চীনা কোম্পানিকে বিবেচনা করতে লিখে বিশ্বব্যাংক কোন দোষ করেনি- দুদক চেয়ারম্যান

দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে চীনা কোম্পানিকে বিবেচনার জন্য বিশ্বব্যাংকের সুপারিশের মধ্যে কোন অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাবে কুমিল্লা জিলা স্কুলের ১৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তিনি। দুদক চেয়ারম্যান এ বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ওদের (চীনা কোম্পানি) কাজ পাইয়ে দিতে হবে বিশ্বব্যাংক তা বলেনি। বলেছে তাদের যদি যোগ্যতা থাকে তাহলে যেন বিবেচনা করা হয়। কেউ যদি আবেদন নিবেদন করে এবং সেটি যদি বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানানো হয়, এর মধ্যে তো আমি দোষের কিছু দেখি না বলে মন্তব্য করেন গোলাম রহমান।
গোলাম রহমান বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক হিসেবে চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন নামে একটি চীনা প্রতিষ্ঠান পদ্মা সেতু মূল্যায়ন কমিটির কাছে নিজেদের নাম প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু তাদের উপস্থাপিত দালিলিক তথ্যউপাত্ত সঠিক না হওয়ায় তা গ্রহণ করেনি মূল্যায়ন কমিটি।
বিশ্বব্যাংকের সুপারিশ করা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে গোলাম রহমান বলেন, তদন্ত থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তারা (চীনা কোম্পানি) দালিলিক প্রমাণের মধ্যে তাদের অতীত কনস্ট্রাকশনের যে ছবিটি দিয়েছে তা ক্যালিফোর্নিয়ার অকল্যান্ড ব্রিজের ছবি। এই সেতুটি অনেক পুরনো এবং কোন চীনা কোম্পানি এটি তৈরি করেনি। এই তথ্যটি তাদের জানানো হলে তারা নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে এবং তাদের স্থানীয় এজেন্টের এজেন্সিশিপ বাতিল করে। এখানে বিশ্বব্যাংক কোন অনৈতিক কিছু করেছে বলে আমার মনে হয় না।
ঠিকাদার প্রাক যোগ্যতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে দুর্নীতির যে অভিযোগ বিশ্বব্যাংক করেছে তার কোন ভিত্তি পাওয়া যায়নি বলে পুনরায় উল্লেখ করেন গোলাম রহমান। তিনি বলেন, দুর্নীতির কোন দালিলিক প্রমাণ না পাওয়ায় ওই অনুসন্ধান ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে। এ ছাড়া কানাডিয়ান কোম্পানি এসএমসি লাভলিনের গ্রেফতারকৃত একজন কর্মকর্তার নোটবুকে সম্ভাব্য ঘুষ প্রদানের জন্য যে কয়েকটি নাম উল্লেখ রয়েছে সে বিষয়েও দুদক অনুসন্ধান করছে বলে জানান তিনি।
পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত তিনটি বেসরকারী টেলিভিশন এবং একটি ইংরেজী দৈনিকের নাম উল্লেখ করে ক্ষোভের সহিত গোলাম রহমান বলেন, আমি যা বলিনি তা ওই তিনটি চ্যানেল ও একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছে।
২৯০ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ১২০ কোটি ডলার দেয়ার কথা ছিল। জাইকার দেয়ার কথা ৪০ কোটি ডলার। দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে দাবি করে বিশ্বব্যাংক তাদের অর্থায়ন বাতিল করলেও জাইকা এখনও চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এদিকে সরকার নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে অর্থ সংগ্রহ করা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে দেশের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসহ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণ তহবিলে অর্থ জমা দিয়েছে।
প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত কুমিল্লা জিলা স্কুলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা আক্তার, কুমিল্লা জিড়া স্কুল এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব আনোয়ার ফারুক। এ ছাড়া স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান থেকে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানসূচী ঘোষণা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

No comments

Powered by Blogger.