাদের দেশে ঠিক উল্টোটাই ঘটে থাকে। এই যখন অবস্থা তখন আলোর দিশারী হয়ে পথ দেখাতে এসেছেন দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার প্রকৌশলী দিলীপ কুমার সরকার। তিনি নতুন ধরনের বিদ্যুৎবিহীন এক হিমাগার নির্মাণ করেছেন । তার নির্মিত এই হিমাগারে আলু-সবজি ও বিভিন্ন কাঁচামাল প্রায় ৬মাস প্রাকৃতিক উপায়ে সতেজ রাখা যাবে।
এই প্রাকৃতিক হিমাগারের নির্মাণশৈলীতে রয়েছে বাঁশ,খড় ও মাটি।এছাড়া এতে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বাতাস যাতায়াত করতে পারে । এটি দৈর্ঘ্যে ৬০ ফুট, প্রস্থে ৩০ ফুট ও উচ্চতায় ৯ফুট।
বিশেষজ্ঞরা স্বাগত জানিয়েছেন প্রকৌশলী দিলীপ কুমারকে তার এই অনবদ্য সৃষ্টির জন্য, তাঁরা বলেছেন, দেশে এখনও ২/৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে, আর এই প্রাকৃতিক হিমাগারে কোন বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়ে না,অথচ দীর্ঘ ৬মাস অনায়াসে আলু ও নানাবিধ সবজি সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করা যায়। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, আমাদের এই দারিদ্রপীড়িত দেশে এধরনের একটি প্রযুক্তি অত্যন্ত সময়োপযুগী ও গ্রহনীয়।
ংযরশযধ২৩১৯৬০@ুধযড়ড়.পড়স

No comments

Powered by Blogger.