বইয়ের পোকা

দুপুরে গল্পের বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। মা এসে গায়ে হাত দিয়ে ঘুম ভাঙালেন। ব্যাকুল গলায় ডাকলেন, ‘নবনী ! নবনী !!’ আমি চোখ মেলতেই তিনি আমার মুখের কাছে মুখ এনে কাতর গলায় বললেন, ‘ওঠ্ মা। ওঠ্ !’
আমি হকচকিয়ে উঠে বসলাম। মা এভাবে আমাকে ডাকছেন কেন?


কিছু কি হয়েছে? বাবা ভালো আছে তো? খাট থেকে নামতে গেছি, মা হাত ধরে আমাকে নামালেন। যেন আমি বাচ্চা একটা মেয়ে। একা একা খাট থেকে নামতে পারি না। আমি বললাম, কী হয়েছে মা?
মা জবাব দিলেন না, অস্পষ্টভাবে হাসলেন। বারান্দায় এসে দেখি, বাবা ইজিচেয়ারে আধশোয়া হয়ে আছেন। তাঁর গায়ে ইস্ত্রি করা পাঞ্জাবি। চুল আঁচড়ানো। আজ দুপুরেও গালভর্তি খোঁচা খোঁচা কাঁচাপাকা দাড়ি ছিল। এখন নেই, গাল মসৃণ, শান্ত পরিচ্ছন্ন একজন মানুষ ! খুবই আশ্চর্যজনক ব্যাপার। মাস দুই হলো তিনি শয্যাশায়ী। ডান পা অবশ হয়ে আছে। দেয়াল ধরে হাঁটাহাঁটি করেন। তবে বেশির ভাগ সময় খবরের কাগজ হাতে নিয়ে শুয়ে থাকেন নিজের ঘরে। কাগজ পড়ার ফাঁকে ফাঁকে কঠিন এবং তিক্ত গলায় এ-বাড়ির সবার সঙ্গে ঝগড়া করেন। যেন তাঁর এই অসুখের জন্যে আমরাই দায়ী।
জনপ্রিয় একটি উপন্যাসের শুরুর অংশ এটি। বলতে হবে উপন্যাসটি ও এর লেখকের নাম কী?

No comments

Powered by Blogger.