বাল্যবিয়ের জরিমানা ৩৫ হাজার টাকা by শাহজাহান সোহেল,

মাদের সমাজে কোনো নারীর বিয়ে ভেঙে গেলে তাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করা হয়। নানা অপবাদ দিতে কেউ দ্বিধা করে না! পরিবার এবং সমাজে নানাভাবে নির্যাতিত হয় এই নারীরা। কিন্তু বিয়ে ভেঙে যাওয়াই আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে সাবানা আক্তারের জীবনে। বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় বড় সতীনের সঙ্গে ঘর করা থেকে রক্ষা পেয়েছে সাবানা আক্তার। গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের নিচপাড়া গ্রামের আবদুস সাত্তার


সরকারের মেয়ে সাবানা আক্তার (১৩)। সে স্থানীয় আমবাগান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। ২৫ নভেম্বর রাতে বিয়ের দিনক্ষণ ধার্য ছিল সাবানা আক্তারের। কিন্তু এ বাল্যবিয়ের সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মওলা পুলিশসহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সাত্তার সরকারকে নিয়ে পৃথকভাবে বর ও কনের বাড়িতে গিয়ে এ বিয়ে বন্ধ করেন।
এদিকে এ সংবাদ জেনেও বিয়ে করতে কনের বাড়িতে আসে বর শফিকুল ইসলাম (২৫)। আর এতেই ঘটে বিপত্তি। কিছুক্ষণ পরই কনের বাড়ির লোকজন জানতে পারে, বর শফিকুল ইসলাম ৫ বছর আগে ঢাকায় আরেকটি বিয়ে করেছে। সেই স্ত্রীর দুটি সন্তান রয়েছে। ওই বিয়ের পরিচয় গোপন রেখেই দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য কনে ঠিক করে শফিকুল। এ অবস্থায় বরকে আটকে রাখে কনেবাড়ির লোকজন। পরদিন ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মোখলেছুর রহমানের মধ্যস্থতায় কনে এবং বরের বাড়ির লোকজন আলোচনায় বসে আপসরফা করেন। আপসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কনেপক্ষকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে বর শফিকুল ইসলাম ছাড়া পায়। নারীলোভী বর শফিকুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী বড় ছত্রগাছা গ্রামের নাজমুল হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় ধাপেরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শিপন বলেন, সাবানা আক্তার শুধু বাল্যবিয়ের কবল থেকেই রক্ষা পেল না, সে সতীনের সঙ্গে ঘর করা থেকেও রক্ষা পেল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মওলা বলেন, এমন ঘটনা বিরল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে কনের বাবা আবদুস সাত্তার সরকার বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধ করে তার মেয়েকে বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরের এক নিকটাত্মীয় বলেন, এ ঘটনায় তিনি চরমভাবে লজ্জিত। কারণ তিনি নিজেও জানতেন না যে, বর শফিকুল ইসলাম বিবাহিত।

No comments

Powered by Blogger.