নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী আদুরীর মামলার রায় আজ

রাজধানীর পল্লবীর ডিওএইচএস এলাকায় গৃহকর্ত্রীর হাতে নির্যাতনের শিকার সেই আদুরীর মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ মঙ্গলাবার। ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার এ রায় ঘোষণা করবেন। পটুয়াখালীর মেয়ে আদুরীর শরীরের ক্ষত চিহ্নগুলো এখনও স্পষ্ট হয়ে আছে। ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্লবীর ডিওএইচএস এলাকার একটি ডাস্টবিন থেকে অর্ধমৃত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছিল। পটুয়াখালী সদর উপজেলার জৈনকাঠির কৌরাখালি গ্রামের মৃত খালেক মৃধার ছোট মেয়ে আদুরী। অভাবের কারণে মা সাফিয়া বেগম ৯ সন্তানের সবাইকে গৃহপরিচারিকার কাজে পাঠান। আদুরীকে প্রতিবেশী চুন্নু মীরার সহযোগিতায় রাজধানীর গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদীর বাসায় পাঠানো হয়। তবে নানান অজুহাতে নদীর অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয় সে। নির্যাতনে সহযোগিতা করেন নদীর মা ইসরাত জাহান। দুই বেলা খাবারের বদলে তার মুখে মরিচের গুঁড়ো ঢেলে দেয়া হতো। এছাড়াও নির্যাতনে ব্যবহার করা হতো খুন্তি, গরম ইস্ত্রি, চাকু ও ব্লেড। সুস্থ হওয়ার পর এমন তথ্য দেয় আদুরী। নির্যাতনের একপর্যায়ে নদী ও তার মা পল্লবীর ডিওএইচএস এলাকার একটি ডাস্টবিনে তাকে ফেলে দিয়ে যায়। ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দুই নারীকর্মী অর্ধমৃত অবস্থায় উদ্ধার করে আদুরীকে। পরে পুলিশের সহায়তায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেড় মাস চিকিৎসার পর সুস্থ হলে ৩ নভেম্বর তাকে তুলে দেয়া হয় পরিবারের কাছে। একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর আদুরীর মামা মো. নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে নদী ও তার মাকে আসামি করে নির্যাতনের ঘটনায় পল্লবী থানায় মামলা করেন। পরে নদীকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করে। আদালতে তিনি নির্যাতনের দায় স্বীকার করেন। ১০ অক্টোবর নদী ও তার মাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। আজ এ মামলার রায় ঘোষণা হবে বলে জানান আদুরীর মা। আদুরীর মা সাফিয়া বলেন, ব্যথায় প্রতি রাতে মেয়ে ডাকচিৎকার করে। এখন প্রয়োজন সুচিকিৎসা। ১৮ জুলাই (আজ) মামলার রায় হবে। আমরা তাই ঢাকা যাচ্ছি। আদালত সত্যের পক্ষে রায় দেবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। আদুরী বর্তমানে জৈনকাঠি ছালিয়া দাখিল মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। অভাবের কারণে আদুরীর চিকিৎসা ও লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারছেন না বলে জানান আদুরীর মা।

No comments

Powered by Blogger.