বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা শুরু, পরীক্ষার্থী ৩ লাখের ওপরে

সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই শুরু হয়েছে অষ্টম বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন বা প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা। বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীনে শুক্রবার প্রথম দিন স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হবে কলেজ পর্যায়ের নিবন্ধন পরীক্ষা।


শুক্রবার শিক্ষা সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান আশীষ কুমার সরকার, সদস্য (পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন) ছামেনা বেগমসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এবারের এ পরীক্ষায় সারাদেশের তিন লাখ ১৩ হাজার ১৮৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন। যাদের মধ্যে দুই লাখ এক হাজার ৩২৪ জন পুরুষ এবং এক লাখ ১১ হাজার ৮৬০ জন মহিলা। স্কুল পর্যায়ে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা এক লাখ ৯৭ হাজার ২৯৯ জন এবং কলেজ পর্যায়ে এক লাখ ১৫ হাজার ৮৮৫ জন। প্রার্থীদের মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এর মধ্যে ১০০ নম্বরের আবশ্যিক বিষয় (বাংলা, ইংরেজী, অংক ও সাধারণ জ্ঞান) এবং ১০০ নম্বরের ঐচ্ছিক বিষয় (যে বিষয়ে শিক্ষক হতে চান)। মোট চার ঘণ্টার পরীক্ষার মধ্যে প্রথম এক ঘণ্টা আবশ্যিক বিষয় এমসিকিউ পদ্ধতিতে এবং পরবর্তী তিন ঘণ্টা ঐচ্ছিক বিষয়ের লিখিত (বর্ণনামূলক) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে এ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। এদিকে পরীক্ষার আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় ৩৯ জনকে প্রবেশপত্র দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান আশীষ কুমার সরকার বলেছেন, আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি সর্বোচ্চ যত জনকে দেয়া যায় এডমিট কার্ড। এমনকি আমার ঢাকার বাইরে পরীক্ষা দেখতে যাবার পরিকল্পনা বাতিল করেছি। গভীর রাত পর্যন্ত অফিসে থেকেছি। তিনি জানান, আগামী বছর থেকে যাদের আবেদন অসম্পূর্ণ তাদের আগেই জানিয়ে দেয়া হবে এবং তাদের আবেদনের সময় জমা নেয়া ফির টাকা সঙ্গে সঙ্গেই ফিরিয়ে দেয়া হবে। এ বছর কয়েক হাজার আবেদনকারী এডমিট কার্ড পায়নি। শেষ সময়ে জানতে পেরে তাদের হতাশা বেড়েছে। মনও খারাপ হয়েছে। জানা গেছে, নির্দিষ্ট সময়ে আবেদন না করা, আবেদনের হার্ড কপি না পাঠানো, এক বিষয়ের শিক্ষার্থী হয়েও অন্য বিষয়ের জন্য আবেদন করাসহ নানা ভুলের কারণে প্রবেশপত্র পাননি ২০ হাজার পরীক্ষার্থী। দুু’দিন ধরে এ নিয়ে প্রবেশপত্র না পাওয়া পরীক্ষার্থীরা এনটিআরসিএ কার্যালয়ে ভিড় করছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে কয়েক শ’ পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্রের জন্য উপস্থিত হয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, নীতিমালা অনুসারেই অনেকে বাদ পড়েছেন। সঠিক আবেদনকারী কারও আবেদনই বাতিল হয়নি। নানা ত্রুটির কারণে গত বছর অন্তত ১৫ হাজার পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র পাননি। গত বছর পরীক্ষা দিয়েছিল দুই লাখ। এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে প্রবেশপত্র না পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও। এনটিআরসিএ জানিয়েছে, ১০ হাজার আবেদনপত্রের হার্ডকপি ‘জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষের’ (এনটি আরসিএ) কাছে পৌঁছেনি। এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, প্রতিবছরই এ ধরনের সমস্যা কিছু হয়ে থাকে। আবেদনপত্র ঠিকঠাক থাকলে কারও আবেদনই বাতিল হয় না। কিন্তু কিছু প্রার্থী এই বিষয়টি বুঝতে চাচ্ছে না। তিনি জানান, এই পরীক্ষার কোন বয়স নেই। একবার দিতে না পারলে পরবর্তীতে দিতে পারবেন। সনদের মেয়াদ থাকে ৫ বছর।

No comments

Powered by Blogger.