দুটি জিডির তদন্ত শুরু ॥ লিমন পরিবারের বিরুদ্ধেদায়ের করা হত্যা মামলার কপি থানায় পৌঁছেনি

রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামের র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমনের পরিবারের মা, হেনোয়ারা বেগম, ভাই সুমন আকন ও বাবা তোফাজ্জেল হোসেনসহ ১৪ জনকে আসামি করে হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালত থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত রাজাপুর থানায় এসে পৌঁছেনি।


বৃহস্পতিবার ঝালকাঠির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লিমনের প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত ইব্রাহীম হাওলাদার তার শ্যালক ফোরকান হাওলাদারের মৃতুকে কেন্দ্র করে এই হত্যা মামলা দায়ের করে। আদালতের বিচারক নুসরাত জাহান অভিযোগটি গ্রহণ করে রাজাপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে অভিযোগটি এহাজার হিসেবে রেকর্ড করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে, ঈদের দিন ২০ আগস্ট সাতুরিয়া গ্রামের ইঁদুরবাড়ী নামকস্থানে রাস্তা আটকে লিমন ও তার পরিবারের ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে ইব্রাহীমের সঙ্গে তর্কাতর্কির ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম এবং অপর পক্ষে ইব্রাহীম আহত অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। এ নিয়ে হেনোয়ারা বেগম ২২ জুলাই ৭৭১ নং এবং ২৩ জুলাই ইব্রাহীম ৭৮৫ নং সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে লিমন রাজাপুর থানায় হাজির হয়ে তার ও তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে একটি আবেদন করেন। লিমনের মা হেনোয়ারা বেগমের সাধারণ ডায়েরির বক্তব্য এবং লিমনের আবেদন একই ধরনের হওয়ায় থানা পুলিশ লিমনের আবেদনকটি গ্রহণ করে, তবে পৃথক কোন ডায়রি করেনি। ঈদের দিনের এই মারামারির ঘটনা শুনে ইব্রাহীমের শ্যালক ফোরকানের ঘটনাস্থলে পৌঁছার পূর্বেই সাতুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার সামনে এসে অসুস্থ হয়ে মারা যায়। এ ব্যাপারে ইব্রাহীমের স্ত্রী লিলি বেগম একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। এতে তিনি তার ভাইয়ের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করেন। ২১ জুলাই ময়নাতদন্ত শেষে ফোরকানের মৃতদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে বৃহস্পতিবার ইব্রাহীম হাওলাদার ঝালকাঠির আদালতে এই নালিশী অভিযোগ দায়ের করেন। লিমনের মায়ের ও ইব্রাহীমের দায়ের করা সাধারণ ডায়েরির পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করেছে।
ইব্রাহীমের দায়ের করা ও লিমনের পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনার ঘটনাটি মিথ্যা। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েক ব্যক্তির কাছ থেকে মারামারির ঘটনায় অংশগ্রহণের পূর্বেই ফোরকান অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই মামলায় যে দশ জনকে এজাহার নামীয় আসামি করা হয়েছে তার মধ্যে লিমনের পিতা তোফাজ্জেল হোসেন রমজানের প্রথম সপ্তাহে এলাকায় থাকলেও ঈদের কয়েকদিন পূর্বেই সে ঢাকায় চলে এসেছিলেন। এই মামলায় মোর্শেদ জমাদ্দার নামের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও বিভিন্ন মামলায় ৩৩ বছর সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। মোর্শেদ জমাদ্দারকে গ্রেফতারের জন্য গত ২০১১ সালের ২৩ মার্চ অভিযান চালানোর সময় লিমন র‌্যাবের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে পা হারায়।

No comments

Powered by Blogger.