আরব আমিরাতে বাংলাদেশ থেকে লোক নিয়োগ বন্ধ!

সংযুক্ত আরব আমিরাত সে দেশে কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে জনশক্তি রফতানিকারকদের প্রতিষ্ঠান বায়রা। তবে বাংলাদেশ সরকার থেকে বলা হয়েছে, কর্মী নিয়োগ বন্ধের বিষয়ে আরব আমিরাত এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে কিছুই জানায়নি।
শুক্রবার বিবিসি বায়রার বরাত দিয়ে জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাত সে দেশে কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে। অনানুষ্ঠানিকভাবে এই এই কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রতিবছর আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে তিন থেকে চার লাখ লোক নেয়। এখনও সে দেশে ৫০ হাজার লোক নেয়ার কথা রয়েছে। তবে আরব আমিরাত এখন বাংলাদেশ থেকে লোক নেয়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
বায়রা মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেছেন, আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে লোক নেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। আমরা ওখানকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। দূতাবাসের মাধ্যমেও বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি। তবে আমরা জানতে পেরেছি সেখানে আর লোক নেয়া হবে না। আরব আমিরাত এখন ভিসা ইস্যুও করছে না। নবায়নও বন্ধ করে দিয়েছে।
তবে শ্রম ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে আরব আমিরাতে লোক নেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, এমন কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। আরব আমিরাত এ বিষয়ে এখনও বাংলাদেশকে কিছুই জানায়নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে লোক নিয়োগ বন্ধের কোন কারণ নেই। আমাদের সঙ্গে তাদের কোন মন কষাকষিও নেই। তবে ভিসা ইস্যু সেøা অথবা ডাউন হতে পারে। একেবারে বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা নেই।
বিবিসি জানায়, সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট খোয়া, রোহিঙ্গা ইস্যু ও বাংলাদেশীদের অনৈতিকতার কারণে ভিসা ইস্যু বন্ধ হতে পারে বলে বায়রা ধারণা করছে।
জানা গেছে, হঠাৎ করেই বাংলাদেশী শ্রমিকদের অনুকূলে ভিসা ইস্যু বন্ধ করে দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার (ইউএই)। মধ্যপ্রাচ্যের প্রচলিত শ্রমবাজার যখন বাংলাদেশী শ্রমিকদের প্রতিকূলে, তখন অন্যতম ভরসাস্থল ইউএই সরকারের আকস্মিক এ সিদ্ধান্ত চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশকে। কেননা সৌদি আরবে জনশক্তি বন্ধ হওয়ার পর বাংলাদেশের বৃহৎ শ্রমবাজার ইউএই। বর্তমানে সেখানে প্রতিটি রাজ্যে ১৫ লাখ করে বাংলাদেশী শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। গত মাসে দেশটিতে ৬২ হাজার ৭১৩ বাংলাদেশী কাজ নিয়ে গেলেও এ মাসের ২২ দিনে মাত্র ২৭ হাজার শ্রমিক যেতে পেরেছেন।
সূত্র জানিয়েছে, নতুন ভিসা ইস্যু না করার পাশাপাশি পুরনোদের ভিসা নবায়নও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গত দু’সপ্তাহ ধরে ইউএই কর্তৃপক্ষের এ আচরণে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। দু’সপ্তাহ ধরে আরব আমিরাতের বিভিন্ন এলাকার কিছু বাংলাদেশী নাগরিক ভিসা আবেদন করে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
তাঁদের ভিসা না দিয়ে নতুন করে আবেদন করতে বলা হচ্ছে। অনেককে ঈদের ছুটির পর যোগাযোগ করার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে ভিসা অফিস থেকে। বিষয়টি নিয়ে এখনও আবুধাবি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে আরব আমিরাত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে।

No comments

Powered by Blogger.