বালাপুরের জমিদার বাড়ি

প্রাচ্যের ম্যানচেস্টারখ্যাত বাবুরহাট সংলগ্ন নরসিংদী সদর উপজেলার পাইকারচর ইউনিয়নে বালাপুরের জমিদার বাড়ি এখন বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। চারদিকে শুধু খাঁ খাঁ করছে এককালের সেই জমিদার বাড়ি। এ বাড়িতে এলাকার বিচারের জন্য জাঁকজমক বৈঠকখানা ছিল। বৈঠকখানার পাশেই ছিল পূজাম-প। সকাল সন্ধ্যা বাজতো শঙ্খ।
জমিদার বাড়ির রমণীরা দল বেঁধে পুকুরে স্নান করে এসে পূজায় বসত। আজ সেই মন্দির এখন নি®প্রাণ। অযতœ আর অবহেলায় গাছ গাছালিতে আচ্ছন্ন এ বাড়ি। অপরিচ্ছন্ন ঘরে প্রতিমার স্থান দখল করে ফেলছে সর্পকুল। শুধু এই সাপের ভয়েই কেউ মন্দিরে যায় না। কিন্তু বাড়িটির অধিকাংশ কক্ষ এখন বেদখল। ভাসমান মানুষ জাল দলিলের মাধ্যমে অথবা জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে।
নরসিংদী জেলা সদর থেকে সোজা দক্ষিণে পাইকার চর ইউনিয়নের মেঘনা নদী সংলগ্ন বালাপুর গ্রাম। সদর উপজেলা থেকে প্রায় ১৭ কি.মি. দক্ষিণে মেঘনা নদীর ধার ঘেঁষে বালাপুরের জমিদার কালী মোহন সাহা (কালী বাবু) পিতামহ নবীন চন্দ্র সাহা এর বাড়ি। নবীন চন্দ্র সাহার ৩ পুত্র (১) কালী মোহন সাহা (জমিদার বাবু) (২) আশুতোষ সাহা (৩) মনোরঞ্জন সাহা। এদের ৩ ভাই এর মধ্যে জমিদার কালী বাবুই ছিল প্রধান। বংশধর হিসাবে অনিল চন্দ্র সাহা তার ২ ছেলে (১) অজিৎ চন্দ্র সাহা (২) অশিত চন্দ্র সাহা (কালী বাবুর ভাতিজা) এবং (ভাতিজা) বীরেন চন্দ্র সাহার ছেলে (১) দেবাশীষ চন্দ্র সাহা।
জমিদারী স্টেট প্রায় ৩২০ বিঘা জমির ওপর নির্মিত একটি বিশাল আকারের কারুকাজ করা দালান রয়েছে। দালানটিতে কক্ষ রয়েছে ১০৩টি। দালানটির পূর্বদিকে ৩য় তলা, উত্তর দিকে ১ তলা, দক্ষিণ দিকে ২য় তলা এবং পশ্চিম দিকে একটি বিশাল আকারের কারুকাজ খচিত গেট। বাড়িটির চতুর্দিকেই রয়েছে ইমারত ও কারুকার্যপূর্ণ একটি সুসম্পন্ন দালান। যার প্রতিটি কক্ষেই রয়েছে মোজাইক, টাইলস্ লাগানো ও কারুকার্য খচিত দরজা জানালা। জমিদার বাড়ি ঘিরে পশ্চিমে রয়েছে একটি বিশাল পুকুর, উত্তরে রয়েছে বিশাল আকারে দুর্গা পূজাম-প, অতিথিদের থাকা খাওয়া ঘুমানোর জন্য আরো রয়েছে ৩১ কক্ষ বিশিষ্ট একটি দালান।
-মোস্তফা কামাল সরকার, নরসিংদী

No comments

Powered by Blogger.