উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব সিউলের

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক পর্যায়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। পিয়ংইয়ংয়ের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনার মধ্যে সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের সরকার বিরল এ প্রস্তাব দিয়েছে। উত্তর কোরিয়া এতে রাজি হলে ২১ জুলাই এ আলোচনা হতে পারে। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে আগের তুলনায় আরও বেশি চাপ দিতে আলোচনা প্রয়োজন- মুনের এমন বক্তব্যের সপ্তাহখানেক পর আনুষ্ঠানিক এ প্রস্তাব এলো। খবর বিবিসির। মে’তে ক্ষমতাসীন হওয়ার পরও মুন উত্তর কোরিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনার ব্যাপারে তার আগ্রহের কথা জানান। একই দিন দক্ষিণ কোরিয়ার রেডক্রস দু?ই কোরিয়ার মধ্যে পারিবারিক পুনর্মিলনী বিষয়েও পৃথক এক আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। এখন দুই দেশ যদি আলোচনার জন্য এগোয় এবং তাদের মধ্যে আলোচনা হয়, তাহলে তা হবে ২০১৫ সালের পর সিউল ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে প্রথম উচ্চপর্যায়ের কোনো বৈঠক। দক্ষিণ কোরিয়ার জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন, আলোচনা হওয়া উচিত কোরীয় সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য দায়ী সব শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার উদ্দেশ্যে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন চাইছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক যতদূর সম্ভব ভালো করার। তবে সিউলের প্রস্তাবের বিষয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি পিয়ংইয়ং। সম্প্রতি বার্লিনে এক অনুষ্ঠানে মুন বলেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপ হলে তা হবে সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এছাড়া তাদের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। মুন আরও বলেন, যারা চান উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কার্যক্রম শেষ হোক, তাদের জন্য এ চুক্তি হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা, বিশেষ করে সম্প্রতি তাদের আন্তঃমহাদেশীয় বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষার মাধ্যমে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ংয়ের এ পদক্ষেপকে তাদের প্রতিবেশী ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী সুহ চু-সুক গণমাধ্যমকে জানান, দুই কোরিয়ার সীমান্তবর্তী অসামরিক অঞ্চল পানমুনজামে উত্তর কোরিয়ার টঙ্গিলগাক ভবনে এ আলোচনা হতে পারে। আগে অনেকবার এ ধরনের আলোচনা সেখানে হয়েছে। তিনি প্রস্তাব দেন, ‘২১ জুলাই আলোচনা হতে পারে। আমরা উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার প্রত্যাশা করছি।’ দুই কোরিয়ার মধ্য কী কী বিরোধপূর্ণ সামরিক কর্মকাণ্ড আছে, তার বিস্তারিত বলেননি সুহ। দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণমন্ত্রী চো মাইওয়ুং-গায়োন দুই কোরিয়ার মধ্যে যোগাযোগের হটলাইনগুলো আবার চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন। গত বছর উত্তর কোরিয়ার পরমাণু পরীক্ষার পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। এদিকে, রেডক্রস ও দক্ষিণ কোরিয়া আরেকটি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে, যার লক্ষ্য হবে ১৯৫৩ সালে শেষ হওয়া কোরীয় যুদ্ধে দুই কোরিয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া স্বজনদের মধ্যে পুনর্মিলনীর বিষয়ে কথা বলা।

No comments

Powered by Blogger.